জামালপুরে নকল ব্যান্ডরোল লাগিয়ে বিড়ির ব্যবসা জমজমাট ॥ রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার

নিজস্ব সংবাদদাতা : জামালপুর জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে সরকারী শুল্ক ও কর ফাঁকি দিয়ে পুনঃ ব্যবহৃত ব্যান্ডরোল ও জাল ব্যান্ডরোল লাগিয়ে জমজমাট বিডির ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এক শ্রেনীর অসাধু ব্যবসায়ীরা। প্রশাসনের ফাঁকি দিয়ে এবং প্রশাসনের কিছু আসাধু-কর্মকর্তার যোগসাজসে দীর্ঘদিন ধরে ও ব্যবসা করছে কিছু অবৈধ বিড়ি কোম্পানী। এতে সরকার হারাচ্ছে বিপুল পরিমান বাজস্ব এবং চরম ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে বিড়ি ফ্যাক্টরির প্রকৃত মালিকগনরা। “অনুসন্ধানে জানা গেছে, পুনঃব্যবহৃত ও জাল ব্যান্ডরোল কিছু অসাধু চক্র দীর্ঘদিন ধরে বাদশা বিড়ি, সাঈদ বিড়ি, মটর বিড়ি, বেডিও বিড়ি, আশিক বিড়ি, হালিম বিড়ি জাল ব্যান্ডরোল লাগিয়ে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব -ফাঁকি দিয়ে আসছে। বিভিন্ন নকল হীন বিড়িও রয়েছে এই তালিকায়। রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে, সরকার নির্ধারিত মুনাফা চেয়ে কম মূল্যে বাজারজাত করেআসছে দিনের পর দিন। জেলার বিভিন্ন – দেওয়ানগঞ্জ, মেলান্দহ, সরিষাবাড়ি; উপজেলার প্রত্যেক বাজারে এসব নকল ব্যান্ডরোল বিড়ি বিক্রি হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পুনঃব্যবহৃত ও জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে ২৫ শলার প্রতি প্যাকেট ৮ টাকা থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ ১০ টাকা মূল্যে বিড়ি বিক্রয় করছে। এর মধ্যে আশিক বিড়ি কোম্পানি নতুন একটি বিড়ি বাজারে দিয়েছে যা ৫ থেকে ৬ টাকা প্যাকেট বিক্রি করছে। অথচ ২০২২-২৩ অর্থবছরের বাজেট অনুযায়ী ২৫ শলার প্রতি প্যাকেট বিড়ির সরকার নির্ধারিত মূল্য ১৮ টাকা। এরমধ্যে রাজস্ব বাবদ ব্যান্ডরোলের মূল্য ৮.১০ টাকা, অগ্রিম আয়কর ০.৮১ টাকা এবং স্বাস্থ্য উন্নয়ন সারচার্জ ০.১৮ টাকাসহ সর্বমোট ৯.০৯ টাকা সরকারকে দিতে হয়। এছাড়া বিড়ি শ্রমিকদের পারিশ্রমিক ও বিড়ি তৈরির কাগজ-তামাক ক্রয়সহ আরও অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় উৎপাদন খরচ রয়েছে। সানন্দবাড়ী বাজারের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী জানান, আসল ব্যান্ডরোল লাগিয়ে বিড়ি বিক্রি করলে তেমন লাভ হয় না; তাই নকল ব্যান্ডরোল লাগিয়ে সিংহভাগ ব্যবসায়ী বিড়ি বাজারজাত করে। মিতালী বাজারের বিড়ি ব্যবসায়ী জানান, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলাসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে অসাধু বিড়ি ব্যবসায়ী ও কোম্পানি পুনঃব্যবহৃত ও জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহার করে সরকারের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে কমমূল্যে বিড়ি বাজারজাত করছে। এতে একদিকে সাধারণ মানুষ প্রতারিত হচ্ছে, অন্যদিকে সরকার বছরে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে। উপজেলার সচেতন মহলের দাবি, অসাধু রাজস্ব কর্মকর্তার যোগসাজশে এমন অপকর্ম চালিয়ে এসকল অসাধু ব্যবসায়ীরা আজ বিড়ি শিল্পকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে যাচ্ছে। তাই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উচিত সরকারের রাজস্ব বৃদ্ধির লক্ষ্যে, বিড়িতে জাল ব্যান্ডরোল ব্যবহারকারী চক্রের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা। দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জাহিদ হাসান প্রিন্স জানান, এব্যাপারে সরকারি বিধি মোতাবেক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।