মোহাম্মদ আলী : বাবা মরহুম মফিজুল হক তালুকদার ছিলেন, বকশিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। বড় ভাই আব্দুর রউফ তালুকদার বকশিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চার বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। প্রথম বারের মতো জনপ্রতিনিধিত্বের প্রতিদ্বন্দ্বীয় অংশ নিতে যাচ্ছেন তালুকদার পরিবারের নতুন সদস্য, বকশিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, ইসমাইল হোসেন বাবুল তালুকদার।
ইতোমধ্যে তিনি আসন্ন বকশিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন।
কিন্তু, তিনি কি পারবেন বাবা ভাইয়ের মতো জনমনে জায়গা করে নিতে? তাঁদের যোগ্যতায় নিজেকে নিয়ে যেতে? এমন প্রশ্ন ছিল বকশিগঞ্জ পৌরবাসীর কাছে। এব্যাপারে পক্ষে বিপক্ষে মত দিয়েছেন অনেকে।
কেউ বলেছেন, বকশিগঞ্জের জনপ্রতিনিধিত্বে তালুকদাররা হচ্ছেন পরিক্ষিত পরিবার। চোখ বন্ধ করে তাদের উপর ভরসা করা যায়। এ পর্যন্ত তাদের দ্বারা কারো উপকার বৈ ক্ষতি হয়নি। উপরন্তু কেউ তাদের ক্ষতি করলেও সামর্থ্য থাকা সত্বেও তারা প্রতিশোধ নেননি। বরং জনগণের জন্য তারা জায়গা জমি ঘর বাড়ি স্ববর্স্ব বিলিয়ে দিয়েছেন। তাদের কাছে হাত পেতে খালি ফিরেছেন এমন ঘটনা কমই ঘটেছে। বিপদে আপদে ডেকে পাশে পাননি এমন ঘটনা নেই বল্লেই চলে। তারা বকশিগঞ্জবাসীর পরম বন্ধু। তাদের সাথে কারো তুলনা চলে না। অতএব, নতুন হউক বা পুরাতন তাতে কিছু আসে যায় না। তারা একই বৃন্তের ফুল। একে অন্যের প্রতিচ্ছবি ও পরিপূরক।
কেউ বলেছেন ব্যাপারটা সহজ হবে না। কারণ বাবুল, তালুকদার পরিবারের হলেও তার আচার আচরণ ভিন্ন। তিনি একটি রাজনৈতিক দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত থাকলেও জনসম্পৃক্তায় বাবা ভাইয়ের সমকক্ষতা অর্জন করতে পারেননি। তাছাড়া তার বড় ভাই এখনও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। শোনা যাচ্ছে আগামী নির্বাচনেও তিনি অংশগ্রহণ করবেন। এমতাবস্থায় একটি উপজেলার ২টি গুরুত্বপূর্ণ পদ জনগণ এক পরিবারের হাতে দিতে চাইবেন না। এছাড়া প্রতিদ্বন্দ্বীরা তো আছেনই। তারাও ছেড়ে দিয়ে বসে থাকবেন না। কারণ জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে তারাও রয়েছেন শক্তিশালী অবস্থানে। এসবের মধ্যেও যদি বাবুল তালুকদারকে জনপ্রতিনিধি হতে হয় তবে পথটা ততটা মসৃণ হবে না। তাকে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হবে। নিজেকে ঘষে মেজে ঝং ছাড়াতে হবে।
আবার কেউ কেউ মনে করছেন, তালুকদারদের পক্ষে অসম্ভব কিছু নয়। তাদের নির্বাচন ইতিহাসে কোনো হার নেই। তাদেন রয়েছে যুগ যুগের নির্বাচনী অভিজ্ঞতা। তারা শুধু জনপ্রতিনিধি হন না, জনপ্রতিনিধি তৈরীও করেন। বকশিগঞ্জের অনেকের জনপ্রতিনিধি হওয়ার পিছনে তালুকদারদের অবদান রয়েছে। তারা জানেন ভোট কিভাবে সংগ্রহ করতে হয়। তাদের প্রার্থণার কৌশলে মুগ্ধ হয়ে ভোটের সময়ে ভোটাররা তাদেরকে ভোট দিতে উদগ্রীব হয়ে থাকেন। আর এক পরিবারের দুই ভাই জনপ্রতিনিধি হওয়া এটা কোনো ব্যাপার না। বেশি দূরে যেতে হবে না। পাশের উপজেলা দেওয়ানগঞ্জেই এর নজির রয়েছে। সেখানে এক ভাই ইউপি চেয়ারম্যান আরেক ভাই উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান। সুতরাং জনপ্রতিনিধিত্বে জনপ্রিয়তা ও জনসমর্থনই বড় কথা। মানুষ যাকে ভালো বাসবেন, যোগ্য মনে করবেন তাকেই তাদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে বেছে নিবেন। এটাই নির্বাচন এটাই নিয়ম।
আগামী ৯ মার্চ বকশিগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সকল মতামতের অবসান ঘটবে বলে মনে করছেন, পৌরবাসী।