বকশীগঞ্জে দিগন্ত জুড়ে সরিষা চাষ

বকশীগঞ্জ সংবাদদাতা : ভোজ্য তেল সংকট ও তেলের চাহিদা পুরণে এবার বকশীগঞ্জ উপজেলার চরাঞ্চলের প্রতিটি গ্রামেই ব্যাপক হারে সরিষা চাষ করেছে কৃষকরা। বকশীগঞ্জের দিগন্ত জুড়ে সরিষা ফুলে হলুদের সমারোহে ঢেঁকে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলের মাঠ। চোখ জুড়ানো হলুদ সরিষা ফুলের মৌ মৌ গন্ধে এ অঞ্চলের কৃষকরা বুকভরা আশা নিয়ে স্বপ্নের জাল বুঁনছেন। দিগন্ত জুড়ে হলুদ সরিষা ফুলে ঢেকে গেছে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠ। যা দেখে মনে হয় পুরো এলাকাজুড়ে হলুদের গালিচা বিছানো এক নয়নাভিরাম ফসলের দৃশ্য চিত্র। কুয়াশার জলরাশি ভেদ করে সবুজ মাঠের প্রান্তরে এখন হলুদের সমাহার। কুয়াশা ভেজা সরিষার খেতে হিমেল হাওয়ায় হলুদ ফুলগুলো কৃষকের মনে আনন্দের ঢেউ তুলেছে। সরিষা ফুলের ঢেউ খেলানো ওই সৌন্দর্য কে ধরে রাখতে প্রকৃতি প্রেমীদের মধ্যে ক্যামেরাবন্দিরও হিড়িক পরেছে। মুখে হাসি আর চোখে স্বপ্ন নিয়ে ভালো ফলনের আশায় প্রতিক্ষার প্রহর গুনছেন সরিষা চাষীরা। চলতি রবি মৌসুমে বকশীগঞ্জ উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবার অধিক জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে বাম্পার ফলনের আশা করছেন সরিষা চাষিরা। অল্প কিছুদিনের মধ্যেই কৃষকের ঘরে ঘরে উঠবে সেই কাংখিত সরিষার শস্য দানা। মেরুরচর ইউনিয়নের টুপকারচর গ্রামের সফল কৃষক হাজী আব্দুর রাজ্জাক বলেন,সরিষা আবাদের ৭৫ দিন পরেই এই ফসল ঘরে তোলা যায়। তেমন সেচ দিতেও হয় না। বীজ বপনের সময় মাটির নিচে সামান্য পরিমাণ রাসায়নিক সার দেওয়ার পরেই ভালো ফলন পাওয়া যায়। এক বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করতে ৫ থেকে ৬ হাজার টাকার মতো খরচ হয়। সরিষা বিক্রির পর সব খরচ বাদে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা লাভ হয়। কম খরচ, কম পরিশ্রম আর অল্প সময়ে সরিষা চাষ করা যায় । সরিষা চাষ অত্যন্ত লাভজনক একটি ফসল। প্রতি বিঘা জমি থেকে চলতি মৌসুমে গড় ৭ থেকে ৮ মণ হারে সরিষার ফলন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এ ছাড়াও সরিষা চাষ করলে জমির উর্বরতা শক্তি বৃদ্ধি পায়। অপর দিকে সরিষা তোলার পর বোরো ধান রোপণ করতেও কোন অসুবিধা হয় না। এ কারণেই দিন দিন সরিষার চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ আমিনুল ইসলাম জানান, চলতি মৌসুমে উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে ৬ হাজার ৮১৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তাছাড়াও বৈজ্ঞানিক উপায়ে হাল চাষ ছাড়াই রিলে প্রদ্ধতিতে ১৩০ হেক্টর জমিতেও সরিষার চাষ হয়েছে । তিনি আরও বলেন, এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ফলন খুবই ভালো হবে। তেলের চাহিদা মেটাতে সরিষার আবাদ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই কৃষি অফিস থেকে এসব প্রান্তিক কৃষকদের কে সরকারি ভাবে বীজ ও সার দিয়ে সহায়তা করা হয়েছে।