২৩ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার, সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টি কেন্দ্রীয় পরিষদ কর্তৃক আয়োজিত “বাংলাদেশের রাজনীতি কোন পথে?” শীর্ষক আলোচনা সভা বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির আহ্বায়ক এম এ আলীম সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান আলোচক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, রাষ্ট্রচিন্তক, রেনেসাঁস সাধক, সর্বজনীন গণতন্ত্রের প্রবর্তক, বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির উপদেষ্টা ও তাত্ত্বিক নেতা অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক প্রধান আলোচকের বক্তব্যে বলেন, ৫৩ বছর ধরে রাষ্ট্র এমনভাবে চলছে যে, এর সঙ্গে কোন সুষ্ঠ জনগণের কল্যাণকর রাষ্ট্র গড়ে উঠেনি। বাংলাদেশে গণতন্ত্রের নামে রাষ্ট্রীয় ও দলীয় ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দুতে কায়েম করা হয়েছে বংশানুক্রমিক নেতৃত্ব পরিবারতন্ত্র। বাংলাদেশসহ বিশ্বে যে গণতন্ত্র চলছে তাহা শুধু হঠাৎ গজিয়ে ওঠা লুটেরা ধনীকদের জন্য, আর অবশিষ্ট ৯০ ভাগের বেশি মানুষ কৃষক, শ্রমিক, মধ্যবিত্ত পড়ে যায় শোষন-পীড়ন ও বঞ্চনার মধ্যে। দেশে শ্রেণী বৈষম্য অনেক বেড়েছে। দেশে সুস্থধারার রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। এর জন্য নতুন রাজনৈতিক দল ও নতুন নেতৃত্ব গড়ে তুলতে হবে। অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক আরো বলেন, গণতন্ত্রকে কেবল নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠনের সীমাবদ্ধ করে ফেলেছে।
সভাপতি এম এ আলীম সরকার মূল বক্তব্যে বলেন, দীর্ঘ সময় ধরে বাংলাদেশের রাজনীতি এক অস্বাভাবিক ও অসুস্থ ধারার মধ্যদিয়ে যাচ্ছে। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কোন ক্ষেত্রেই এদেশের রাজনীতিক ও বিশিষ্টজনের মধ্যে কোন রকম ঐক্যমত্য আর দেখতে পাওয়া যায় না। এই বিষয়টি আমাদের জন্য দুর্ভাগ্যজনক। গুন্ডা-মাস্তান পরিচালিত দুর্বৃত্তায়িত প্রতিচ্ছবি আমরা প্রতিনিয়ত দেখতে পাচ্ছি। পুরো রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ এখন আধা শিক্ষিত-অল্প শিক্ষিত দুর্বৃত্তায়িত লোকের হাতে। ছাত্র-তরুণদের মধ্যে বহু সময় ধরে রাজনীতির প্রতি উদাসিনতা তৈরী হয়েছে। ব্যক্তি মানুষের মনন ও চিন্তার জগতে অধপতন ঘটে চলছে নিরন্তর। সমাজের নৈতিক চরিত্রের ও মূল্যবোধের অবক্ষয় হয়েছে যা তুলনাহীন। মূল্যবোধ ও যুক্তিবোধের মধ্যে কোন স্থান নেই। গোটা সমাজ রাজনীতি, আত্মকেন্দ্রীয়কতা, স্বার্থপরতা এবং দুর্নীতিতে নিমজ্জিত। দেশকে সঠিকভাবে পরিচালনার লক্ষে কোন আদর্শ নেই। এম এ আলী সরকার আরো বলেন, বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির তাত্ত্বিক নেতা সর্বজনীন গণতন্ত্রের প্রবর্তক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক প্রণীত বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির ২৮ দফাকে সর্বজনীন গণতন্ত্রের আদর্শরূপে বিচার বিবেচনাপূর্বক সর্বজনীন রাষ্ট্ররূপে মনে করে গণতন্ত্রের ধারণাকে গভীরভাবে পর্যালোচনা করে সর্বজনীন গণতন্ত্রের নীতি ও কাঠামোকে পুনর্গঠন করে বাংলাদেশকে সর্বজনীন রাষ্ট্ররূপে গড়ে তুলতে হবে। সর্বজনীন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে স্বর্গীয় সমাজ, স্বর্গীয় রাষ্ট্র, স্বর্গীয় বিশ্বায়ন হবে। আরো বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য এবিএম ওসমান গনি সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ গণমুক্তি পার্টির কেন্দ্রীয় সদস্য লেখক অমূল্য কুমার বৈদ্য।