দেওয়ানগঞ্জে শেষ মেষ সরকারি অর্থায়নে নির্মিত হলো মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ শহীদ ছানা চত্তর ঘোষণার দাবী

খাদেমুল ইসলাম : অনেক চড়াই উৎড়াই পেরিয়ে শেষমেষ দেওয়ানগঞ্জে উদ্বোধন হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ। জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার বেলতলী বাজার রেলক্রসিং স্থানের পূর্ব পাশে ঐ স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধ কালে ঐ স্থানে সর্ব প্রথম স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করেছিলেন দেওয়ানগঞ্জ পৌরসভার বাদেশশারিয়া বাড়ী গুজিমারী আজিম নগর গ্রামের বাসিন্দা বিশিষ্ট সমাজসেবক ও সাবেক সরকারি কর্মকর্তা মরহুম আলহাজ¦ আলতাফ হোসেনের পুত্র আনোয়ারুল আজিম ছানা। তিনি সে সময় বুয়েটের একজন মেধাবী শিক্ষার্থী ও বুয়েটে ছাত্র নেতা হিসেবে সুপরিচিত ছিলেন। পাক আমলে বিহারী ও স্বাধীনতা বিরোধী প্রভাবশালী পরিবার অধ্যুষিত বেলতলী এলাকায় সর্ব প্রথম স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করা সে সময় ছিল অসম্ভব দুঃসাহসীক কাজ। সর্ব প্রথম স্বাধীন বাংলার পতাকা উত্তোলন করার অপরাধে পরবর্তীতে শহীদ ছানাকে দেওয়ানগঞ্জ রেল স্টেশনের দক্ষিণ পাশে নিজ বাসা থেকে পাক বর্বর বাহিনী তাকে, তার বাবা, মা, ভাই, বোন, ভগ্নিপতি সহ অন্যান্যদের ধরে নিয়ে যায় মৃত্যুপুরী বলে পরিচিত বাহাদুরাবাদ ঘাটে। সেখানে অমানষিক নির্যাতন করা হয় সবাইকে। কিন্তু সীমাহীন অত্যাচার করা হয় শহীদ ছানার উপর। পরে তাদের কে ছেড়ে দেওয়া হলেও ক’দিন পর বিনা চিকিৎসায় মারা যান শহীদ ছানা। মুমূর্ষু অবস্থায় শহীদ ছানার চিকিৎসা করার সুযোগও দেয়নি পাক হানাদার বাহিনী। তাদের বাড়ী ঘরে নজর দারি ছিলো। লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সূচনা লগ্ন থেকে দেওয়ানগঞ্জের বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাজ সহ সর্বস্তরের মানুষের দাবী ছিল দেশ ও জাতির জন্য জীবন উৎসর্গ করা শহীদ ছানার স্মৃতি রক্ষার্থে পতাকা উত্তোলন স্থানে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ, রেল স্টেশন সড়ককে শহীদ ছানা রোড, জন্ম স্থান গুজিমারী গ্রামকে আজিম নগর করা, তার কবর স্থানে কমপ্লেক্স নির্মাণ এবং বেলতলী রেল ক্রসিং স্থানকে শহীদ ছানা চত্তর হিসেবে ঘোষণা করার। অবশেষে স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরে ঐ স্থানে সরকারি অর্থায়নে নির্মিত হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিসৌধ । অন্যসব দাবী ক্রমানয়ে পূরন করা হবে বলে আশ^স্থ করা হয়েছে সরকারের পক্ষ থেকে। এতে করে বীর মুক্তিযোদ্ধা সমাজ সহ পুরো দেওয়ানগঞ্জ বাসী যারপর নাই খুশি।