ঝিনাইগাতীতে হাতি-মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনের লক্ষে মতবিনিময় সভা

œT

শেরপুর প্রতিনিধি : হাতির হাত থেকে বাঁচতে এ বছর আমাদের সচেতনতার সাথে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। একটি হাতিও যেনো আমাদের কোনো ধরণের আচরণে মারা না যায়। আবার কোনো মানুষও যেনো ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। এমনটি মন্তব্য করেছেন ঢাকার বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণি ও প্রকৃতি সংরক্ষণ অঞ্চলের বন সংরক্ষক মো. ছানাউল্লাহ পাটোওয়ারী।
মঙ্গলবার ১১মাচ বিকালে শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার রাংটিয়া রেঞ্জের বনরানী রিসোর্টে ময়মনসিংহ বন বিভাগের ডিএফও আ. ন. ম. মো. আব্দুল ওয়াদুদের সভাপতিত্বে হাতি-মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসনের লক্ষ্যে করণীয় শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন তিনি। ছানাউল্লাহ পাটোওয়ারী বলেন, বাংলাদেশসহ পৃথিবীতে ১৩টি রাষ্ট্রে হাতি রয়েছে। এটা আমাদের গৌরবের বিষয়। আমাদের পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান হাতি ও মানুষের যেনো কোনো ক্ষতি না হয় সেদিকে গভীরভাবে দৃষ্টি দিয়েছেন। এজন্য তিনি স্থানীয় জনগণ ও এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম (ইআরটি) সদস্যদের ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এজন্য যা যা করার দরকার সকল ধরনের সহায়তা দেওয়া হবে। এক মাস পরেই ধানের সিজন আসবে, তখনি লোকালয়ে হাতি নেমে আসবে। সেজন্য আমাদের সকলকে এমনভাবে সচেতনতার সাথে কাজ করতে হবে, হাতিও যেনো নিরাপদ থাকে আবার মানুষও যেনো ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। হাতি যদি কোনো মানুষের ধান, শাক-সবজি ও গরুর ক্ষতি করে থাকে তাহলে সঠিকভাবে ডকুমেন্টস পাঠাবেন, সরকার আপনাদের সঠিক সময়ের মধ্যে ক্ষতিপূরণ দিবে। তিনি আরো বলেন, এলিফ্যান্ট রেসপন্স টিম (ইআরটি) সদস্যদের সাপোর্টের একটি প্রজেক্ট হয়েছে। এ থেকে আপনাদের টর্চ লাইট, মশাল, বাঁশি, হ্যান্ডমাইকসহ সকল ধরনের সরঞ্জামের ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়াও ধানের সিজনে কিছু আর্থিক সাপোর্টও পাবেন আপনারা। উক্ত মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রনালয়ের উপ-সচিব ড. মো. সাইফুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত বিভাগীয় বন কর্মকর্তা ও বন্যপ্রাণি বিশেষজ্ঞ মো. মদিনুল আহসান, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডক্টর মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ, আরণ্যক ফাউন্ডেশনের প্রোগ্রাম অফিসার ড. মোহাম্মদ আব্দুল মোতালেব, ড. নাছির উদ্দিন, ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম রাসেল, পরিবেশবাদী সংগঠন শাইন্- এর নির্বাহী পরিচালক ও ওয়াইল্ড লাইফ ফটোগ্রাফার মো. মুগনিউর রহমান মনি প্রমুখ। সভায় বক্তারা জানান, শেরপুরের গারো পাহাড়ি এলাকায় প্রায় দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে বুনোহাতি ও মানুষের দ্বন্দ্বের কারণে হাতি ও মানুষের জানমালের ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়ে আসছে। তাই মানুষ ও বন্যহাতির দ্বন্দ্ব নিরসন করে সহাবস্থানের লক্ষ্যে করণীয় সম্পর্কে স্থানীয় অধিবাসীদের আরো সচেতন হতে হবে। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে ও জানমাল বাঁচাতে বুনোহাতির উপদ্রুত এলাকায় মানুষ এবং ফসলের ক্ষতি কমাতে সোলার ফ্যান্সিং, বায়ো ফেন্সিং এবং হাতির জন্য অভয়ারণ্য তৈরির বিষয়ে আলোচনা করা হয়। একইসাথে বুনোহাতি দ্বারা ক্ষতিগ্রস্তদের দ্রুত ক্ষতিপূরণ প্রদানের জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানানো হয়।