বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এর বক্তব্যই যথার্থ-আব্দুর রউফ মান্নান

গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে নাগরিক ঐক্যের প্রেসিডিয়াম সদস্য আব্দুর রউফ মান্নান বলেন-   গতকাল (শুক্রবার) বন ও পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, স্বাধীনতার পর এই ৫৩ বছরে কোন রাজনৈতিক দল রাষ্ট্র সংস্কারের ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেয়নি। আগের সরকার যদি রাষ্ট্রের যৌক্তিক সংস্কার চলমান প্রক্রিয়ায় রাখতেন, তাহলে আমাদের এই কাজগুলো করতে হতো না।

আমি মনোযোগ দিয়ে প্রায় সব চ্যানেলেই ওনার কথাগুলো শুনেছি। আমার মনে হয়, উনি যৌক্তিক উদাহারণ টেনে এনে সঠিক কথাগুলো বলেছেন।

১৯৭১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত যে সরকারগুলো বেশিরভাগ সময় ক্ষমতায় ছিলেন যেমন- শেখ মুজিব ক্ষমতায় ছিলেন ৩ বছর। শহীদ জিয়া ক্ষমতায় ছিলেন ৭ বছর। জেনারেল এরশাদ ক্ষমতায় ছিলেন ৯ বছর। খালেদা জিয়া ক্ষমতায় ছিলেন ১০ বছর। শেখ হাসিনা বিনা ভোটে ক্ষমতায় ছিলেন ১৬ বছর। এই ৪৫ বছরে রাষ্ট্রযন্ত্র মেরামত করার জন্য কখনো সংস্কার হয়নি। উল্লেখিত সব সরকারই ক্ষমতা কি করে দীর্ঘস্থায়ী করা যায়, তার ব্যবস্থা সংবিধানে লিপিবদ্ধ করেছেন ।

অথচ, উল্লেখিত সরকারগুলোর শাসনআমলে রাষ্ট্রের সব সেক্টরেই সংস্কার করার যথেষ্ট সময় পেয়েছিলেন। কিন্তু হয়নি। যাঁরাই ক্ষমতায় গিয়েছেন- সেই সব সরকারের সর্বোচ্চ ব্যক্তিরা তাঁদের প্রতিবন্ধী ও অ-মেধাবী সন্তানদের বিদেশে থাকার ও ব্যবসা-বাণিজ্য করার সুযোগ করে দিয়েছেন। জনমত ও সমস্ত আইন-কানুনকে উপেক্ষা করে নিজের মতো করে প্রশাসন সাজিয়েছিলেন।

মাত্র ৪ মাস হলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্বে এসেছেন। এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে দায়িত্ব দিয়েছেন ২৪ এর জুলাই-আগষ্টের প্রাণ বিসর্জনকারী, আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতা ও দেশ প্রেমিক সেনা বাহিনীর সদস্যবৃন্দ। ইচ্ছা করলেই বিপ্লবী সরকার গঠন করতে পারতেন। যদি করতেন তাহলে আপনাদের (রাজনীতিবিদদের) ছবি আর টেলিভিশনে দেখা যেতো না।

কোন রাজনৈতিক দলের ডাকে জুলাই-আগষ্টের বিপ্লব হয়নি। ছাত্রদের ডাকেই কোটি কোটি সাধারণ জনগণ রাস্তায় নেমেছিল সেদিন। আর এই বিপ্লবীদের বাদ দিয়েই কি আপনারা নির্বাচন করতে চান?

দিল্লী আর লন্ডনে বসে থেকে বাংলাদেশের নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করা যায় না। একটা ধ্বংসস্তুপের উপর বসে ইউনুস স্যার বাংলাদেশে যা-তা নির্বাচন হতে দেবেন না।

১। রাষ্ট্রযন্ত্র পূর্ণ সংস্কার হতে হবে।

২। ছাত্র-জনতার বিচার নিশ্চিত হতে হবে।

৩। গরীব-মেধাবীদের চাকরীর সুযোগ করে দিতে হবে।

৪। বিডিআর হত্যার পূন:বিচার হতে হবে।

৫। ভারতের সাথে বৈষম্যমূলক চুক্তি বাতিল করতে হবে।

৬। ইউনুস স্যারের প্রচেষ্টায় কমপক্ষে ৫০ লক্ষ বেকারের বিদেশে চাকরির ব্যবস্তা করে দিতে হবে। (যা শুধু ইউনুস স্যারের পক্ষেই সম্ভব)।

৭। আমাদের সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করতে যে দেশের সাথে প্রয়োজন সেই দেশের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করতে হবে।

৮। বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের সাথে আলোচনা করে নির্বাচনের রোড-ম্যাপ ঘোষনা করতে হবে।

৯। মনে রাখবেন ৩ বছরের মধ্যে পৃথিবীর ভৌগোলিক মানচিত্র আগের অবস্থায় থাকবে না।