বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেছেন, আপনার বিরুদ্ধে, দলের বিরুদ্ধে—সর্বোপরি দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র কিন্তু থেমে নেই। দুষ্ট লোকদের দুষ্টামি থেমে নেই। একটি দুর্বল জনসমর্থনহীন সরকারকে ক্ষমতায় রাখলে এই দেশ থেকে অনেকেই অনেক কিছু লুটেপুটে নিয়ে যেতে পারবে। কিন্তু জনগণের সমর্থিত, যারা জনগণের কথা বলবে ও চিন্তা করবে, দেশের কথা বলবে এবং দেশের কথা চিন্তা করবে—এরকম কেউ দেশ পরিচালনার দায়িত্বে থাকলে দেশ ও দেশের জনগণের স্বার্থ নিরাপদে থাকবে।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গিলন্ড এলাকায় বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতার রাজনৈতিক কার্যালয়ে রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতে ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, দেশের অর্থসম্পদ, প্রাকৃতিক সম্পদের প্রতি অনেকে শকুনের দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। যদি জনগণের সমর্থিত সরকার দেশ পরিচালনার দায়িত্বে থাকে তাহলে দেশের অর্থসম্পদ, প্রাকৃতিক সম্পদের প্রতি তাকিয়ে থাকা শকুনেরা তখন ১০ বার চিন্তা করবে।
তিনি বলেন, আপনারা গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন। হত্যার শিকার হয়েছেন, জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন। গায়েবি মামলার শিকার হয়েছেন, দিনের পর দিন জঙ্গলে, ধানখেতে পালিয়ে থাকতে হয়েছে। আপনারা সেই জুলুম-অত্যাচার সহ্য করে পরীক্ষায় পার হয়ে এসেছেন। পরীক্ষা কিন্তু শেষ হয়ে যাই নাই, আরও আছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, এটি এমন একটি যুদ্ধ, জনগণ ও গণতন্ত্রের পক্ষের যুদ্ধ। এটি স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের যুদ্ধ। এই যুদ্ধে আমাদের জয়ী হতে হলে প্রতিনিয়ত সংগ্রাম চালিয়ে যেতে হবে। গত ৫ আগস্টের আগ পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম ছিল স্বৈরাচার সরকারকে সরিয়ে দেওয়া। অবশেষে দল-মত নির্বিষে দেশের সব মানুষের অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই দেশ থেকে স্বৈরাচার সরকারকে বিদায় দিতে পেড়েছে। দেশের মানুষ স্বৈরাচারকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে।
তারেক রহমান বলেন, এখন দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষার সংগ্রাম। একই সঙ্গে দেশ গড়ার সংগ্রাম শুরু হয়েছে। দেশের মানুষের রাজনৈতিক অধিকার, রাজনৈতিকভাবে দেশের মানুষকে অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া। একই সঙ্গে দেশের মানুষের অর্থনীতির ভিত্তি মজবুদ করার সংগ্রাম শুরু হয়েছে। একই সংগ্রামের নেতৃত্ব দিতে পারবেন একমাত্র আপনারা অর্থাৎ বিএনপি। কারণ এই দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র বা গণতন্ত্র বলতে যা বুঝায়, সংসদীয় গণতন্ত্র বলতে যা বুঝায়, নারীদের অধিকার ও মানুষের অধিকার বলতে যা বুঝায় একবাক্যে প্রতিটি ক্ষেত্রে বিএনপি সবসময় সেটিকে নিশ্চিত করতে চেষ্টা করেছে।
জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খান রিতার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিএনপি মিডিয়া সেলের প্রধান ডা. মওদুদ আলমগীর পাভেল। বিএনপি কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঞ্চালনায় এই প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদুল আলম বাবুল, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবীর, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মঈনুল ইসলাম খান শান্ত, সহসভাপতি ড. খন্দকার আকবার হোসেন বাবলু, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য রুখসানা খানম মিতু প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। এ সময় প্রশিক্ষণ দেন বিএনপি নির্বাহী কমিটির সহ-প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক রেহেনা আক্তার রানু ও অর্পণ বাংলাদেশের সভাপতি বীথিকা বিনতে হোসাইন।