ট্রাম্পের ওপর হামলার ঘটনায় বিশ্বনেতাদের নিন্দা

যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমাবেশে হামলার ঘটনা ঘটেছে। এতে সাবেক এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট কানে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এবং গুলি তার কান ছিঁড়ে বেরিয়ে গেছে। কার্যত হামলা থেকে অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেছেন তিনি।

আগামী নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের রিপাবলিকান এ প্রার্থীর ওপর নির্বাচনী প্রচারণার সময় এমন হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছেন বিশ্বনেতারা। হামলার ঘটনায় কঠোর নিন্দা জানিয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্র্যাট প্রার্থী ও বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, আমেরিকায় এ ধরনের সহিংসতার কোনো স্থান নেই। এমনকি এই ধরনের হামলা ক্ষমা করা করা যায় না। এছাড়া তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কথাও বলেছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে ‘বন্ধু’ ট্রাম্পের দ্রুত সুস্থতাও কামনা করেছেন তিনি।

এক্স হ্যান্ডলে মোদি লিখেছেন, ‘আমার বন্ধু আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হামলার ঘটনায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। গণতন্ত্র এবং রাজনীতিতে হিংসার কোনো জায়গা নেই। তার দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। হামলার ঘটনায় যাদের মৃত্যু হয়েছে তাদের পরিবারের জন্য, যারা আহত হয়েছেন তাদের জন্য এবং সর্বোপরি আমেরিকার মানুষের জন্য আমার সমবেদনা রইল।’লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধীও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। এক্সে তিনি লিখেছেন, ‘আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ওপর হত্যার চেষ্টায় আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এই ধরনের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন। তার দ্রুত এবং সম্পূর্ণ সুস্থতা কামনা করছি।’

dhakapost

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস এক্সে লিখেছেন, ‘ট্রাম্পের ওপর হামলার খবর শুনলাম।তিনি গুরুতর আহত হননি শুনে আমি আশ্বস্ত হয়েছি। আমরা তার জন্য, তার পরিবারের জন্য এবং সভাস্থলে উপস্থিত যারা এই হামলার শিকার হয়েছেন, তাদের জন্য প্রার্থনা করছি। আমেরিকার সিক্রেট সার্ভিস, সব নিরাপত্তারক্ষী এবং স্থানীয় উদ্ধারকারীদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আমাদের দেশে এই ধরনের হিংসার কোনো জায়গা নেই। আমাদের একজোট হয়ে এই হিংসার বিরোধিতা করতে হবে এবং এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আর কোনও নতুন হিংসা যাতে না ঘটে, তা নিশ্চিত করতে হবে।’

সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা লিখেছেন, ‘আমাদের গণতন্ত্রে রাজনৈতিক হিংসার কোনো জায়গা নেই। ঠিক কী ঘটেছে, আমরা এখনও স্পষ্ট করে জানি না। তবে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে গুরুতরভাবে জখম হননি, তা জেনে আমরা আশ্বস্ত হয়েছি। নাগরিক হিসাবে আমাদের রাজনীতিকে আরও সম্মান জানানো উচিত। মিশেল (ওবামার স্ত্রী) এবং আমি ট্রাম্পের দ্রুত সুস্থ কামনা করছি।’

সাবেক আমেরিকান প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ লিখেছেন, ‘ট্রাম্পের ওপর এই কাপুরুষোচিত হামলার নিন্দা করছি। তিনি সুস্থ আছেন শুনে আমরা আশ্বস্ত। তৎপরতার জন্য সিক্রেট সার্ভিসের সব কর্মকর্তা প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য’।

হামলার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। এক্সে তিনি লিখেছেন, ট্রাম্পের ওপর হামলার ঘটনায় আমি উদ্বিগ্ন। আমাদের সমাজে রাজনৈতিক সহিংসতার কোনো স্থান নেই। 

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, গুলির ঘটনায় আমি ও আমার স্ত্রী বিস্মিত হয়েছি। আমরা তার নিরাপত্তা ও দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। 

স্থানীয় সময় শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়া অঙ্গরাজ্যের বাটলার শহরে এই হামলার ঘটনা ঘটে। হামলাকারী নিজেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর গুলিতে নিহত হয়েছেন।

গোয়েন্দা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ট্রাম্পকে লক্ষ্য করেই এ হামলা চালানো হয়েছিল এবং এটি ছিল গুপ্তহত্যার প্রচেষ্টা। 

মূলত আগামী নভেম্বর মাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হবে যুক্তরাষ্ট্রে। সেই নির্বাচনে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন ট্রাম্প। নির্বাচনের প্রচারে শনিবার বাটলার শহরে গিয়েছিলেন তিনি।

সেখানে অস্থায়ী মঞ্চে বক্তব্য দিতে ওঠার পরই একপর্যায়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে।