ভারতের দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্য তামিলনাড়ুতে বিষাক্ত মদপানে গত ৬ দিনে মৃতের সংখ্যা বেড়ে পৌঁছেছে ৫৬ জনে। ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে সোমবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে এএফপি।
এই মৃতদের সবাই রাজ্যের কাল্লাকুরিচি জেলার বাসিন্দা। এএফপির একজন ফটো সংবাদিক সম্প্রতি কাল্লাকুরচি শহর সফর করেছেন। তিনি জানিয়েছেন একের পর এক মৃতদেহ সৎকারের জেরে আগুনের ধোঁয়ায় কালো হয়ে উঠেছে শহরের প্রধান শ্মশান।
শহরের বিভিন্ন হাসপাতাল ঘুরে জানা গেছে, বর্তমানে অন্তত ১১৭ জন মানুষ বিষাক্ত মদপানজনিত কারণে সৃষ্ট বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, অসুস্থদের সবাই জ্বর অত্যাধিক ডায়রিয়া, ক্লান্তি, ঘন ঘন বমি ও বমি বমি ভাব, পাকস্থলীতে ব্যাথা চোখে জ্বালাপোড়াসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন তাদের কয়েক জনের অবস্থা গুরুতর।
বিষাক্ত মদ বিক্রির অভিযোগে ইতোমধ্যে দুই জনকে গ্রেপ্তার করেছে তামিলনাড়ু পুলিশ। সেই সঙ্গে কাল্লাকুরুচি পুলিশের যে শাখা রাজ্যের মদের বাণিজ্য নজরদারিতে রাখার দায়িত্বে ছিল— সেই শাখার একজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা ও ১০ পুলিশ সদস্যকে চাকরি থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
মদবিক্রির লাইসেন্স বা বৈধতাপত্র নেই— এমন বিক্রেতারা প্রায় সময়েই তাদের পণ্যের তেজ বাড়ানোর মিথানল নামের একটি রাসায়নিক মেশান। এটি খুবই উচ্চমাত্রার বিষাক্ত অ্যালকোহল। বিশুদ্ধ মিথানল সামান্যমাত্রায় গ্রহণ করলেও তা অন্ধত্ব, যকৃৎ অকার্যকর এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে।
লাইসেন্সবিহীন মদ বিক্রেতারা অনেক কম দামে তাদের পণ্য বিক্রি করেন। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে প্রতি বছর বিষাক্ত মদপানে বহু মানুষের মৃত্যু হয়। এই মৃতদের অধিকাংশই হতদরিদ্র।
তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিন প্রত্যেক মৃতের পরিবারকে ১০ লাখ রুপি এবং প্রত্যেক অসুস্থের পরিবারকে ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমা্যধম এক্স এক বার্তায় এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘যার অবৈধ মদ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত, তাদের পুরো চক্রকে শিগগিরই গ্রেপ্তার করা হবে। ইতোমধ্যে দুই জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দায়িত্বে অবহেলার জন্য দায়ী পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্যদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’
সূত্র : এএফপি