জামালপুরে টার্কি মুরগীর সফল খামারী আব্দুর রাজ্জাক

জুয়েল রানা : জামালপুর সদর উপজেলার নরুন্দি ইউনিয়নের তেঘরি গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক ওই এলাকায় পরিচিত একজন সফল মুরগী খামারী হিসেবে । নানা চরাই উৎরায় পেরিয়ে দীর্ঘ ২২বছর ধরে করে আসছেন মুরগীর খামার । ২২বছর আগে ২শ মুরগী দিয়ে তার খামার শুরু করেন। বর্তমানে তার খামারে টার্কি, সোনালী, ব্রয়লার ,কেদারনাথ, ব্রাউন,ফাহমী ও দেশি জাতের মুরগীসহ ৬/৭হাজার মুরগী রয়েছে খামারে। একজন সফল মুরগী খামারী হিসেবে ব্যাপক পরিচিত রয়েছে আব্দুর রাজ্জাকের। আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের জানান, ২২বছর আগে শখের বশে ২শ মুরগী দিয়ে তার খামার শুরু হয়। বর্তমানে তার নিজস্ব ৩৫শতাংশ জমির উপর বিভিন্ন জাতের মুরগীর শেড রয়েছে। এ যাত্রায় তাকে বহু ঘাত প্রতিঘাত পার করতে হয়েছে। তিনি জানান, বর্তমান সময়ে মুরগীর খামার করে টিকিয়ে রাখা খুবই কষ্টকর। কারন হিসেবে তিনি ব্যাখা করে জানান, একটি ঝুকিপূর্ন ব্যবসা হচ্ছে মুরগীর খামার করা । সেখানে তিনি টিকে রয়েছেন দীর্ঘ দিনের অভিজ্ঞতা ও দৃঢ মনোবল এবং পরিশ্রমের কারণে । প্রতিনিয়ত বাজারে মুরগীর দাম উঠা নামা করা , খাদ্যের দাম বৃদ্ধি ,মুরগীর বাচ্চার দাম আকাশছোয়া,প্রয়োজনীয় ওষুধ পত্রের দাম বৃদ্ধি এবং দক্ষ শ্রমিক সংকট তো রয়েছে। আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মুরগীর খামার থেকে যে আয় হয় তা দিয়েই আমার সংসার চলে। তিন মেয়ের মধ্যে দুই মেয়ে লেখাপড়া করিয়ে বিয়ে দেওয়া হয়েছে। ছোট মেয়ে ৫ম শ্রেনিতে পড়ছে। খামারের কাজে তার স্ত্রী আকলিমা বেগম ছাড়াও আরো ৭জন কর্মী তাকে সহযোগিতা করেন। আব্দুর রাজ্জাক বলেন, সব মিলিয়ে আমার দুই মাসে খামারে ১০লক্ষ থেকে ১২লক্ষ টাকার দেনদেন হয় । সব খরচ বাদ দিয়ে দুই মাসে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার মত লাভ হয়। কোন কোন মাসে লাভ বেশি কিংবা কমও হয়। তবে আব্দুর রাজ্জাকের স্বপ্ন তিনি তার মুরগীর খামারটি আরো আধুনিক মানের শেড করে খামারটির পরিধি আরো বড় করা। তবে অর্থের অভাবে তিনি খামরটি বড় করতে পারছেন না। তিনি অভিযোগ করে বলেন, সহজ শর্তে ঋণের জন্য বিভিন্ন ব্যাংকে যোগাযোগ করেও কোন ঋণ সহায়তা পায়নি । তবে আশার কথা হচ্ছে শত প্রতিকুলতার মধ্যে মুরগীর খামার করে টিকে থাকার কারণে নরুন্দি ও ঘোড়াধাপ ইউনিয়ন ছাড়াও কয়েকটি ইউনিয়নে অনেক নতুন নতুন খামারীরা তার খামার পরিদর্শন করে তার পরামর্শে খামার পরিচালনা করছে। খামারে ঝুকি আছে জেনেও অনেক নতুন যুবকরা উদ্যোক্তা হওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত হচ্ছে আব্দুর রাজ্জাক কে দেখে। জামালপুর জেলা প্রানী সম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার ছানোয়ার হোসেন বলেন, জামালপুর সদর উপজেলায় ৭২১টি খামার রয়েছে। আমরা খামার ও খামারীদের প্রয়োজনীয় দক্ষতা উন্নয়ন ট্রেনিং পরামর্শ প্রদান করে থাকি। যাতে করে কোন খামারী লোকসানের মুখে না পড়েন।