নিজস্ব সংবাদদাতা : গতকাল রোববার জামালপুর জেলা বিশেষ উন্নয়ন সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্মমন্ত্রী আলহাজ ফরিদুল হক খান বলেন আজ প্রথমবারের মতো জামালপুরের উন্নয়নে পাঁচজন এমপি একত্রে বসেছি। সাথে আছেন পৌরসভার মেয়র, উপজেলা চেয়ারম্যান, সরকারি কর্মকর্তাসহ সমন্বয় কমিটির সদস্যগণ। আজ আমরা অনেকগুলো সিদ্ধান্ত নিয়েছি। অনেক প্রস্তাব এসেছে। আমরা পাঁচ এমপি সমন্বিত উদ্যোগে কাজ করলে সহজেই স্মার্ট ও সমৃদ্ধ জামালপুর গড়ে উঠবে। সবাই মিলে আলোচনা করে কাজ করলে ভুল হবার সম্ভাবনা কম থাকে। ধর্মমন্ত্রী কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন মির্জা আজমের নেতৃত্বে জামালপুরের সার্বিক উন্নয়নে আমরা অনেকদূর এগিয়ে আছি। তিনি সাবেক মূখ্যসচিব এবং বর্তমান সদরের এমপি আবুল কালাম আজাদকেও জামালপুরের উন্নয়নে ভূমিকা রাখার জন্য ধন্যবাদ জানান। মন্ত্রী যমুনা তীরবর্তী ১১২ কিলোমিটার যমুনা তীর রক্ষা বাঁধ কাম সড়ক নির্মানে সকলের সহায়তা কামনা করেন।
জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন জামালপুর ৩ আসনের সংসদ সদস্য মির্জা আজম, সদর আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ, জামালপুর ৪ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ, জামালপুর ১ আসনের সংসদ সদস্য নূর মোহাম্মদ, জামালপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুহম্মদ বাকী বিল্লাহ, পুলিশ সুপার কামরুজ্জামান বিপিএম প্রমুখ। সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. শফিউর রহমান। সভায় দপ্তর প্রধানগণ স্ব স্ব বিভাগের কার্যক্রম উপস্থাপন করেন। এরপর উপজেলা উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র বিভিন্ন প্রশ্ন ও সুপারিশ করেন বিভিন্ন কার্যালয়ের প্রধানদের কাছে।
মির্জা আজম তাঁর বক্তব্যে বলেন মাদারগঞ্জে সমবায় কার্যালয় থেকে নিবন্ধন নিয়ে কতিপয় প্রতারক অধিক মুনাফালাভের লোভ দেখিয়ে তিন হাজার কোটি টাকার উপরে হাতিয়ে নিয়েছে। সর্বস্ব হারিয়ে অনেকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছে। সমবায় কর্মকর্তারা দেখেও না দেখার ভান করেছে। সাংবাদিকরা নিউজ করে নাই। নেতারাও কোন উদ্যোগ নেই নাই। তিনি একমাসের মধ্যে পুরো তথ্য প্রকাশ করার জন্য জেলা সমবায় অফিসারকে নির্দেশ দেন।মির্জা আজম মাদক নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনকে কঠোর হবার আহ্বান জানান। মাদকের প্রবেশ পথ বন্ধ করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি মডেল মসজিদ সংলগ্ন পুরোনো মসজিদের শেড ভেঙ্গে সেখানে মাঠের ব্যবস্থা করার জন্য জেলা প্রশাসককে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তাগিদ দেন।
সদর আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন শিক্ষার মান উন্নয়নে পাঁচ এমপিসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রধানদের নিয়ে আলাদাভাবে মিটিং করার জন্য জেলা প্রশাসককে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য বলেন। তিনি হাসপাতালসহ সকল পরিত্যাক্ত ভবনগুলো ভেঙ্গে ফেলার জন্য স্ব স্ব দপ্তরকে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানান। তিনি লোডশেডিং এর সিডিউল করার জন্যে বিদ্যুতের নির্বাহী প্রকৌশলীকে কাজ করতে বলেন।
জামালপুর ১ ও ৪ আসনের সংসদ সদস্য যথাক্রমে নূর মোহাম্মদ ও অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ সমতার ভিত্তিতে উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করার অনুরোধ জানান।
জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুহম্মদ বাকী বিল্লাহ যানজট নিরসনে শহরের প্রধান সড়কটি ৪ লেন করার প্রস্তাব করেন। তিনি বিজয় আন্তঃনগর ট্রেন জামালপুর থেকে চালু করার জন্য এবং এ নিয়ে কোন ধরণের আঞ্চলিক বিরোধে না জড়ানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার জন্য তাঁর প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
আলোচনায় প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নির্মান করা, শুদ্ধভাবে জাতীয় সংগীত চর্চা করা, রেলের কালোবাজারী বন্ধ করা, জামালপুর থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত একটি ট্রেন চালু করা, দেওয়ানগঞ্জ থেকে ভূয়াপুর পর্যন্ত ১১২ কিলোমিটার যমুনা তীর রক্ষা বাধ নির্মান, ধানুয়া কামালপুর স্থলবন্দর সক্রিয় করা, আগামী জুন মাসের মধ্যে রেলওয়ে ওভারপাস নির্মানের কাজ শেষ করা, আলহাজ জুট মিল চালু করা, সিএনজি, ইজিবাইক নিয়ন্ত্রণ করাসহ বিভন্ন সিদ্ধান্ত ও প্রস্তাব উঠে আসে।
জেলা প্রশাসক শফিউর রহমান এধরণের সভা মাঝে মধ্যেই করার জন্য সংসদ সদস্যগণসহ সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।