পাকিস্তানে সংঘর্ষে ১৯ সৈন্য নিহত

পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে পৃথক সংঘর্ষের ঘটনায় দেশটির সামরিক বাহিনীর অন্তত ১৯ সৈন্য নিহত হয়েছেন। শনিবার দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ওয়াজিরিস্তান ও লোয়ার দির এলাকায় পৃথক সংঘর্ষে সেনাবাহিনীর ওই সদস্যরা নিহত হয়েছেন। পাকিস্তানের সরকারি কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানে তালেবান ক্ষমতা দখলের পর থেকে পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর জঙ্গিদের হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর মাঝেই শনিবার পৃথক সংঘর্ষের ওই ঘটনা ঘটেছে।

আফগানিস্তান সীমান্ত লাগোয়া পাকিস্তানের দক্ষিণ ওয়াজিরিস্তানের দুর্গম বাদার এলাকায় প্রথম সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে। সেখানে সামরিক বাহিনীর গাড়িবহরে অতর্কিত হামলা চালিয়েছে দেশটির জঙ্গিগোষ্ঠী তালেবানের সদস্যরা। 

এক বিবৃতিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী বলেছে, তীব্র গোলাগুলির পর সংঘর্ষে অন্তত ১২ সৈন্য ও ১৩ জন জঙ্গি নিহত হয়েছেন। এই ঘটনায় আরও অন্তত চারজন আহত হয়েছেন বলে নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।

সেনাবাহিনীর গাড়িবহরে এই হামলার দায় স্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছে পাকিস্তানি তালেবান। গোষ্ঠীটি সেনাবাহিনীর সদস্যদের কাছ থেকে অস্ত্র ও ড্রোন লুট করার দাবিও করেছে। ইসলামাবাদ বলছে, নিষিদ্ধঘোষিত এই জঙ্গি গোষ্ঠীটির ঘাঁটি আফগানিস্তানে অবস্থিত।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেছেন, ভোরের দিকে হওয়া এই হামলার পর কয়েক ঘণ্টা ধরে আকাশে উড়োজাহাজ টহল দিয়েছে। এছাড়া হামলায় আহতদের উদ্ধারের পর স্থানীয় বিভিন্ন হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। হামলাকারীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী।

এছাড়া দেশটির উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের লোয়ার দির এলাকায় দ্বিতীয় সংর্ঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সেখানে জঙ্গিদের একটি ঘাঁটি শনাক্ত করার পর অভিযান শুরু করে সামরিক বাহিনী। এ সময় গোলাগুলিতে সাত সৈন্য ও ১০ জঙ্গি নিহত হয়েছেন বলে সেনাবাহিনীর পৃথক এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।

সাধারণত পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে সেনাবাহিনীর গাড়িবহর চলাচলের আগে কারফিউ জারি করা হয়। জঙ্গিদের সক্রিয় অবস্থান থাকায় স্থানীয় প্রশাসন প্রায়ই এই ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করে।

ইসলামাবাদ অভিযোগ করে বলেছে, পাকিস্তানি তালেবানকে আফগান তালেবান প্রশাসন ভারতের সমর্থনে আশ্রয় দিচ্ছে। তবে কাবুল ও নয়াদিল্লি উভয়ই এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। পাকিস্তানি তালেবান গোষ্ঠী আফগানিস্তানের তালেবানের অনুসারী।

২০২১ সালে আফগান তালেবান ক্ষমতায় আসার পর থেকে পাকিস্তানি তালেবান দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে হামলা বৃদ্ধি করেছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনী বলেছে, আফগান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তাদের দায়িত্ব পালন করবে এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালানোর জন্য তাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেবে না বলে প্রত্যাশা করছে ইসলামাবাদ।

সূত্র: রয়টার্স।