টুইন পিট ল্যাট্রিন পেয়ে খুশী জামালপুরের ১০ হাজার পরিবার

Oplus_131074

মোহাম্মদ আলী : জামালপুরের পল্লী ও চরাঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর যেসব পরিবারের নির্দিষ্ট কোনো ল্যাট্রিন ছিল না। ঝোপ, জঙ্গল, বাঁশঝাড় বা ক্ষেত খামারে তারা প্রস্রাব পায়খানা করতেন, আজ তারা স্বাস্থ্যসম্মত ” টুইন পিট ল্যাট্রিন পেয়ে খুশী! এখন তারা নিজেদের বাড়িতে নিজেদের ল্যাট্রিন ব্যবহার করছেন স্বপরিবারে। রক্ষা হচ্ছে পরিবেশ, বৃদ্ধি পাচ্ছে সামাজিক মর্যাদা। সম্প্রতি, এক সরেজমিন প্রতিবেদনে জামালপুর জেলার ৪টি উপজেলায় এমন ইতিবাচক চিত্র উঠে এসেছে। জানা যায়, ২০২৩/২৪ অর্থবছরে ৩৩ কোটি ৭৬ লাখ টাকা ব্যয়ে জামালপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্বাবধানে “মানব সম্পদ উন্নয়নে গ্রামীণ পানি সরবরাহ স্যানিটেশন ও স্বাস্থ্য প্রকল্পের” আওতায় জেলার ৪টি উপজেলার (জামালপুর সদর, সরিষাবাড়ি, মেলান্দহ মাদারগঞ্জ) ৪২টি ইউনিয়নের ৯ হাজার ৬শ ১৮টি পরিবারের মাঝে স্বাস্থ্যসম্মত টুইন পিট ল্যাট্রিন স্থাপন করা হয়েছে।
উল্লেখিত উপজেলাগুলোর বেশকিছু সংখ্যক ইউনিয়নের পল্লী ও চরাঞ্চলের সুবিধাভোগীদের সাথে সরাসরি কথা বলেছেন আমাদের প্রতিবেদক। এপ্রকল্পের সুবিধাভোগীরা তাদের পারিবারিক সুযোগ সুবিধা ও সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন প্রতিবেদকের কাছে।এব্যাপারে জামালপুর সদর উপজেলার তুলশিরচর ইউনিয়নের টেবিরচর গ্রামের নাজমুল হোসেন বলেন, এর আগে আমাদের বাড়িতে নির্দিষ্ট কোনো ল্যাট্রিন ছিল না। ঝোপ জঙ্গল বা বাঁশঝাড়ে আমরা প্রস্রাব করতে যেতাম। কিন্তু, এখন আমাদের সেই কষ্ট আর নেই। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল থেকে আমাদের বাড়িতে একটি স্বাস্থ্যসম্মত ল্যাট্রিন স্থাপন করে দিয়েছে। এতে আমাদের বিরাট উপকার হয়েছে।
সরিষাবাড়ি উপজেলার আওনা ইউনিয়নের চিথলিয়া গ্রামের মনোয়ারা বেগম বলেন, আমাদের আগের ল্যাট্রিনটা ছিল জরাজীর্ণ। কঞ্চির খুঁটিতে বেড়া ছিল কলাপাতার। কিছুদিন পর পর পাটগুলো ভরে যেত। দুর্গন্ধ ছড়াতো। ব্যবহার করতে লজ্জা লাগত। আমাদের এ কষ্ট দেখে আমাদেরকে একটি সরকারি আধাপাকা ল্যাট্রিন দিয়েছে। এটা পেয়ে আমরা খুব খুশী। মাদারগঞ্জ উপজেলার জোড়খালি ইউনিয়নের তারতা পাড়া গ্রামের আরেক সুবিধাভোগী জহির উদ্দিন জানান, আমার পরিবার কিছুদিন আগেও খোলা জায়গায় মলমূত্র ত্যাগ করত। এখন আমার বাড়িতে টুইন পিট ল্যাট্রিন করে দিয়েছে সরকার। এখন আর আমাদের ক্ষেত খামারে যেতে হয় না। প্রকল্পটি আমাদের মতো গরীবদের জন্য আশির্বাদ স্বরূপ। মেলান্দহ উপজেলার চর বানিপাকুরিয়া ইউনিয়নের শিহাটা গ্রামের দিনমজুর জিয়াউলের মা সুন্দরী বেগম তার বাড়িতে টুইন পিট ল্যাট্রিন পেয়ে তার সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন।
এব্যাপারে জামালপুর জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী, সুলতানা মাহমুদ বলেন, জামালপুর জেলার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সুরক্ষায় বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে চলমান প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষের দিকে। প্রকল্পটি যাতে সুষ্ঠু ও সুন্দর ভাবে সম্পন্ন হয়, সেই লক্ষ্যে আমরা আন্তরিক ভাবে কাজ করছি।