দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশ বাহিনী প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন।
শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) দুপুরে কাকরাইলের উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুল অ্যান্ড কলেজে ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি এ কথা বলেন।
আইজিপি বলেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের জন্য পুলিশ বাহিনী প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে। সবাই মিলে উৎসবমুখর পরিবেশে নির্বাচন উপহার দেওয়ার জন্য পুলিশ বাহিনী ইতোমধ্যে প্রস্তুত রয়েছে। প্রতিটি সদস্যকে আমরা ব্রিফ করেছি তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে। আমরা সবার সহযোগিতায় প্রস্তুতি পর্ব সম্পন্ন করেছি। আমরা সারা দেশের ৪২ হাজার ২৫টি ভোটকেন্দ্র নিরাপদ রাখতে কাজ করে যাব।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে নাশকতার চেষ্টা করলে এর ফল ভালো হবে না। আমরা তাৎক্ষণিক নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে আমরা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করব।’
‘সম্প্রতি মাগুরায় ছাত্রদলের একজন নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। নির্বাচনকেন্দ্রীক সহিংসতা ঘটানোর বেশ কিছু তথ্য তার কাছ থেকে পাওয়া গেছে। সহিংসতা-নাশকতা করার জন্য তাদের বেশ কিছু পরিকল্পনার বিষয়ে আমরা জানতে পেরেছি। সেই আলোকে আমরা আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছি। এ বিষয়ে আরও তথ্য সংগ্রহ করছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন পর্যায় থেকে নাশকতাকারীদের বিষয়ে প্রতিনিয়ত আমরা তাদের ইনফরমেশন পাচ্ছি। আমরা আশা করি, তারা যত পরিকল্পনাই করুক, আমরা তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেব।’
‘গ্রেপ্তার ওই ছাত্রদল নেতা নাশকতাকারীরা পরিকল্পনা করেছিল যে, বিকট কিছু আওয়াজ সৃষ্টি করে মানুষের মনে ভীতি তৈরি করবে। এই তথ্য আমরা পেয়েছি। আমরা আমাদের পর্যাপ্ত প্রস্তুতি নিয়েছি। আমি আশা করি এই ধরনের ভীতি সঞ্চার তারা করতে পারবে না। দেশের মানুষ সবাই মিলে যেভাবে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাসবাদ ও নাশকতার বিরুদ্ধে আমাদেরকে সহায়তা করেছে, এবারও সেভাবে নাশকতাকারীদের দমন করা হবে।’
আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, ‘আমি দেশের নাগরিকদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, এই দেশের গোয়েন্দা সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট এবং প্রশাসন সবাই মিলে সাফল্যমণ্ডিত নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের জন্য সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতি ঘটাতে কেউ যদি কোনো সুযোগ নেয়, তাহলে কঠোরভাবে তাদের দমন করে আইনের আওতায় আনা হবে।’
তিনি বলেন, ‘দেশের গোয়েন্দা সংস্থা, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বিভিন্ন ইউনিট, প্রশাসন, ইসি ও রিটার্নিং কর্মকর্তার অফিসসহ আমাদের সবার মাঝে একটি সুষ্ঠু সমন্বয় রয়েছে। যেকোনো প্রয়োজনে নিকটস্থ থানায় বা পুলিশের জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ আপনারা যোগাযোগ করতে পারেন। আমাদের টিম সহায়তার জন্য আপনাদের পাশে দ্রুততম সময়ে পৌঁছে যাবে।’
ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তায় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে
গত নির্বাচনগুলোতে ভার্চুয়ালি গুজব ছড়ানো হয়েছে। এবারের নির্বাচনকে কেন্দ্র করে গুজব ঠেকাতে পুলিশের ভূমিকা কী থাকবে? এ প্রশ্নের জবাবে আইজিপি বলেন, ‘পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট সাইবার ওয়ার্ল্ডে কাজ করছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমাদের সকল কার্যক্রম পরিচালনা করছি।’
হরতালের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশ প্রধান বলেন, ‘এ দেশের মানুষ নির্বাচনমুখী এবং নির্বাচনের জন্য দেশবাসী উন্মুখ হয়ে আছে। দলে দলে মানুষ ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে যাবে। ভোট উৎসবে হরতালকারীদের খুঁজে পাওয়া যাবে না বলেই আমার মনে হয়।’
ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্র নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সকল কেন্দ্রের নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত ব্যবস্থা রেখেছি। বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সকলে একসঙ্গে একযোগে কাজ করছি। স্থানীয় প্রশাসন, রিটার্নিং অফিসার ও সকল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী একযোগে এক প্ল্যাটফর্মে এসে কাজ করছি।’