নিষিদ্ধ রাজনৈতিক গোষ্ঠী তেহরিক-ই তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) এবং বালোচ লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)-এর সঙ্গে কখনও সংলাপে বসবে না পাকিস্তান। সম্প্রতি আফগানিস্তানের সঙ্গে ব্যর্থ সংলাপ হলো, তার দায়ও নেবে না ইসলামাবাদ।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রালয়ের মুখপাত্র তাহির হুসেন আন্দারবি নিশ্চিত করেছেন এসব তথ্য। শুক্রবার রাজধানী ইসলামাবাদে পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের ব্রিফিংয়ে আন্দারবি বলেন, “পাকিস্তান কখনও কাবুলে ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সংলাপ এড়িয়ে যায়নি, বা একে অবহেলা করেনি। তবে পাকিস্তান কখনও কোনো সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে সংলাপে বসবে না। সেই গোষ্ঠী তেহরিক-ই তালেবান হোক কিংবা বালোচ লিবারেশন আর্মি।”
সংবাদ সম্মেলনে আন্দারবি বলেন, ২০২১ সালে আফগানিস্তানে তালেবান বাহিনী ক্ষমতাসীন হওয়ার পর থেকেই পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলার উল্লম্ফন ঘটেছে। আফগানিস্তানের ভূখণ্ডকে সন্ত্রাসীরা তাদের তৎপরতার জন্য ব্যবহার করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
“তারপরও আমরা দীর্ঘদিন কাবুলে ক্ষমতাসীনদের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছি; কিন্তু এর পরিবর্তে কাবুলের কাছ থেকে নিষ্ক্রিয়তা এবং ফাঁপা প্রতিশ্রুতি ছাড়া আর কিছুই পাইনি।”
“টিটিপি এবং বিএলএ পাকিস্তানের ঘোষিত শত্রু। তাই স্বাভাবিকভাবেই যারা এ দুই গোষ্ঠীকে আশ্রয়, অর্থ ও পৃষ্ঠপোষকতা দেয় তারা পাকিস্তান এবং পাকিস্তানের জনগণের বন্ধু নয়। তালেবান সরকার টিটিপি এবং বিএলএকে আফগানিস্তানের শরণার্থী হিসেবে দেখাতে চাইছে এবং এটা পাকিস্তানের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। কারণ এটা কোনো মানবিক বা শরণার্থী সংকট নয়, বরং সন্ত্রাসীদের শরণার্থী হিসেবে দেখানোর চেষ্টা।”
আন্দারবি অবশ্য স্বীকার করেছেন যে তালেবান সরকার পাকিস্তানের সঙ্গে সংঘাত চায় না। তবে অভিযোগ করেছেন যে টিটিপির সঙ্গে আফগান সরকারের সম্পর্ক খুবই শক্তিশালী এবং এই সম্পর্ক দুই দেশের মধ্যে উদ্বেগ দিন দিন বাড়িয়ে দিচ্ছে। এছাড়া পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কাবুলে আসীন তালেবান সরকার মিথ্যা ও ভুয়া তথ্য ছড়াচ্ছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।
“আফগান সরকারের কিছু ব্যক্তি এমন প্রচারণা চালাচ্ছে যে টিটিপি ইস্যুতে পাকিস্তানের সরকারের মধ্যে অন্তর্কোন্দল চলছে। এটা পুরোপুরি গুজব। দেশ এবং দেশের নাগরিকদের নিরাপত্তার প্রশ্নে পাকিস্তানে কোথাও কোনো বিরোধ নেই।”
“আরেকটি কথা আমি বলতে চাই যে, তালেবান পশতুভাষী আফগানদের গোষ্ঠী। পাকিস্তানে পশতুভাষীদের সংখ্যা আফগানিস্তানের চেয়ে বেশি এবং তারা পাকিস্তানের প্রতি অনুগত। তাই এখানে জাতিগত বা ভাষাগত বিভেদ তৈরির চেষ্টা যদি আফগানিস্তান করে, কোনো লাভ হবে না। আফগানিস্তানের উচিত নিজের চরকায় তেল দেওয়া।”
সূত্র : ডন
