পিএসজির বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় এমবাপের, পেলেন জবাবও

প্যারিসিয়ান সেইন্ট জার্মেই (পিএসজি) ছেড়ে কিলিয়ান এমবাপে আনুষ্ঠানিকভাবে এখন রিয়াল মাদ্রিদের। এরপরই নিজের সাত বছরের পুরোনো ঠিকানা পিএসজি নিয়ে অভিযোগের ঝুলি খুলে বসেছেন। লিওনেল মেসি ও নেইমার জুনিয়রের পর ক্লাবটিতে ‘অসুখী’ ছিলেন বলে জানিয়েছেন এই ফরাসি তারকাও। প্যারিসিয়ানরাও বসে নেই, তারা কড়া জবাব দিয়েছে এমবাপেকে। তাদের মতে– এই তারকা ফরোয়ার্ডের কোনো ক্লাসই নেই!

ইউরোপীয়ন চ্যাম্পিয়নশিপে খেলতে ফ্রান্স জাতীয় দলের ক্যাম্পে যোগ দিয়েছেন এমবাপে। তার আগে আজ (বুধবার) রাতে ফরাসিরা প্রীতি ম্যাচে লুক্সেমবার্গের বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচ খেলবে। সেই ম্যাচ পূর্ববর্তী সংবাদ সম্মেলনে গতকাল হাজির হন ফ্রান্স অধিনায়ক এমবাপে। সেখানে তিনি নাম প্রকাশ না করে কিছু মানুষের জন্য পিএসজিতে অসুখী থাকার কথা জানান। একইসঙ্গে জানান, পুরো সময়ই অসুখী ছিলেন না এমবাপে।

তার মতে, ‘পিএসজিতে আমি অসুখী ছিলাম না। অসুখী ছিলাম বললে যারা আমার পক্ষে ছিলেন তাদের মুখে চপেটাঘাত করা হবে—আমি সব সময়ই সুখী ছিলাম। কিন্তু নির্দিষ্ট কিছু বিষয় আমাকে অসুখী করেছে। তবে আমার মতো খেলোয়াড় তা প্রকাশ করতে পারে না, কারণ, আমি নেতাও, তাই যতটা সম্ভব ইতিবাচক থাকার চেষ্টা করেছি। কোচ, খেলোয়াড় ও ক্লাবের লোকজন আমাকে সমর্থন দিয়েছেন, তাই আমি অসুখী ছিলাম এটা বললে খারাপ দেখায়। কিন্তু কিছু বিষয় এবং কিছু মানুষ আমাকে অসুখী করেছে।’

কয়েক মৌসুম ধরেই পিএসজি ছাড়ার গুঞ্জন ছিল এমবাপের। যা গত মৌসুমে আরও জোরালো হয়ে ওঠে। ওই সময় পিএসজির মালিক নাসের আল খেলাইফির সঙ্গে ফরাসি তারকার ঝামেলায় জড়ানোর খবরও বেরোয়। যা নিয়ে এমবাপে বলেন, ‘ক্লাব আমাকে জানিয়েছিল যে আমি খেলার সুযোগ পাব না। তারা কথাটা উগ্রভাবে আমার মুখের ওপর বলেছে। লুইস এনরিকে (পিএসজি কোচ) এবং লুইস কাম্পোস (স্পোর্টস ডিরেক্টর) আমাকে বাঁচিয়েছেন। তারা না থাকলে আমি আবারও মাঠে নামতে পারতাম না

এবারের মৌসুমে পিএসজির হয়ে ৪৮ ম্যাচে ৪৪ গোল করা এই ফরোয়ার্ড শেষদিকে প্রায় ম্যাচে খেলার সুযোগ পাননি। তা নিয়ে কিছুটা আক্ষেপও ঝরেছে তার কণ্ঠে, ‘যারা খেলার সুযোগ পায় তারা খুশি থাকে, কিন্তু আমি যে পারফর্ম করেছি তা নিয়েও কারও অজুহাত থাকার কথা নয়। এটি আমার খেলার মান অনুযায়ী পর্যাপ্ত নয়। এটা ঠিক যে খেলতে পারা এবং ট্রফি জেতাই আমার জন্য গৌরবের, কিন্তু পরের মৌসুমটা এবারের মতো কাটাতে চাইব না (সন্তুষ্ট থাকব না)।’ একইসঙ্গে রিয়ালে যোগ দিতে পেরে ‘আমি মুক্ত’ বলেও উল্লেখ করেন এমবাপে।

এতসব অভিযোগ নিয়ে পিএসজির মালিক, কোচ কিংবা অফিসিয়াল কেউ এখন পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করেননি। তবে ক্লাবটির ঘনিষ্ঠ এক সূত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, এমন মন্তব্যের পর পিএসজি মনে করে ‘এমবাপের কোনো মর্যাদাবোধ নেই। দল নিয়ে কোনো ব্যাপারেই নাসের আল খেলাইফি নাক গলান না। লুইস এনরিকে নিজেও এ কথা বলেছেন। কিন্তু তারপরও এমবাপে কিছু বললেই লোকজন সেটি সত্য ভেবে ছাপায়।’ উপযুক্ত সময়ে সব সত্য সামনে আসবে বলেও জানান ওই সূত্র। মর্যাদাবোধ ও পেশাদারিত্ব বজায় রাখা এবং পিএসজি, প্যারিস ও ফ্রান্সের সমর্থকদের কথা মাথায় রেখে এখন তারা মুখ না খোলার কথাও জানান।

উল্লেখ্য, আগামী ১ জুলাই পিএসজির সঙ্গে চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে এমবাপের। এরপর ফ্রি ট্রান্সফারে রিয়ালে যোগ দেবেন এই ফরাসি ফরোয়ার্ড। যদিও ইতোমধ্যে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়েছে রিয়ালও। পাঁচ বছরের চুক্তিতে তিনি সদ্য চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা ক্লাবটিতে নাম লিখিয়েছেন। যেখানে বছরে দেড় কোটি থেকে ২ কোটি ইউরোর মধ্যে বেতন পাবেন বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ান। সংবাদমাধ্যম ‘এএস’ জানিয়েছে, এমবাপে রিয়ালে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া খেলোয়াড় হবেন। তাদের মতে, বছরে দেড় কোটি ইউরো পাবেন তিনি।