বকশীগঞ্জ সংবাদদাতা : জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের কম্পিউটার বিষয়ে দক্ষ করে গড়ে তুলতে ১৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ‘শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব’ স্থাপন করেছিল সরকার। আইসিটি শিক্ষার প্রসারে এই উদ্যোগের মাধ্যমে প্রত্যেক ল্যাবে লাখ লাখ টাকার আধুনিক সরঞ্জাম দেওয়া হয়। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেছে, উপজেলার অধিকাংশ ল্যাব দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। তদারকির অভাবে ল্যাপটপসহ নানা যন্ত্রপাতি অযতেœ অবহেলায় নষ্ট হয়ে গেছে। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব স্থাপনের আওতায় বকশীগঞ্জ উপজেলার ১৫ টি বিদ্যালয়ের মধ্যে প্রতিটি বিদ্যালয়ে ১৭টি করে ল্যাপটপ, একটি করে প্রিন্টার ও স্ক্যানার, একটি স্মার্ট এলইডি টেলিভিশন, ওয়েব ক্যামেরা, রাউটার, নেটওয়ার্ক সুইচ, ইন্টারনেট কানেকশন, একটি ইনস্ট্রাক্টরের টেবিল-চেয়ার এবং শিক্ষার্থীদের জন্য ১৬টি টেবিল ও ৩২টি চেয়ার। এসব ল্যাবের সৌন্দর্য ও কার্যকারিতা বাড়াতে প্রতিটি ল্যাবের রেনোভেশন ও ইন্টেরিয়র ডিজাইনের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয় আরও ৬৫ হাজার টাকা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে সাধুরপাড়া নজরুল ইসলাম উচ্চ বিদ্যালয়, মেরুরচর হাছেন আলী উচ্চ বিদ্যালয়, চন্দ্রবাজ রশিদা বেগম স্কুল অ্যান্ড কলেজ, সারমারা নাছির উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয় এবং রাহিলা কাদির স্কুল অ্যান্ড কলেজের কম্পিউটার ল্যাবগুলো অযতেœ অবহেলায় অকেজো অবস্থানয় পড়ে রয়েছে। ওইসব প্রতিষ্ঠানের ল্যাবের কক্ষ দিনের পর দিন তালাবদ্ধ। কোথাও কোথাও ল্যাপটপগুলো পড়ে আছে আলাদা রুমে, ধুলাবালিতে ঢাকা, অনেকগুলো সম্পূর্ণ অকেজো হয়ে গেছে। এমনকি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানে বিদ্যুৎ সংযোগ বা ইন্টারনেট ব্যবস্থা পর্যন্ত নেই, ফলে কোনোভাবেই ল্যাব চালু রাখা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছেন শিক্ষকরা। স্থানীয়দের অভিযোগ, লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে স্থাপিত এই ল্যাবগুলো তদারকির অভাবে কার্যকারিতা হারিয়েছে। শিক্ষার্থীদের ডিজিটাল শিক্ষার যে লক্ষ্য নিয়ে এই প্রকল্প নেওয়া হয়েছিল, তা ভেস্তে যাচ্ছে। কেউ কেউ বলছেন, নি¤œমানের যন্ত্রপাতি সরবরাহ এবং ইনস্টলেশনের সময় দুর্নীতির কারণে আজ এমন দুরবস্থা। প্রকল্পটি যেন ‘কাগজে সফল, বাস্তবে ব্যর্থ’- এমনটাই অভিমত অভিভাবক ও স্থানীয় শিক্ষানুরাগীদের। প্রসঙ্গত, সাম্প্রতিক সময়ে শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের নাম পরিবর্তন করে ‘আইসিটি ডিজিটাল ল্যাব’ করা হয়েছে। নাম বদল হলেও কার্যকারিতা ফিরে আসেনি এমন দৃশ্যই চোখে পড়ছে বকশীগঞ্জের ডিজিটাল ল্যাবগুলোতে।
বকশীগঞ্জের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নষ্ট হচ্ছে লাখ লাখ টাকার ল্যাপটপ
