মোহাম্মদ আলী : প্রধান শিক্ষক বড় ভাইয়ের বিরুদ্ধে প্রতারণা, অর্থ আত্মসাৎ, বসতভিটা জবরদখল ও জুলুম নির্যাতনের অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ছোট ভাই।
রোববার, বকশিগঞ্জ উপজেলার সারমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, মোঃ রওশন আলম হাফিজুল হক (৫০) এর বিরুদ্ধে নিজ বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তার ছোট ভাই মোঃ আবুল হাশেম (৪৫)। সূর্যনগর গ্রামের মরহুম মোহাম্মদ আলীর ছোট ছেলে মোঃ আবুল হাশেম বড় ভাই হাবিজুল হকের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগে এনে জানান, তিনি পেশায় একজন দিনমজুর। বর্তমানে শারিরীক ভাবে অসুস্থ ও অক্ষম। তার বড় ছেলেটিও স্বাভাবিক নয়। অগত্যা ১২ বছরের ছোট ছেলের কাঁধে সংসারের বোঝা। কিন্তু, একদিন তার অবস্থা এমন ছিল না। তিনি ছিলেন উপার্যনক্ষম। টাঙ্গারি পাড়ায় ৮ শতাংশ জমির উপর পিড়া পাকা করা একটি ঘর ছিল তার। ছিল পাকা পায়খানা। সেই বাড়িতে স্বপরিবারে ভালোই ছিলেন তারা। ২০১৭ সালে তার বড় ভাই হাফিজুলের পরামর্শে প্রতিবেশীর কাছে সেই বাড়ি বিক্রি করে দেন আবুল হাশেম । বাড়ির বিক্রির সমূদয় অর্থ তিনি (আট লাখ টাকা) বড় ভাইয়ের হাতে তুলে দেন। শর্ত থাকে যে, সূর্যনগরে বড় ভাইয়ের নামিয় ৩৩ শতাংশ জমি তিনি তার নামে রেজিস্ট্রি করে দিবেন। তার দেওয়া কথামতো ওই বছরেই বড় ভাইয়ের জমিতে বাড়ি করে স্বপরিবারে বসবাস করতে থাকেন হাশেম । কিন্তু, মাস বছর গড়িয়ে গেলেও বড় ভাই জমি রেজিস্ট্রি করে দেন না। নানা টালবাহানা করতে থাকেন। এর ২ বছরের মাথায় ২০১৯ সালে কিছুদিনের জন্য আশ্রয় চেয়ে ছোট ভাইয়ের বাড়িতে উঠেন বড় ভাই । বলেন যে, আমি জমি কিনে বাড়ি করলে তোর ঘর ছেড়ে দিব জমিও লিখে দিব। তিনিও বড় ভাইয়ের প্রতি বিশ্বাস ও শ্রদ্ধায় তাকে ঘরে থাকতে দেন। কিন্তু, তিনি তার সরলতা ও অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে ছোট ভাইয়ের জমি ও টাকা গ্রাস করতে মনে মনে ষড়যন্ত্র আঁটতে থাকেন। তারই ধারাবাহিকতায় তিনি ইতোমধ্যে ছোট ভাই ও তার পরিবারের বিরুদ্ধে ৭টি মামলা করেছেন। তার করা মিথ্যা মামলায় ছোট ভাই হাশেমসহ তার স্ত্রী ছেলে ও ছেলের বউ একাধিক বার হাজত বাস করেছে। এখন তিনি হাশেমের পরিবারকে বাড়ি থেকে বের করে দিতে উচ্ছেদ মামলা করেছেন হাফিজুল। এব্যাপারে ভুক্তভোগী আবুল হাশেম বলেন, তিনি শুধু আমার পরিবারের উপর অত্যাচার করেননি। আমাদের জন্মদাত্রী মাকেও তিনি ঘর থেকে বের করে দিয়েছেন। যিনি এখন অন্যের বাড়িতে ভিক্ষা করে খান। এদিকে নিজের প্রতি আনিত সব অভিযোগ অস্বীকার করে সারমারা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ হাফিজুল হক বলেন, আমার ছোট ভাই মূর্খ। অশিক্ষিত। মিথ্যা বাদী। সে আমার নামে মিথ্যা বলেছে। এদিকে এলাকাবাসীর পক্ষে, বগারচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি, মোঃ আতিকুল ইসলাম মোগল রাজা বলেন, আবুল হাশেম আমার প্রতিবেশী। আমি দেখেছি সে বাড়ি করে বসবাস শুরু করার অনেক পর তার বড় ভাই হাফিজুল তার বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছে। তিনি যেমন জমি লিখে দেন নাই এটা সত্য, তেমনি ছোট ভাইকে জমি লিখে দিবেন বলে টাকা নিয়েছেন এটাও সত্য। ইউনিয়ন যুব লীগের আরেক নেতা, আবু রায়হান বলেন, ছোট ভাই আবুল হাশেমের অজ্ঞতা ও সরলতাকে পুঁজি করে বড় ভাই হাফিজুল বহু অত্যাচার নির্যাতন করেছে। এখন তার একমাত্র সম্বল বসতভিটাটুকু কেড়ে নিতে নানা পায়তারা করছে। এমতাবস্থায়, ভুক্তভোগী অসহায় হতদরিদ্র পরিবারটি দাবি, তারা অসহায়। তাদের যাওয়ার কোনো জায়গায় নাই। তাই, তাদের খরিদকৃত বসতভিটায় যেন তারা বসবাস করতে পারেন সেব্যাপারে মিডিয়ার মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি ও এলাকাবাসীর সহযোগিতা কামনা করেছেন।