কাতারের রাজধানী দোহায় হামাস নেতাদের লক্ষ্য করে গত সপ্তাহে শক্তিশালী হামলা চালায় ইসরায়েল। এ হামলার পর কাতার জরুরিভিত্তিতে আরব ও ইসলামিক নেতাদের নিয়ে জরুরি সম্মেলন আয়োজন করে।
ধারণা করা হচ্ছিল সেখান থেকে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বড় ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থার ঘোষণা আসবে। যারমধ্যে তেল নিষেধাজ্ঞা, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা এবং ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক অবনমনের বিষয় থাকতে পারে বলে মনে করেছিলেন সাধারণ মুসলিমরা। কিন্তু এগুলোর কিছুই হয়নি।
তবে সম্মেলনে উপস্থিত আরব-মুসলিম নেতারা বড় বড় হুঁশিয়ারি বাক্য উচ্চারণ করেছেন। বলা যায় দোহা থেকে ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে ‘কথার মিসাইল’ ছুড়েছেন তারা।
গত সোমবার এ সম্মেলনের যোগ দিতে কাতারে যান প্রায় সব মুসলিম দেশের নেতা ও প্রতিনিধিরা। এ সম্মেলনে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে আরব নেতাদের শক্তিশালী অবস্থান নিতে দেখা যাবে— এমন প্রত্যাশা ছিল সবার। কিন্তু সম্মেলন শেষে যৌথ বিবৃতিতে তারা ঘোষণা দেন “ফিলিস্তিনিদের বিরুদ্ধে যেন ইসরায়েল আর আগ্রাসন না চালাতে পারে সেজন্য প্রয়োজনীয় সব আইনি এবং কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক থাকা আরব দেশগুলো ছিল চুপ
২০২০ সালে আব্রাহাম চুক্তির আওতায় দখলদার ইসরায়েলের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন এবং মরক্কো। এ দেশগুলো ইসরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো শক্তশালী বিবৃতিও দেয়নি। সবচেয়ে বড় বিষয় হলো গত সোমবার ছিল আব্রাহাম চুক্তির পাঁচ বছর।
সম্মেলনে বক্তব্যও দেননি সৌদির ক্রাউন প্রিন্স
সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান কাতারে এ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন। কিন্তু সম্মেলনে তিনি বক্তব্য দেননি। যা অনেককে অবাক করেছে। কারণ ওই অঞ্চলে সৌদির একটি প্রভাব রয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে যায় সেটির পূর্বসতর্কতার অংশ হিসেবে ‘ইসরায়েলের বিরুদ্ধে’ বক্তব্য দেওয়া থেকে বিরত ছিলেন মোহাম্মদ বিন সালমান।
সেই একই দৃশ্য
আরব-মুসলিম নেতাদের সম্মেলনের শেষে সেই পুরোনো চিত্রই দেখা গেছে— শক্তিশালী সতর্কবার্তা, কিন্তু ইসরায়েলের বিরুদ্ধে শক্তিশালী কোনো পদক্ষেপ নয়। অনেক পর্যবেক্ষক প্রশ্ন তুলছেন আরবদের মধ্যে যে ঐক্য প্রদর্শন করা সেটি এখন লোক দেখানো বিষয়ে পরিণত হলো কি না। বিশেষ করে যখন ফিলিস্তিনি ইসরায়েলের বর্বরতা চলছে তখন তাদের পক্ষ থেকে কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে না।