পিঙ্গলহাটির হাতেম আলী গংদের বিরুদ্ধে ভূমি দস্যুতার অভিযোগ

মোহাম্মদ আলী : অন্যায় ভাবে অন্যের জমি ভোগদখল, বিক্রিত জমি পূণরায় দখল চেষ্টা, গায়ের জোরে গ্রামের সরজ সরল নিরীহ মানুষকে প্রাণনাশের হুমকি, ইত্যাদি কারণে জামালপুর সদর উপজেলার শরিফপুর ইউনিয়নের পিঙ্গলহাটি গ্রামের মরহুম সায়েজ উদ্দিনের পুত্র হাতেম আলী গংদের বিরুদ্ধে ভূমি দস্যুতার অভিযোগ উঠেছে।
সম্প্রতি, পিঙ্গলহাটি, বেলটিয়া ও আশেপাশের গ্রামের ভুক্তভোগী কয়েকটি পরিবার হাতেম আলী তার ভাই হাফেজ, ছেলে মোতালেব গংদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ এনে জামালপুর আদালতে মামলা করেছেন। মামলা নং ৩০/২০২৫, ১৮৫৯ ( ১) /২০২৫, ১৬৬৩, ৬৪৩/২৩ ও ২২/২০১৬। বাদী যথাক্রমে কফিল উদ্দিন, শাহজামাল, আমির ও আজিজ গং। বিবাদীরা হচ্ছেন, হাতেম আলী, হাফেজ, চানু, মোতালেব ও ফারুজ্জামান, মোঃ আনোয়ার, আনিছুর ও আলালসহ গংরা।
বাদী পক্ষের এমন অভিযোগের ভিত্তিতে গত রোববার, ঘটনাস্থল সরেজমিন তদন্ত করেছে পুলিশ।
এদিন পিঙ্গলহাটির পাশের গ্রাম বেলটিয়াবাসী জানান, সেই গ্রামের ভাষা সংগ্রামী, মরহুম কয়েস উদ্দিনের ছোট ভাই, কফিল উদ্দিন, ১৯৮৭ সালে বেলটিয়া মৌজায় বিআরএস রেকর্ডীয় মালিক, রোকেয়া বেওয়া, খালেদ হাসান, ফরহাদ আলম এর নিকট থেকে ১৫৫৪৭ নং সাব কবলা দলিলমূলে প্রায় ২০ শতাংশ জমি খরিদ করে ভোগ দখল করে আসছেন। কয়েকমাস আগে হঠাৎ করে হাতেম আলী, হাফেজ ও মোতালেব গংরা সেই জমিতে খুঁটি গেরে অপদখলের চেষ্টা করেছেন। এর আগে কফিল উদ্দিনের পিঙ্গলহাটি মৌজায় ১৭০২৯ নং সাব কবলা দলিলমূলে কেনা ১১ শতাংশ জমি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে জোরপূর্বক দখল করে নিয়েছে হাতেমরা।
কফিল উদ্দিন ছাড়াও বেলটিয়া গ্রামের আমির আলীর ভোগদখলীয় আবাদি জমি হাতেম ও তার ছেলেরা অন্যায় ভাবে বারে বারে দখলের চেষ্টা করেছে।
এব্যাপারে বয়োবৃদ্ধ কফিল উদ্দিন ও আমীর আলী ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তারা বলেন, আমরা শান্তিপ্রিয় নিরীহ মানুষ। আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই কোনো সংঘাত সংঘর্ষে না গিয়ে আইনের কাছে ন্যায়বিচার প্রার্থণা করেছি।
এলাকাবাসীর জানান, কফিল উদ্দিন ও আমীর আলী ছাড়াও ফজল, জুলফিকার, সুজা মহুরি ও আরও কয়েকটি ভুক্তভোগী পরিবার হাতেম আলী গংদের দ্বারা নির্যাতিত নিপিড়ীত এবং ভূমিদস্যুতার শিকার হয়েছেন।
জামালপুর মেডিক্যাল কলেজ এর সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের ডাক্তার হারুর অর রশিদ বলেন, আমি আমার চাচার বৈধ জমি সংক্রান্ত বিষয়ে ন্যায়সঙ্গত সহযোগিতা করায় হাতেম আলীদের লোকজনরা আমাকে মোবাইল ফোনে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে। যার স্বপক্ষে আদালতে মামলা চলছে। আসামীর বিরুদ্ধে গ্রেফাতারি পরোয়ানা জারি করেছে আদালত।
আরেক ভুক্তভোগী পিঙ্গলহাটি গ্রামের জুলফিকার জানান, হাফেজ আলী ও তার ছেলে ফারুকুজ্জামান অন্যায় ভাবে আমাদের বঞ্চিত করে আমাদের বাড়ির আমার ফুফুর অংশ গোপনে লিখে নিয়েছে।
পিঙ্গলহাটি গ্রামের সুজা মহুরি বলেন, আমার ছেলেকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে হাতেম আলীর নাতি, মোতালেব এর ছেলে মিরাজুলরা ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে। আমার ছেলেটার ভবিষ্যতে নষ্ট করে দিয়েছে। আমাকে নিঃস্ব করে দিয়েছে।
এব্যাপারে অভিযুক্ত হাতেম আলী নিজের বিরুদ্ধে সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কারো জমি দখল করতে যায়নি। আমার জমিতেই আমি খুঁটি গেরেছি।
গ্রামের লোকজনরা আপনাকে ভূমি দস্যু বলে কেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, তারা প্রতিহিংসাবশত বলে।