জুয়েল রানা : জামালপুরে ছাত্রলীগ নেতার কাছে কলেজ শিক্ষকের লাঞ্ছিতের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে এই ঘটনা ঘটে।
উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক নিয়ামুল হক তার বিভাগে অন্যান্য শিক্ষকদের বিভিন্ন বিষয়ে নির্দেশনা প্রদানের সময় আশেক মাহমুদ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের উপ ছাত্রবৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক নিজামুল একই বিভাগের অনার্স ১ম বর্ষ বর্ষের দুই ছাত্রকে বিভাগীয় প্রধানের কাছে নিয়ে যায় এবং কিছু কথা আছে বলে পাশের বিভাগীয় প্রধানের কক্ষে নিয়ে আসেন। এ সময় ওই ছাত্রলীগ নেতা তার সাথে থাকা দুই ছাত্রকে চিনে রাখা ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় টাকা কম নেওয়ার জন্য অধ্যাপক নিয়ামুল হককে বলেন।
এতে বিভাগীয় প্রধান ছাত্রলীগ নেতাকে বলেন তুমি কি তাদের অভিভাবক? ওই দুই ছাত্রকে ধমক দিয়ে বলেন, তোমাদের কথা থাকলে সরাসরি আমাকে বলবে, পরে ছাত্ররা সেখান থেকে চলে যায়। কিছুক্ষণ পরে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তন্ময় বেশকিছু ছাত্রদের সাথে নিয়ে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগে বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক নিয়ামুল হকে কাছে যান। এ সময় বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক নিয়ামুল হক ও অন্যান্য শিক্ষকরা পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন করছিলেন। তখন ছাত্রলীগ নেতা তন্ময় অধ্যাপক নিয়ামুল হকের কাছে জানতে চান কেন ওই ছাত্রদের ধমক দেয়া হয়েছে? এ সময় পরীক্ষার খাতা মূল্যায়নের বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর বলে উল্লেখ্য করে বিভাগীয় প্রধান ছাত্রলীগ নেতা তন্ময় ও অন্যান্যদের সেখান থেকে চলে যেতে বলেন একে করে ওই শিক্ষক ও ছাত্রলীগ নেতার মধ্যে বাকবিতন্ডা হয়।
পরে ছাত্রলীগ নেতা তন্ময় সেখান থেকে বেরিয়ে আসেন এবং তার নির্দেশে কলেজের ছুটির ঘন্টা বাজিয়ে কলেজ ছুটি দেয়ার চেষ্টা করে নেতাকর্মীরা। এরপর ছাত্রলীগ নেতারা অধ্যাপক নিয়ামুল হকের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নিতে ও ব্যবহারিক পরীক্ষায় রশিদ ব্যাতিত টাকা নেয়ার প্রতিবাদে কলেজে বিক্ষোভ করেন। এ ব্যাপারে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক নিয়ামুল হক দুই ছাত্রকে ধমক দেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে জানান, আমি সে সময় পরীক্ষার খাতা মূল্যায়ন ও গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন ছিলাম। তবে ছাত্রলীগ নেতারা কলেজের ছুটির ঘন্টা বাজিয়ে সরকারি কাজে হস্তক্ষেপ করে অন্যায় করেছে।
এ ব্যাপারে আশেক মাহমুদ কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম তন্ময় কলেজের ঘন্টা বাজানোর বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ব্যবহারিক পরীক্ষার নামে রশিদ ব্যাতিত টাকা না নেয়া এবং দরিদ্র শিক্ষার্থীদের টাকা মওকুফ করার জন্য দাবী জানাচ্ছি।
এ ব্যাপারে সরকারি আশেক মাহমুদ কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক হারুন অর রশিদ বলেন, শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি কারণে যে অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে তা সমাধানের চেষ্টা চলছে।