আফগানিস্তানে সীমান্তবর্তী খোস্ত ও পাকতিকা প্রদেশে বিমান হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। এই হামলায় আফগানিস্তানে পাঁচ নারী ও তিন শিশু নিহত হয়েছেন। হামলার প্রতিক্রিয়ায় পাকিস্তানেও পাল্টা হামলা চালানোর দাবি করেছে আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন সশস্ত্রগোষ্ঠী তালেবান।
সোমবার আফগান তালেবান বলেছে, খোস্ত ও পাকতিয়ায় জোড়া বিমান হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান। এই হামলার প্রতিশোধে আফগানিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী ভারী অস্ত্র ব্যবহার করে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে।
পাকিস্তানে সাম্প্রতিক জঙ্গি হামলার জন্য কারা দায়ী তা নিয়ে প্রতিবেশি দুই দেশের ব্যাপক বিতর্কের মাঝেই এই হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটেছে। পাকিস্তান বলছে, জঙ্গিরা আফগান ভূখণ্ড থেকে পাকিস্তানে হামলা চালাচ্ছে। কিন্তু আফগানিস্তানের ক্ষমতাসীন তালেবান ইসলামাবাদের এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এক বিবৃতিতে তালেবান প্রশাসনের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ বলেছেন, ‘‘আফগানিস্তান কাউকে আফগান ভূখণ্ড ব্যবহার করে নিরাপত্তা ব্যবস্থার সঙ্গে আপস করার অনুমতি দেয় না।’’ তিনি বলেন, পাকিস্তানের হামলায় পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্ত লাগোয়া খোস্ত ও পাকতিকা প্রদেশে পাঁচ নারী ও তিন শিশু নিহত হয়েছে।
অপর এক বিবৃতিতে তালেবান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, তারা বিমান হামলার জবাবে সীমান্তে পাকিস্তানি সেনাদের লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে। তবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী ও পররাষ্ট্র দপ্তর এই হামলার বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি।এর আগে, শনিবার অজ্ঞাত জঙ্গিরা পাকিস্তানের একটি সামরিক চৌকিতে হামলা চালিয়ে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর অন্তত সাত সদস্যকে হত্যা করে। এই হামলার পরই আফগানিস্তানে হামলা চালিয়েছে পাকিস্তান।
যদিও এই হামলা কেন চালানো হয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে তা পরিষ্কার হওয়া যায়নি। তবে পাকিস্তানের সরকার ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা বলছেন, গত কয়েক মাসে এই ধরনের হামলা বেড়েছে। যার অনেকগুলোর দায় স্বীকার করেছে পাকিস্তানের নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গিগোষ্ঠী তেহরিক-ই-তালেবান (টিটিপি)। আর এসব হামলার বেশিরভাগই আফগানিস্তানের ভূখণ্ড থেকে চালানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে পাকিস্তান।
আফগান তালেবান এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, তাদের ভূখণ্ড জঙ্গিদের ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না। তালেবান মুখপাত্র মুজাহিদ বিবৃতিতে বলেছেন, ‘‘নিয়ন্ত্রণের অভাব, অক্ষমতা এবং নিজের ভূখণ্ডে সমস্যার জন্য আফগানিস্তানকে দোষারোপ করা উচিত নয় পাকিস্তানের। এই ধরনের ঘটনার ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে; যা পাকিস্তানের নিয়ন্ত্রণে থাকবে না।’’
সূত্র: রয়টার্স।