দেওয়ানগঞ্জে অসময়ে ব্যাপক নদী ভাঙ্গন এক মাসে অর্ধশতাধিক বাড়ী ঘর বিলীন : জিও ব্যাগ ফেলা উদ্বোধন

খাদেমুল ইসলাম : জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে যমুনা নদীতে অসময়ে ব্যাপক ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। গত এক মাসে অর্ধ-শতাধিক বাড়ী ঘর নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়েছে বলে জানা গেছে। ৮ এপ্রিল মঙ্গলবার দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানী ইউনিয়নের চর ডাকাতিয়াপাড়া গ্রামে নদী ভাঙ্গন স্থলে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাওবো)র উদ্যোগে জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে ৩৫ মিটার ভাঙ্গন প্রতিরোধে সাড়ে ছয় হাজার জিও ব্যাগ ফেলা উদ্বোধন করেছেন, দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আতাউর রহমান এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ শফিকুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আব্দুর রশিদ সাদা, দেওয়ানগঞ্জ পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোঃ আতিকুর রহমান সাজু, উপজেলা কৃষক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বিএনপি নেতা মোঃ আতাউর রহমান আতা, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজাউল করিম বাবলু, দেওয়ানগঞ্জ পৌর যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব মুখলেছুর রহমান, কৃষক দলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক খলিল সহ অন্যান্য। এলাকা পরিদর্শনে জানা গেছে, চিকাজানী ইউনিয়নের খোলাবাড়ী থেকে চর ডাকাতিয়াপাড়া, মন্ডল বাজার, বওলাতলী হয়ে ভাটিতে বরখাল হয়ে ফুটানি বাজার পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার জুড়ে বিভিন্ন পয়েন্টে নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রয়েছে। চর ডাকাতিয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মাত্র ১০ ফিটের মধ্যেই তীব্র ভাঙ্গনরত যমুনা নদী। যে কোনো মুহুর্তে ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে যেতে পারে স্কুলটি। স্কুলটিকে টিকে রাখার লক্ষে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আতাউর রহমান ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ শফিকুল ইসলাম ৮ এপ্রিল মঙ্গলবার সেখানে জিও ব্যাগ ফেলা শুরু করে দিয়েছেন। ঐ ২ সরকারি কর্মকর্তা নয়াদিগন্তকে জানান, স্কুলটি রক্ষার লক্ষে এবং গ্রামটি রক্ষায় আজ সাড়ে ছয় হাজার জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়ে গেছে। ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষক ফাতেমা খাতুন সিদ্দিকা সহ অন্যান্য শিক্ষকরা জানান, যে কোনো মুহুর্তে স্কুলটি নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে আশঙ্কায় আমরা স্কুলের যাবতীয় মালামাল সোমবার থেকে সরিয়ে নেওয়া শুরু করেছি। স্থানীয় বাসিন্দা হানিফ মেম্বার, শাহীন, ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি হাসান, ইউনিয়ন ছাত্রদল সভাপতি মিজানুর রহমান মমিন, মজনু মিয়া, ছামিউল মেম্বার, নয়া মিয়া, ওমর আলী, রুপালি, সাজেদা সহ অনেকেই জানান, আমাদের চর ডাকাতিয়াপাড়া গ্রামটি কয়েকদিনের মধ্যে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। অর্ধশত পরিবার খোলা আকাশের নিচে বা আত্মীয় স্বজনের বাড়ী ঘরে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। তারা সরকারের কাছে কোনো সাহায্য না চেয়ে একমাত্র দাবী নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধের। তারা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, কয়েক দশক ধরে দেওয়ানগঞ্জে যমুনা, ব্রহ্মপুত্র নদ-নদী ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে পুরো উপজেলা সদর গ্রাস করার উপক্রম হয়েছে। অথচ স্থায়ীভাবে ভাঙ্গন রোধে আজও কোনো ব্যবস্থা হয়নি। অতীতে জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি কর্মকর্তাগণ শুধু আশ^াস দিয়ে গেছে। কাজের কাজ আজও হয়নি।