দেওয়ানগঞ্জে অসময়ে নদী ভাঙ্গনে আতংকিত কয়েক গ্রামের মানুষ ॥ ৪ গুচ্ছ গ্রাম নদীতে বিলীন

hdr

খাদেমুল ইসলাম : জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে অসময়ে ব্যাপক নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। উপজেলার চুকাইবাড়ী ইউনিয়ন থেকে শুরু করে উত্তরে উজানে চিকাজানী, বাহাদুরাবাদ ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। চিকাজানী ইউনিয়নের বওলাতলী, খান পাড়া, বরখাল এবং খোলাবাড়ী এলাকায় ভাঙ্গন বেশি। চিকাজানী ইউনিয়নের বওলাতলী, খানপাড়া, মন্ডলবাজার, হাজারীপাড়া, চর বাহাদুরাবাদ, ডাকের চর, খোলাবাড়ী সহ অত্যন্ত ৮ গ্রামে যমুনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে নদী ভাঙ্গন চলছে। প্রতিবছর বন্যা শুরু কালে, পুরো বন্যার সময় ও বন্যার পানি কমতে শুরু করলে নদ-নদীতে ভাঙ্গন দেখা দেয়। কিন্তু বর্তমান সময়ে নদীতে সাধারণত ভাঙ্গন দেখা যায় না। এবার এ সময়ে যমুনা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে ভাঙ্গন শুরু হওয়ায় এলাকায় এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনার পাশাপাশি নদীপাড় ও নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের মাঝে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। গত ১৬ নভেম্বর শনিবার সরজমিনে গিয়ে কথা হয় খানপাড়া, বওলাতলী, মন্ডল বাজার, বরখাল এলাকার বাসিন্দা আতাউর রহমান সামি, হাবিবুর রহমান, ইউপি সদস্য খুশি আক্তার, ইমরান নুরু হক, আম্বিয়া, সুমা, শোভা, মিজান, আজিজুল, বাবু মিয়া, নুদু মিয়া ও ইফসুফ আলী সহ অনেকের সাথে। তারা জানান, এক সময় এখান থেকে যমুনা নদীর দুরুত্ব ছিল ১৫-২০ কিলোমিটার দূরে। এখন আমাদের গ্রামের অধিকাংশ এলাকা বিলীন হয়েছে। ইতিপূর্বে এ এলাকার ৪টি গুচ্ছ গ্রাম নদীতে ভেঙ্গে গেছে। এব্যাপারে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসার মোঃ মাজহারুল ইসলাম নয়াদিগন্তকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে নদী ভাঙ্গনের কথা ও ৪টি গুচ্ছ গ্রাম ভেঙ্গে যাওয়ার কথা সবাই জানে। সরকার এ ব্যাপারে কাজও করে যাচ্ছে। এলাকাবাসী ক্ষোভ ও দুঃখের সাথে নয়াদিগন্তকে জানান, ফ্যাসিস্ট আওয়ামীলীগ সরকারের দীর্ঘ ১৭ বছর শুধু উন্নয়নের কথা শোনেছি। জনবান্ধব সরকারের কথা শোনে এসেছি। অথচ যমুনার ভাঙ্গনে হাজার হাজার পরিবার ভিটা মাটি হারিয়েছে, অসংখ্য মানুষ হয়েছে ভূমিহীন। নদী ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে উপজেলা সদর, রেল স্টেশন, জিল বাংলা চিনিকল, উপজেলা পরিষদ সহ পুরো সদর এলাকার নিকটবর্তী হওয়ায় চরম হুমকির মুখে এসব প্রতিষ্ঠান। গত সরকার নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। নামকাওয়াস্তে কাজ করলেও স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীরা তা সেখানে ভাগ বসিয়েছে। আমরা বহু দিন ধরে বলে আসছি, আমরা কোন ত্রাণ সামগ্রী চাই না, আমাদের একমাত্র চাওয়া নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধ। এব্যাপারে এলাকাবাসী, জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন সহ অনেক জায়গায় আবেদন নিবেদন করে এসেছি কিন্তু বাস্তব ভিত্তিক ভাঙ্গন প্রতিরোধে কোনো কাজ হয়নি। সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য এলাকায় মানব বন্ধন, সাংবাদিক সম্মেলন, বিভিন্ন বরাবর আবেদন করা সহ অনেক করেছি কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। আমরা ত্বরিৎ গতিতে খানপাড়া, বওলাতলী সহ ভাঙ্গন এলাকার ভাঙ্গন প্রতিরোধ ব্যবস্থার জন্য সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।