খাদেমুল ইসলাম : জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জে ক্রীড়াঙ্গন ক্রমে ঝিমিয়ে পড়ছে। আগের মতো এখন আর খেলাধূলার প্রচলন বিশেষ চোখে পড়ে না। অতীত দিনে দেখা গেছে বিকেল হলেই দেওয়ানগঞ্জে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাঠ সহ নানা স্থানে ফুটবল, ক্রিকেট, হাডুডু, দাড়িয়া বাধা সহ হরেক রকম খেলা চলতে দেখা গেছে। ব্রিটিশ আমল থেকে পাকিস্তান আমল পর্যন্ত দেওয়ানগঞ্জের ক্রীড়াবিদদের দাপট ছিল ক্রীড়াঙ্গনে। তদানিন্তন বৃহত্তর ময়মনসিংহের ফুটবল দলে একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল দেওয়ানগঞ্জের খেলোয়ারদের। প্রখ্যাত গোল কিপার মরহুম আতাউল হক মুল্লুক মিয়াকে ফুটবল অঙ্গনে লৌহ প্রাচীর বলা হতো। দেওয়ানগঞ্জের খেলোয়াররা শুধু দেশেই নয়, বিদেশের মাটিতে খেলে সুনাম বয়ে নিয়ে আসত। অতীত ক্রীড়াঙ্গন নিয়ে পরে বিস্তারিত লিখার আশা রইল। এবারের ঈদুল আযহায় দেওয়ানগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নবীন প্রবীন খেলোয়ারদের খেলা দেখতে হাজারও দর্শকের সমাগম হয়েছিল। ঈদ পুনর্মিলনী উপলক্ষে একটি মনোজ্ঞ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট ২০২৫ আয়োজন করা হয়। উদ্যোগটি ছিল প্রশংসনীয়। আবু সায়েম তালুকদার বাবু, শফিকুল হক রানা, হাসানুজ্জামান হাব্বি, সাব্বির, হুমায়ন কবির সহ অন্যানরা জানান, অবসরে যাওয়া স্বনামধন্য প্রবীন ফুটবলার- ক্রিকেটারদের নিয়ে একটি টুর্নামেন্ট আয়োজনের আশা ছিল অনেক দিন ধরে। যা এবার বাস্তবায়ন হলো। টি-২০ প্রীতি ক্রিকেট টুর্নামেন্টে অংশ নেয় অতীত তারকা একাদশ ও সোনালী সময় একাদশের খেলোয়ার বৃন্দ। এক দলের নেতৃত্ব দেন সাবেক খেলোয়ার ও সংগঠক শওকত হায়দার খশরু ও অন্য দলের নেতৃত্ব দেন এক সময়ের জাতীয় পর্যায়ের কৃতি ফুটবলার মোঃ মুজাহিদুর রহমান আঞ্জু। ৯ জুন ঈদের দিনে প্রখর রোদে দেওয়ানগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দু-দলের খেলোয়ারদের মধ্যে অনেকের বয়স ছিল ৭০-৮৫ বছর পর্যন্ত। তবুও তাদের মধ্যে উদ্যোগ, ক্ষিপ্রতা, তেজ ও খেলার মান দেখে হতবাক সবাই। মাঠ জুড়ে দর্শকের মাঝে হাত তালি শুরু হয়। টি-২০ প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ পরিচালনা করেন, শিক্ষক ও ক্রিকেটার সোলায়মান হোসেন ও ক্রিকেটার সিয়াম। ধারাভাষ্যে খায়রুল কবির সাগর এবং মিডিয়া কাভারেজে দায়িত্বে ছিলেন সিনিয়র সাংবাদিক খাদেমুল ইসলাম ও হুমায়ন কবির তালুকদার। অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এসএ নেওয়াজী প্রবাল, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোঃ আইনুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা আমিনুল ইসলাম রাজা, সাবেক মুক্তিযোদ্ধা ডেপুটি কমান্ডার দুলাল তালুকদার, বিএনপি নেতা বাবু শ্যামল চন্দ, উপজেলা ছাত্রদল সভাপতি সাঈদ বিন আনোয়ার সজিব সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। ঐ দিন জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শুরু হয় টুর্নামেন্ট। টসে জিতে ব্যাটিং এ সিদ্ধান্ত নেন মুজাহিদুর রহমান আঞ্জু। ২০ ওভারে তার দল ১৫২ রান সংগ্রহ করে। শওকত হায়দার খশরুর দল ১৫৩ রানের টার্গেট নিয়ে ব্যাটিং শুরু করে এবং ৫ উইকেটে জয়ী হন। আসিফ বিন রহমান ৬৭ রান করে ম্যান অফ দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন। শেষে অতিথিবৃন্দ চ্যাম্পিয়ন ও রানার্স আপ টিমের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। টুর্নামেন্টটি স্থানীয় সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছে।
দেওয়ানগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে জমে উঠেছিল প্রবীন-নবীনের ক্রিকেট ম্যাচ
