পুঁজিবাজারে অস্থিরতার জন্য রেগুলেটরদের দায়ী করলেন অর্থ উপদেষ্টা

অন্তবর্তীকালীন সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, পুঁজিবাজার অস্থিরতার পেছনে বিনিয়োগকারীদের দায়ী করছি না। এর পেছনে প্লেয়ার ও রেগুলেটরের অনেক দোষ আছে। এ বিষয়টা প্রচার করা দরকার। আমরা এগুলো পরিবর্তন ও সংস্কারের চেষ্টা করছি। কারণ দাতা সংস্থাগুলো আমাদের কাছে নানা প্রশ্ন করেন, তারা বোঝাতে চান আগেই কম ছিল ইত্যাদি। এ নিয়ে আমরা তাদের বোঝাচ্ছি, সঠিকটা উপস্থাপন করছি।আজ (শনিবার) সকালে সিরডাপ ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে বাংলাদেশের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের তথ্যভিত্তিক গবেষণাগ্রন্থ ব্যাংকিং অ্যালমানাকের ৬ষ্ঠ সংস্করণের মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ব্যাংকিং অ্যালমানাকের বোর্ড অব এডিটরস-এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. হোসেন জিল্লুর রহমান। এতে অর্থসচিব ড. মো. খায়রুজ্জামান মজুমদার, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর নুরুন নাহার এবং বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকসের (বিএবি) চেয়ারম্যান ও ঢাকা ব্যাংকের চেয়ারম্যান আবদুল হাই সরকার বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন গ্রন্থটির এক্সিকিউটিভ এডিটর সৈয়দ জিয়াউদ্দিন আহমেদ। বক্তব্য রাখেন ব্যাংকিং অ্যালমানাকের বোর্ড অব এডিটরস-এর সম্মানিত সদস্য অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স বাংলাদেশের (এবিবি) সাবেক চেয়ারম্যান এবং গ্লোবাল ইসলামি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নুরুল আমিন। দেশের ব্যাংকিং সেবা-বৈচিত্র্যের তথ্য-উপাত্ত জনগণের কাছে পৌঁছে দিতে ব্যাংকিং অ্যালমানাকের প্রয়োজনীয়তা ও তাৎপর্য বিষয়ে বিশেষ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অ্যালমানাকের প্রকল্প পরিচালক আবদার রহমান।

অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, বিবিএসকে বলা হয়েছে তথ্য যা আছে তাই প্রকাশ যেন হয়। এখানে কারচুপির কোনো ব্যাপার নেই। আমাদের ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতের মতো পুঁজিবাজারের অবস্থাও একই রকমের। পুঁজিবাজারের শেয়ার প্রাইস কমে যাচ্ছে বলেই ‘চেয়ারম্যানকে রিমুভ করো’ বলে মিছিল হচ্ছে। আপনারা জেড ক্যাটাগরির শেয়ার কিনছেন, যার কোনো অস্তিত্ব নেই। অথচ এ শেয়ার মহাআনন্দে কিনছেন। ন্যূনতম কোনো মূল্য নেই, এগুলো কয়েক দিন পরই ওয়েস্ট পেপার হিসেবে ব্যবহার হবে। এজন্য একটু কষ্ট করতে হবে। আমি বিনিয়োগকারীদের দায়ী করছি না। পুঁজিবাজারের প্লেয়ার ও রেগুলেটরের অনেক দোষ আছে। আমি মনে করি এটা প্রচার করা দরকার।

তিনি আরও বলেন, সঠিক তথ্য-উপাত্ত ছাড়া কোনো কিছু মূল্যায়ন হয় না। বিগত ১৫ বছরের তথ্য বিভ্রাট নিয়ে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে নানা প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়। মূল্যস্ফীতি, জিডিপি নিয়ে তথ্য বিভ্রাটের পেছনে অনিচ্ছাকৃত কিছুটা ভুল রয়েছে, আবার নীতি নির্ধারকরাও তথ্য লুকানোর চেষ্টা করেন।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, আমরা কোনো পাওয়ার দেখাতে আসিনি, একটা দায়িত্ব নিয়ে এসেছি। বিগত ১৫ বছরের তথ্য নিয়ে নানা বিভ্রাট রয়েছে। তথ্য লুকানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আমরা এগুলো পরিবর্তন ও সংস্কারের চেষ্টা করছি। কারণ দাতা সংস্থাগুলো আমাদের কাছে নানা প্রশ্ন করেন, তারা বোঝাতে চান আগেই কম ছিল ইত্যাদি। এ নিয়ে আমরা তাদের বোঝাচ্ছি আগের তথ্য লুকানো ছিল, আমরা সঠিকটা উপস্থাপন করছি। 

তিনি আরও বলেন, ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইনডো করার চেষ্টা করছি। যাতে করে ব্যবসায়ী এক স্থান থেকে সব তথ্য পাবে। তথ্যের জন্য ব্যবসায়ীদের ১০ জায়গায় দৌড়াতে হবে না। আরো সুসংহতভাবে তথ্য যদি ম্যানেজমেন্ট করতে না পারি তাহলে সামনে আরো সমস্যা তৈরি হবে।  

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অর্থ সচিব ড. খায়রুজ্জামান মজুমদার বলেন, আর্থিকখাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে উন্নয়ন সহযোগীদের সহযোগিতা চাই। যাতে বিশৃঙ্খলা না হয়। আমরা ইত্যোমধ্যে বিভিন্ন বোর্ডে পরিবর্তন এনেছি।