অবসরপ্রাপ্ত সচিব ও রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান এএফএম সোলায়মান চৌধুরী ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) আহ্বায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। তার জায়গায় খ্যাতিমান মনোরোগ বিশেষজ্ঞ ও সামাজিক ব্যক্তিত্ব প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাবকে (মিনার) নতুন আহ্বায়ক নির্বাচিত করেছে দলটি।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) দিবাগত রাতে আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি পার্টি) জরুরি ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের (এনইসি) সভায় পার্টির যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনারকে আহ্বায়ক নির্বাচিত করা হয়।
তিনি দেশের একজন শীর্ষস্থানীয় মনোরোগ বিশেষজ্ঞ এবং একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সিনিয়র অধ্যাপক। সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত এই কর্মকর্তা দলের প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে অন্যতম।
সম্প্রতি বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে চরম প্রতিকূল পরিস্থিতিতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ঢাকার মেডিকেল সেন্টারগুলোতে ঘুরে ঘুরে তিনি আহত ছাত্র-জনতার চিকিৎসা তদারকি করেন। তাছাড়া দেশের যেকোনো দুর্যোগ দুর্বিপাকে খাদ্য ও চিকিৎসা সাহায্য নিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে ছুটে চলা এই মানুষ ইতোমধ্যে একজন সামাজিক ও মানবিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করেছেন।
এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু জানান, এবি পার্টির আহ্বায়ক, অবসরপ্রাপ্ত সচিব ও রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান এএফএম সোলায়মান চৌধুরী ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে গতকাল মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) সন্ধ্যায় পার্টির আহ্বায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেন।
এর পরপরই গণমাধ্যমে এএফএম সোলায়মান চৌধুরী সরকারের গুরুত্বপূর্ণ পদের আমন্ত্রণ পেয়েছেন বলে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়ে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো রাষ্ট্রীয় পদে আসীন হতে হলে ব্যক্তির রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা পরিহার করতে হয়। এবি পার্টির গঠনতন্ত্রেও কোনো নেতার একইসঙ্গে দলীয় পদ ও সরকারি দায়িত্ব পালনের সুযোগ নেই। সরকারি পদ গ্রহণ করতে হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে দলীয় পদ ত্যাগ করতে হয়। কয়েক সপ্তাহ আগে এবি পার্টির অন্যতম যুগ্ম আহ্বায়ক সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলামও দল থেকে পদত্যাগ করেন এবং এরপর তিনি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর হিসেবে নিয়োগপ্রাপ্ত পান।
সোলায়মান চৌধুরীর পদত্যাগের পরিপ্রেক্ষিতে নতুন আহ্বায়ক নির্বাচনের জন্য গতকাল রাতে দলের ন্যাশনাল এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের জরুরি সভা আহ্বান করা হয়।
এতে দলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা অধ্যাপক ডা. মেজর (অব.) আব্দুল ওহাব মিনারকে সর্বসম্মতিক্রমে দলের নতুন আহ্বায়ক নির্বাচিত করা হয়।
কাউন্সিল সভায় দলের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট গোলাম ফারুক, আলহাজ্ব জাহাঙ্গীর কাসেম, এম হারুনুর রশীদ, বিএম নাজমুল হক, লে. কর্নেল (অব.) দিদারুল আলম, লে. কর্ণেল (অব.) হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সদস্যসচিব ব্যারিস্টার খান আজম, ব্যারিস্টার যোবায়ের আহমেদ ভূঁইয়া, অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ আল মামুন রানা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২ মে নতুন দল হিসেবে এবি পার্টি আত্মপ্রকাশ করে। দলের সূচনালগ্নে এএফএম সোলায়মান চৌধুরীকে আহ্বায়ক ও মজিবুর রহমান মঞ্জুকে সদস্যসচিব করে দলটির ২২২ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করা হয়। চলতি বছরের ২১ আগস্ট দলটি সরকারের নিবন্ধন লাভ করে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য নতুন এই রাজনৈতিক দলটি বেশ আলোচিত হয় ও সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।