আসমাউল আসিফ : জামালপুরে ৯ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রকে বাসার সামনে থেকে অপহরণের ৭ ঘন্টা পর উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল গত সোমবার ৮ সেপ্টেম্বররাতে ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশন থেকে তাকে উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার ৯ সেপ্টেম্বর জামালপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছে অপহরণের শিকার ওই শিশুর অভিভাবক।
পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, জামালপুর পৌর শহরের স্টেশন রোডের স্থানীয় আল করিম আবাসিক হোটেলের পেছনে বসবাসকারী ব্যবসায়ী সাজ্জাতুল ইসলাম পাপনের ৯ বছর বয়সী ছেলে সদর উপজেলার এম এ গফুর মেমোরিয়াল একাডেমিতে ৩য় শ্রেণীতে পড়াশোনা করে। ওই স্কুলছাত্র প্রতিদিন সকালে স্কুলবাসে করে স্কুলে যায়, আবার দুপুরে স্কুলবাসে করেই বাসায় ফিরে আসে। গত সোমবার ৮ সেপ্টেম্বর দুপুর ২টার দিকে তাকে স্টেশন রোডের আল করিম আবাসিক হোটেলের সামনে প্রধান সড়কের পাশে স্কুলবাস থেকে নামিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু বাস থেকে নেমে সে বাসার দিকে রওনা দিলে অজ্ঞাত দুইজন ব্যাক্তি তাকে ডাক দিলে তাদের কাছে যাওয়া মাত্রই তারা স্কুলছাত্রের দিকে কিছু একটা স্প্রে করে এরপর থেকে সে আর কিছুই মনে করতে পারেনা। শিশুটি বাসায় না ফেরায় তার পরিবারের লোকজন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজা-খুজি শুরু করে। এক পর্যায়ে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে অজ্ঞাত এক ট্রেনযাত্রীর মোবাইল থেকে শিশুটির বাবা সাজ্জাতুল ইসলাম পাপনের কাছে ফোন আসে। অজ্ঞাত ট্রেনযাত্রী জানায় তার ছেলে ময়মনসিংহ রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মের পশ্চিম প্রান্তে কান্নাকাটি করছে। শিশুটির বাবা তার ছেলের সাথে মোবাইলে কথা বলে নিশ্চিত হলে অজ্ঞাত ব্যাক্তিকে ময়মনসিংহ রেলওয়ে থানায় তার ছেলেকে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। পরে ওই ব্যাক্তি রেলওয়ে পুলিশের কাছে শিশুটিকে হস্তান্তরের পর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেন এবং এরপর ট্রেনে করে তিনি তার গন্তব্যে চলে যান। এরপর জামালপুর থেকে শিশুটির পরিবার ও স্বজনরা ময়মনসিংহে যায় এবং রাত সাড়ে ৯টার দিকে পুলিশ শিশুটিকে তার পরিবারের জিম্মায় হস্তান্তর করে। এ ঘটনায় শিশুটির বাবা সাজ্জাতুল ইসলাম পাপন (৩৩) গতকাল মঙ্গলবার ৯ সেপ্টেম্বর দুপুরে জামালপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন।
ব্যবসায়ী সাজ্জাতুল ইসলাম পাপন বলেন, স্কুল থেকে ফেরার সময় বাসার সামনে থেকে আমার ছেলেকে অপহরণের ঘটনায় আমি খুবই উদ্বিগ্ন। কে বা কারা কিভাবে আমার ছেলেকে জামালপুর থেকে ময়মনসিংহে নিয়ে গিয়েছে তা সে বলতে পারছে না। যখন সে বুঝতে পারে তখন তার সাথে কেউ ছিলো না। আমি আমার সন্তানের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। থানায় জিডি করেছি, আশা করছি পুলিশ বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করে অপহরণকারীদের গ্রেফতার করবে ও আইনের আওতায় আনবে। আমরা পরিবারের সবাই অপহরণকারীদের শাস্তি চাই।
জামালপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু ফয়সল মো: আতিক জানান, স্কুলছাত্র অপহরণের ঘটনায় তার অভিভাবক থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন। আমরা সেটি গ্রহণ করেছি, এ ব্যাপারে পুলিশ কাজ করছে। ইতিমধ্যে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ বিষয়টি তদন্ত শুরু করেছে।
জামালপুরে স্কুলছাত্র অপহরণের ৭ ঘন্টা পর উদ্ধার, থানায় সাধারণ ডায়েরী
