বকশীগঞ্জ প্রতিনিধি ; প্রয়োজনের তাগিদে গরু বিক্রি করে বিপাকে পড়েছেন এক কৃষক। গরু বিক্রির পর ওই কৃষককে জাল টাকা দিয়ে গরুটি নিয়ে যায় দুই গরু ব্যবসায়ী। সেই জাল টাকা নিয়ে বিপাকে পড়েছেন রাজা মিয়া নামে ওই কৃষক।
গত ২২ জুন বিকালে ঘটনাটি ঘটেছে জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার বগারচর ইউনিয়নে। প্রতারণার শিকার হওয়া ওই কৃষকের নাম রাজা মিয়া। তার বাড়ি বগারচর ইউনিয়নের গলাকাটি এলাকায়। এঘটনায় ২৩ জুন বকশীগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন প্রতারণার শিকার হওয়া কৃষক রাজা মিয়া। লিখিত অভিযোগ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, কৃষক রাজা মিয়া ২২ জুন বিকালে নঈম মিয়ার হাটে একটি ষাড় গরু বিক্রি করতে নিয়ে যায়। নঈম মিয়ার হাটে গরু ব্যবসায়ী মুল্লুক মিয়া ও আকরাম হোসেন কৃষক রাজা মিয়ার গরুটি দর দাম করে ৯৯ হাজার টাকায় ক্রয় করেন। ওই হাটেই গরুটি ক্রয় বাবদ এক হাজার টাকা বায়না করেন দুই গরু ব্যবসায়ী। বাকি টাকা বগারচর ইউনিয়নের নাড্ডার বাজার এলাকায় গিয়ে দেওয়ার কথা বলেন। এরপর রাজা মিয়া গরুটি নিয়ে নিয়ে নাড্ডার বাজারের দিকে রওনা হলে মাঝ রাস্তায় গিয়ে বাকি ৯৮ হাজার টাকা রাজা মিয়ার হাতে বুঝিয়ে দেন তারা। পরদিন রাজা মিয়ার বাড়িতে এনজিও ব্যুরো বাংলাদেশ এর এক কর্মী মাসিক কিস্তি নিতে আসলে গরু বিক্রির টাকা হতে ১১ হাজার টাকা কিস্তি দেয়। কিন্তু ওই টাকা গুলো জাল বলে রাজা মিয়াকে ফেরত দেয় ব্যুরো বাংলাদেশ এর ওই কর্মী। পরে ব্যুরো বাংলাদেশ এর ওই কর্মী গরু বিক্রির সব টাকা গণনা করলে ৯৯ হাজার মধ্যে ৮০ হাজার টাকায় জাল নোট আছে বলে তিনি রাজা মিয়াকে অবগত করেন। ২৩ জুন স্থানীয় ধারার চর নাড্ডার হাট এলাকায় গরু ব্যবসায়ী মুল্লুক মিয়া ও আকরাম হোসেনের কাছে জাল টাকার বিষয়ে কথা বললে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে। এসময় গরুর মালিক রাজা মিয়াকে তারা জাল টাকার মিথ্যা মামলা দিয়েও ফাঁসানোর হুমকি দেন। বর্তমানে জাল টিকে বিপাকে পড়েছেন গরুর মালিক রাজা মিয়া। এঘটনায় ভুক্তভোগী রাজা মিয়া জানান, আমি সহজ সরল মানুষ। কোনটা জাল টাকা আর কোনটা ভাল টাকা সেটা বুঝি নাই। সেদিন গরু বিক্রির টাকা নিয়ে আমি বাড়িতে চলে আসি এবং পরদিন জানতে পারি ৯৯ হাজার মধ্যে ৮০ হাজার টাকায় জাল নোট ছিলো। ওই দুই গরু ব্যবসায়ী বর্তমানে গরু বিক্রির জাল টাকার দায় নিচ্ছে না এবং টাকাও ফেরত নিচ্ছে না। বলতে গেলে উল্টো হুমকি দিচ্ছেন। তাই এঘটনায় আমি পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছি। এব্যাপারে অভিযুক্ত গরু ব্যবসায়ী মুল্লুক মিয়া জানান, আমি দীর্ঘদিন ধরে গরু ব্যবসার সঙ্গে জড়িত রয়েছি। আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ও তাদের হাত দিয়ে গরুর মালিককে টাকা বুঝিয়ে দেওয়া হয়। টাকা বুঝিয়ে দেওয়ার একদিন পর অভিযোগ তোলা সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলক। বকশীগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক মো. লাভলু আহমেদ জানান, এঘটনায় একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি এবং ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।