ঝিনাইগাতীতে তিন দিনব্যাপী ওয়ানগালা উৎসব শুরু

ঝিনাইগাতী সংবাদদাতা ; শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে গারো সম্প্রদায়ের বৃহৎ সামাজিক উৎসব ওয়ানগালা (নবান্ন) উৎসব শুরু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকাল ১১টার দিকে স্থানীয় মরিয়মনগর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত তিনদিন ব্যাপী এ উৎসব উদ্বোধন করেন ঢাকা মহা ধমপ্রদেশের কার্ডিনাল বিশপ প্যাট্রিক ডি. রোজারিও।এসময় তিনি বলেন, ‘জীবন শুধু বর্তমান নয়, জীবন অতীতের, জীবন বর্তমানের এবং ভবিষ্যতের। যখন আমরা উৎসবে মিলিত হই তখন সেই উৎসবটা নদীর মহনা হিসেবে কাজ করে। সেখানে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতের কালপ্রবাহ মিলিত হয় এ মহনায়। উৎসব মিলনের মহনায়; আর সেই অনুভূতিতে মরিয়মনগর ধর্মপল্লী একত্রিত হচ্ছে- আর আগামী তিন দিনের সকল অনুষ্ঠান পালন করবে। ঝিনাইগাতীর মরিয়মনগর ক্রিশ্চিয়ান মিশন এ উৎসবের আয়োজন করেছে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মরিয়মনগর মিশনের পাল পুরোহিত ফাদার লরেন্স রিবেরিও। এতে বক্তব্য দেন মরিয়মনগর ধর্শ পল্লীর প্যারিস কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান অনার্শন চাম্বুগং।জানা গেছে, গারোদের সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ উৎসব ‘ওয়ানগালা’। ‘ওয়ানা’ শব্দের অর্থ দেবদেবীর দানের দ্রব্যসামগ্রী আর ‘গালা’ অর্থ উৎসর্গ করা। দেবদেবীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ মনোবাসনার নানা নিবেদন হয় এ উৎসবে। সাধারণত বর্ষার শেষে ও শীতের আগে, নতুন ফসল ঘরে তোলার পর এ উৎসবের আয়োজন করা হয়। এর আগে নতুন খাদ্যশস্য ভোজন নিষেধ থাকে এ সম্প্রদায়ের জন্য। তাই অনেকেই একে নবান্ন বা ধন্যবাদের উৎসবও বলে থাকেন। আবার ওয়ানগালা উৎসব একশ ঢোলের উৎসব নামেও পরিচিত।আয়োজক কমিটি সূত্রে জানা গেছে, এবছর তিনদিন ব্যাপী উৎসব উপলক্ষে কিশোর-কিশোরীদেও চিত্রাঙন, ছড়া (মান্দি ভাষায়), নৃত্য, মিস ওয়ানগালা প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, মেলা ও খেলাধুলার আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া থাকছে বাণী পাঠ (মান্দিতে), খামালকে খুখুব ও থক্কা প্রদান, জনগণকে থক্কা দেওয়া, পবিত্র খ্রিযোগ, দান সংগ্রহ, আলোচনাসভা, প্রার্থনা ও নকগাথা অনুষ্ঠান। এছাড়া এ উৎসব ঘিরে বিদ্যালয়ের মাঠে গড়ে ওঠা অস্থায়ী দোকানে ঐতিহ্যবাহী পোশাক, খাবার ও শিশুদের নানা রকমের খেলনা নিয়ে বসেছে মেলা।