পাকিস্তানের ক্রিকেটের উত্থানের গল্পে বেশ বড় অংশ জুড়েই থাকছে ইমরান খানের নাম। ১৯৯২ সালের বিশ্বকাপ জেতা দলের অধিনায়ক তো বটেই, দেশটির ক্রিকেটের সর্বকালের সেরা অলরাউন্ডারও বলা চলে ইমরানকে। ক্রিকেটের পর্ব শেষ করে রাজনীতিতে এসেছেন। প্রধানমন্ত্রীত্বও পেয়েছেন। যদিও এখন তার দিন কাটছে আদিয়ালা জেলে বসে।
বাংলাদেশের বিপক্ষে পাকিস্তান যেদিন ১০ উইকেটের হার দেখেছে, সেদিনও ক্রিকেটের সঙ্গেই ছিলেন ইমরান খান। খেলার ভেন্যু ছিল রাওয়ালপিন্ডি। ইমরান খানও ছিলেন সেই একই শহরে। জেল থেকে প্রায়ই রাজনৈতিক বার্তা টুইটারের মাধ্যমে দেন ইমরান খান। সবশেষ টুইটে উঠে এসেছে বাংলাদেশের কাছে হারের প্রসঙ্গটাও।
টুইটারে বেশ লম্বা এক বিবৃতিই দিয়েছেন ইমরান খান। সুবিশাল সেই পোস্টের দ্বিতীয় অংশে ক্রিকেট নিয়ে দুইটি অনুচ্ছেদ লেখা হয়েছে। বাংলাদেশের কাছে হারের প্রসঙ্গটাও এনেছেন সেখানেই। তাতে লেখা হয়েছে, ‘ক্রিকেটই একমাত্র খেলা, যা গোটা জাতি খুব আগ্রহ নিয়ে টিভিতে দেখে। কিন্তু একটা শক্তিশালী অংশের মাধ্যমে সেটাও ধ্বংস করা হয়েছে, যারা নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে অযোগ্য এবং পক্ষপাতদুষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়োগ দিয়েছেন।’
ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী থাকাকালেই পাকিস্তান প্রথমবার কোনো বিশ্বকাপে হারিয়েছিল ভারতকে। সেই প্রসঙ্গটাও টেনে এনেছেন সাবেক এই অধিনায়ক, ‘ইতিহাসে প্রথমবার আমরা বিশ্বকাপের সেরা চার কিংবা টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেরা আটেও উঠতে পারিনি। আর গতকাল (পরশু) বাংলাদেশের বিপক্ষে লজ্জার হার দেখতে হলো। যা আমাদের জন্য নতুন এক তলানি। আড়াই বছর আগেও এই দল ভারতকে ১০ উইকেটে হারিয়েছে। এই আড়াই বছরে এমন কী হলো যে আমরা বাংলাদেশের কাছে ১০ উইকেটে হারলাম? এসব অধঃপতনের দোষ একটি প্রতিষ্ঠানের ওপরই বর্তায়।’
পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) বর্তমান সভাপতি মহসিন নাকভির কড়া সমালোচনাও করেছেন ইমরান খান। দেয়া হয়েছে তার দূর্নীতির ফিরিস্তি ‘দুবাইয়ে স্ত্রীর নামে ৫ মিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি রয়েছে মহসিন নাকভির। তিনি গম ব্যবস্থাপনা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত এবং এই দেশের সবচেয়ে জালিয়াতি নির্বাচনের সঙ্গেও জড়িত। তার যোগ্যতা কী? তার অধীনে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। কেপি ও বেলুচিস্তানে প্রতিদিনই লোক শহীদ হচ্ছে। পাঞ্জাব পুলিশের লক্ষ্য পিটিআই, এই সুযোগে চোর–ডাকাতেরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে, তারা পুলিশ কর্মকর্তাদের অপহরণ করছে, হত্যাও করছে। ২০০৮ সালে দুর্নীতির অভিযোগে মহসিন নাকভির বিরুদ্ধে তদন্ত করেছে ন্যাব (ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরো)।’
উল্লেখ্য, পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের প্রধানের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি মহসিন নাকভি দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পদে রয়েছেন। ইমরান খানের যাবতীয় সমালোচনার কেন্দ্রেও তাই আছেন নাকভি।