দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতে সমবর্তী রাষ্ট্রদূত হিসেবে পরিচয়পত্র পেশ করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত।
রাষ্ট্রদূত পেরুর রাজধানী লিমায় দেশটির রাষ্ট্রপতি দিনা বলুয়ার্তের কার্যালয় গভর্মেন্ট প্যালেসে গত ৮ ফেব্রুয়ারি তার পরিচয়পত্র পেশ করেন। জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন নিউইয়র্ক স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানায়।
স্থায়ী মিশন জানায়, পরিচয়পত্র পেশ করার সময় রাষ্ট্রদূত মুহিত বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবু্দ্দিন ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে পেরুর রাষ্ট্রপতি ও জনগণকে শুভেচ্ছা জানান।
রাষ্ট্রদূত মুহিত বলেন, আমাদের অভিন্ন মূল্যবোধ এবং পারস্পরিক সুবিধার ভিত্তিতে বাংলাদেশ ও পেরুর মধ্যে বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করার জন্য আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করব।
বাংলাদেশে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনের কারণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নতুন মন্ত্রিসভা গঠনের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত মুহিত বলেন, দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সম্প্রসারণের জন্য এটি উপযুক্ত মুহূর্ত। তিনি আরও উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ ও পেরুর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর করার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে, বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্য ও টেকসই উন্নয়নের ক্ষেত্রে।
তিনি বলেন, এ ছাড়া জাতিসংঘ ও বহুপাক্ষিক প্লাটফর্মের মাধ্যমে শান্তিরক্ষা, শান্তি বিনির্মাণ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং সামাজিক ন্যায়বিচারের ক্ষেত্রে একসঙ্গে কাজ করার সুযোগ রয়েছে।
পেরুর রাষ্ট্রপতি রাষ্ট্রদূত মুহিতের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করেন এবং তার মেয়াদে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও সম্প্রসারিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
পরিচয়পত্র উপস্থাপনের পর রাষ্ট্রদূত মুহিত পেরুর পররাষ্ট্র মন্ত্রী জাভিয়ের গঞ্জালেজ-ওলেচিয়া ফ্রাঙ্কো, বাণিজ্য ও পর্যটন মন্ত্রী এবং সশস্ত্র বাহিনীর জয়েন্ট কমান্ডের প্রধান জেনারেলের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।
রাষ্ট্রদূত মুহিত এশিয়া ও ওশেনিয়া দপ্তরের মহাপরিচালক এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গেও দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করেন। এই বৈঠকে উভয়পক্ষ ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়ানোর পাশাপাশি পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির সম্ভাব্য উপায় সম্পর্কে মতবিনিময় করেন।
স্থায়ী মিশন জানায়, বাংলাদেশ সরকার সম্প্রতি পেরুর সশস্ত্র বাহিনীকে একটি রিমোটলি ওপারেটেড ভেইকল (অারওভি) প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে, যা মিনাস্কাতে পেরুর শান্তিরক্ষীরা ব্যবহার করতে পারবে। আগামী এপ্রিলের কোনো একসময় ঢাকায় এ হস্তান্তর অনুষ্ঠান হবে বলে আশা করা যায়।
পেরু কর্তৃপক্ষ দেশীয় ও বৈশ্বিক পর্যায়ে বাংলাদেশের উন্নয়ন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। রাষ্ট্রদূত মুহিত উল্লেখ করেন, নিয়মিত দ্বিপাক্ষিক পরামর্শ, ব্যবসায়িক ও সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং জনগণের মধ্যে যোগাযোগের মাধ্যমে দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বাড়ানো যেতে পারে। দুই পক্ষই বাংলাদেশ ও পেরুর মধ্যে নিয়মিত রাজনৈতিক পরামর্শের জন্য দ্রুততার সঙ্গে একটি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেন। যেমন, বাংলাদেশ ও পেরুর মধ্যে ফরেন অফিস কনসালটেশন, যা দুই বন্ধুপ্রতিম দেশের মধ্যে সামগ্রিক দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার অগ্রগতির জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হতে পারে। রাষ্ট্রদূত মুহিত দুই দেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের সফর বিনিময়ের প্রস্তাব দেন। পেরুর রাষ্ট্রপতি ও গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রীদের বাংলাদেশ সফরের জন্য আমন্ত্রণ জানান।