রৌমারী সংবাদদাত : কুড়িগ্রামের চিলমারী উপজেলার খেরুয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মশিহুর রহমানের বিরুদ্ধে সীমাহীন অনিয়ম দুর্নীতি, অনুপস্থিতি, সেচ্ছাচারিতা, অসাদাচারন, যৌন হয়রানি ও অর্থ আত্মসাতের প্রতিবাদে এবং জরুরী অপসারণের দাবীতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করা হয়। গত ২৭ ফেব্রুয়ারী মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় খেরুয়ারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক,এলাকার গণমান্য ব্যাক্তিবর্গগণ এ মানববন্ধন করেছেন। এর আগেও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগে জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, জেলা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার বরাবরে অভিযোগ দেয়া হয়েছে। তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। প্রধান শিক্ষকের এমন অনিয়মে শিক্ষার পরিবেশ বেহাল। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, সচেতন নাগরিক আনোয়ার হোসেন, সমাজ সেবক জয়নাল আবেদীন, বীর মুক্তিযোদ্ধা জামাল উদ্দিন, বীর মুক্তিযোদ্ধা জবেদ আলী, অভিভাবক পলাশ আলী, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ফারুক আহমেদ, গণ্যমান্য ব্যক্তি ওমর আলী, সহকারি শিক্ষক আলমগীর, জাহাঙ্গীর ও আবু বক্কর প্রমুখ।মানববন্ধনে বক্তাগণ বলেন, প্রধান শিক্ষক নিজের ইচ্ছামত স্কুল পরিচালনা করেন, শিক্ষক, শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। প্রতিষ্ঠানে যোগদানের পর থেকে কখনোই ম্যানেজিং কমিটির সভা ডাকা হয় না, প্রাক-প্রাথমিকের বরাদ্দ অর্থ আত্মসাত, স্লিপের টাকা আত্মসাত, ক্ষুদ্র মেরামত, রুটিন মেইনটেইন্স ও অন্যান্য বরাদ্দকৃত অর্থ আত্মসাত, স্কুলের আসবাব পত্র ও পুরাতন ৪ রুম বিশিষ্ট ঘরের টিন, লোহার বাতি ও রুয়াসহ বিভিন্ন মালামাল আত্মসাত, স্কুলের সোলার প্যানেল, ব্যাটারি, ২টা মটর ও ১টি পানির টেংকি রাতারাতি উধাও, অর্থের বিনিময়ে ভূয়া শিক্ষার্থীদের কাছে সমাপনী সনদ বিক্রি এবং অবৈধভাবে টাকা দাবি, জাতীয় দিবসে প্রতিষ্ঠানে অনুপস্থিত থাকা, শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি প্রদানে অনিয়ম, সপ্তাহে বা পনের দিনে একদিন স্কুলে এসে শিক্ষক হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর প্রদান, রুটিনের নির্ধারিত শ্রেণিপাঠদানে অংশগ্রহন না করাসহ দুর্নীতি অনিয়ম,স্বেচ্ছাচারিতা, অভিভাবকদের সাথে অসদাচারন ও ইতিপুর্বে স্কুলের শিক্ষিকা ও ছাত্রীদের সাথে যৌন হয়রানির মত ১১ টি পয়েন্ট তুলে ধরে অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। বীর মুক্তিযোদ্ধা জামাল উদ্দিন, জবেদ আলী ও স্কুলের সহকারি শিক্ষকগণ বলেন, প্রধান শিক্ষকের এহেন অনিয়ম দুর্নীতির অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে দ্রুত অপসারণের ব্যবস্থা গ্রহণের মাধ্যমে অত্র প্রতিষ্ঠানকে রক্ষার্থে এবং ধ্বংসের হাত থেকে রেহাই ও শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবী উর্দ্ধোতন কর্তৃপক্ষের নিকট। প্রধান শিক্ষক মশিহুর রহমানের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি জানান, আমার স্ত্রীর অসুস্থতার কারনে আপনার সাথে কথা বলতে পারলাম না। পরে কথা হবে। বিদ্যালয়ের সভাপতি মোনছুর আহমেদ অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বাক্ষর জাল করে সরকারি বরাদ্দের টাকা উত্তোলন করেন প্রধান শিক্ষক। অভিযোগ দিলেও কর্তৃপক্ষ কোনও ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি। এবিষয়ে চিলমারী উপজেলা সহকারি প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাকির হোসেনের সাথে মোবাইল ফোনে কথা হলে তিনি জানান, এমন কোন বিষয়ের উপর ঘটনার অভিযোগ পেলে তদন্ত পুর্বক ব্যবস্থা নেয়া হবে। চিলমারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবু সালেহের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলার চেষ্টা করলে তাকে পাওয়া যায়নি। এ প্রসঙ্গে মুঠোফোনে জানতে চাইলে চিলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. মিনহাজুল ইসলাম বলেন, মানববন্ধনের বিষয় শুনেছি, এঘটনায় তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এখনও কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
Related Posts
ঠাকুরগাঁওয়ে ২৩ কোটি টাকার ‘কালো সোনা’ উৎপাদনের সম্ভাবনা
- AJ Desk
- March 4, 2024
ঠাকুরগাঁওয়ে ‘কালো সোনা’ নামে পরিচিত পেঁয়াজ বীজ চাষ করে লাভবান হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা। গত […]
বিদেশি বউ নিয়ে হেলিকপ্টারে বাড়ি ফিরলেন প্রবাসী, এলাকাবাসীর ভিড়
- AJ Desk
- May 7, 2024
বিদেশি বউ নিয়ে হেলিকপ্টারে ফিরবেন পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার সিঙ্গাপুর প্রবাসী প্রকৌশলী শহিদুল ইসলাম শহিদ। এলাকায় […]
যেকোনো অপরাধ রোধে সাংবাদিকদের সহযোগিতা চাইলেন রংপুরের নবাগত এসপি
- AJ Desk
- July 9, 2024
জঙ্গিবাদ, অনলাইন জুয়া, কিশোর গ্যাংসহ যেকোনো ধরনের অপরাধের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করার […]