বিদ্যালয়ে যেতে শিক্ষকের অনীহা প্রতিযোগিতা শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত

লিয়াকত হোসাইন লায়ন : নিয়মিত বিদ্যালয়ে যেতে শিক্ষকের অনীহার ফলে শিক্ষার্থীদের পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। শিশুরা শিক্ষা অর্জনে ক্লাসে উপস্থিত হলেও প্রায় সময়ই শিক্ষকের অনুপস্থিত এবং নির্ধারিত সময়ে বিদ্যালয়ে না আসায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এতে দিনদিন শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিতির সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
জানাগেছে,জামালপুরের ইসলামপুরে পূর্বাঞ্চল পোড়ারচর পূর্বপাড়া সরকারী প্রাথমিক সরকারি বিদ্যালয়। মোট ৯২জন শিক্ষার্থীর জন্য বিদ্যালয়টিতে ৪ শিক্ষিকা ও একজন শিক্ষক পাঠদানে নিয়োজিত রয়েছেন। শিক্ষিকা মনিরা ইয়াছমিন থাকেন এপাড়ে শহরে। প্রতি নিয়তই বিদ্যালয়ে যেতে তার অনীহা। নিয়মিত বিদ্যালয়ে না গেলেও নির্ধারিত সময়ের পরে এবং ছুটির আগেই স্কুল ছেড়ে শহরে ফেরেন। তার দেখাদেখি অন্য শিক্ষকরাও এই পথেই হাটছেন। এমন পরিস্থিতিতে শিক্ষাবঞ্চিত হচ্ছে কোমলমতি শিশুরা। এতে এলাকায় অভিভাবকদের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
উপজেলার পূর্বাঞ্চলের গাইবান্ধা ইউনিয়ন। ওই ইউনিয়নের একটি অবহেলিত গ্রাম পূর্ব পোড়ার চর।অজপাড়া গায়ে অবস্থিত পূর্ব পোড়ারচর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। এর আশে পাশে কয়েকশত পরিবারের বসবাস। ওইসব পরিবারের কোমলমতি শিশুদের একমাত্র জ্ঞানার্জনের মাধ্যম বিদ্যালয়টি। শিক্ষকদের নিয়মিত উপস্থিতি না থাকায় মারাত্মকভাবে লেখাপড়া ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি শিক্ষকদের এমন অনিহায় শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে,ওই বিদ্যালয়ে তিনটি ক্লাসে ১৫ শিক্ষার্থী উপস্থিত রয়েছে। অন্যান্য শিক্ষকরা উপস্থিত থাকলেও নির্ধারিত সকল ছুটি ভোগ শেষ করেও শিক্ষিকা মনিরা ইয়াসমিন অফিস ও প্রধান শিক্ষককে না জানিয়ে বেশ কিছুদিন থেকে অনুপস্থিত রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, তারা নিয়মিত স্কুলে এলেও মনিরা ম্যাডাম আসেন না। আসলেও এক- দেড় ঘন্টা পরে আসেন, তবে স্কুল ছুটির আগেই তিনি চলে গেছেন। নিয়মিত না আসায় তাদের পড়ালেখার ক্ষতি হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন শিশুরা।
অভিভাবকরা বলেন, তিনি থাকেন উপজেলা সদরে।এখন যাতায়াতের ব্যবস্থা অনেক ভাল। তবুও ওই শিক্ষিকা মনগড়া মত চলেন। মাঝে মাঝেই না আসায় সন্তানদের লেখাপড়া ব্যাঘাত ঘটছে। এছাড়াও একজন শিক্ষক একদিন না আসলে দেখাদেখি পরের দিন আরেক জন না আসার প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। এতে প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষা অর্জনে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের জন্য হুমকি হয়ে পরেছে।
এ ব্যাপারে শিক্ষিকা মনিরা ইয়াসমিন বলেন,আমি মায়ের চিকিৎসার জন্য ব্যস্ত আছি। অনুপস্থিত রয়েছেন ছুটির আবেদন করেছেন জানতে চাইলে পরে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন।
প্রধান শিক্ষক শরিফুল ইসলাম বলেন, প্রত্যন্ত অঞ্চলে বিদ্যালয়টির সুনাম রয়েছে। আরো ভাল করতে চাই এতে প্রয়োজন শিক্ষকদের উপস্থিত। কিন্তু একজন শিক্ষিকার কারণে অন্য শিক্ষিকাদের ছুটি নেওয়া প্রতিযোগিতা সমস্যায় পরতে হয়।
এ বিষয়ে সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা আঃ গফুর প্রধান বলেন,বিদ্যালয়ে শিক্ষিকার অনুপস্থিতি সহ অন্যান্য সকল বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তৌহিদর রহমান বলেন,বিদ্যালয়ের শিক্ষক অনুপস্থিত ও বিভিন্ন সঙ্কটের বিষয়ে খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।