টঙ্গীর ঘটনা ছিল পরিকল্পিত হামলা, দাবি জোবায়েরপন্থিদের

২০১৮ সালের তাবলীগ জামাত বাংলাদেশের দুপক্ষের মধ্যে যে সংঘর্ষ হয়েছিল সেখানে মামলা করার ক্ষেত্রে আওয়ামী সরকার বাধা ছিল বলে মন্তব্য করেছেন মাওলানা জোবায়েরের অনুসারীরা৷ একইসঙ্গে ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর জোবায়ের অনুসারীদের ওপর হামলায় সাদ পন্থিদের বিচার দাবি করেছেন তারা৷

রোববার (১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানান তারা।

জোবায়েরপন্থিরা বলেন, পতিত ফ্যাসিস্ট সরকার আমাদের সঙ্গে অবিচার করেছে৷ কাকরাইল মসজিদ সাদ পন্থিদের একদিনের জন্যও পাওয়ার কথা নয় তবুও তাদের দুই সপ্তাহ এবং আমাদের চার সপ্তাহ করে ভাগ করে দেওয়া হয়৷

লিখিত বক্তব্যে মুফতি আমানুল হক বলেন, টঙ্গী হামলার ঘটনার সঙ্গে আওয়ামী সরকার প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল৷ কিন্তু দুঃখজনক বাস্তবতা হলো, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার বারবার মিথ্যা আশ্বাস দিয়েও এ নিয়ে কোনো ধরনের আইনি পদক্ষেপ নেয়নি। 

যার ফলে স্পষ্টত বোঝা যায়, টঙ্গী হামলার ঘটনার সঙ্গে আওয়ামী সরকার প্রত্যক্ষভাবে জড়িত ছিল। বিচারহীনতার আওয়ামী সংস্কৃতিই সাদপন্থিদের পরবর্তী সময়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে আরো বেশি সন্ত্রাসী অপতৎপরতা চালানোর সাহস যুগিয়েছে।

তিনি বলেন, সাদপন্থিদের সেদিনের বর্বর ও ন্যাক্কারজনক আক্রমণ শুধু বাংলাদেশের ভেতরেই নয় বহিঃবিশ্বেও দাওয়াত ও তাবলিগের মুবারক মেহনতের মর্যাদা ক্ষুণ্ন করেছে। বিদেশি সাথীদের মনে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। সেই ঘটনার পর থেকে বাংলাদেশে বিদেশি মেহমানদের আগমন হ্রাস পেয়েছে। যা আমাদের বাংলাদেশের জন্যে উদ্বেগজনক।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলা হয়, সাদপন্থি বাংলাদেশের নেতা ওয়াসিফুল ইসলামের প্রলোভনে ইজতেমা ময়দানের ভেতরে আক্রমণের ক্ষেত্র তৈরি করা হয়। ওয়াসিফুল ইসলাম রাতের অন্ধকারে সারা দেশ থেকে মাওলানা সাদ অনুসারীদের ঢাকার বিভিন্ন স্থানে জড়ো করে। পাশাপাশি ভাড়াটে সন্ত্রাসী ও হেলমেট বাহিনিকেও টঙ্গীর আশপাশে সংঘবদ্ধ করে। এ সময় তাদের হাতে প্রচুর ধারালো অস্ত্র ছিল। 

তারা নিরীহ নিরস্ত্র মুসলমানদের ওপর অন্যায় আক্রমণের অপরাধকে জায়েজ বানানোর অপচেষ্টা করে। যার ফলে ২০১৮ সালের ১ ডিসেম্বর তৎকালীন প্রশাসনের সহযোগিতায় দিল্লীর মাওলানা সাদের অনুসারী তথা সাদপন্থী নেতা ওয়াসিফুল ইসলাম ও নাসিম গং টঙ্গী ইজতেমা ময়দানে প্রস্তুতিতে কর্মরত নিরীহ, নিরস্ত্র সাধারণ মুসল্লী, তাবলিগের সাথি, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-শিক্ষকদের ওপর লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে।

অভিযোগ করা হয়, এর বিপরীতে শুরায়ী নেজামের সাথীরা সেদিন ময়দানে শান্তিপূর্ণভাবে আমল করছিলেন। পাহারারত সাথীদের হাতেও সেদিন তাসবিহ ছিল। তারা ছিলেন নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত ও তাসবিহ-তাহলিলে নিমগ্ন। তাদের ওপর সাদপন্থিরা বাইরে থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেদিন সাদপন্থীদের নৃশংস আক্রমণে আমাদের অন্তত পাঁচ হাজার নিরস্ত্র সাধারণ মুসল্লি, তাবলিগের সাথি, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-শিক্ষক মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিলেন। যার মধ্যে একজন ময়দানেই মৃত্যুবরণ করেন। অনেকে বিভিন্ন অঙ্গ হারিয়ে পঙ্গু হয়েছেন।