নিজস্ব সংবাদদাতা : স্বাস্থ্য ও পরিবেশের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টিকারী নিরব ঘাতক জাঙ্ক ফুড এবং প্লাস্টিক বোতলজাত পানি ও পলিথিন মোড়ানো খাদ্য সামগ্রীর বর্জনের ঘোষণা করেছে জামালপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। পাশাপাশি একই সভাকক্ষে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহে বহুমাত্রিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন এবং পুষ্টিকর খাদ্য প্রদর্শনী করায় উন্নয়ন সংঘ ও ওয়ার্ল্ড ভিশনের মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন জামালপুর এরিয়া প্রোগ্রামের তিনটি পুষ্টিভিত্তিক দলকে সনদ পত্র ও পুরস্কারে ভূষিত করা হয়। সোমবার জামালপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাঃ নজরুল ইসলাম সভা কক্ষে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীদের প্রস্তাবে জাঙ্ক ফুড, বোতলজাত পানি বর্জনের ঘোষণা করেন অনুষ্ঠানের সভাপতি সিভিল সার্জন মো. ফজলুল হক।
‘ওয়ার্কশপ অন সাপোর্টিং মাল্টি-সেক্টরাল কোলাবোরেশন এন্ড কোঅর্ডিনেশন ফর নিউট্রিশন’ শিরোনামে কর্মাশালায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডেপুটি সিভিল সার্জন ডাঃ রেজোয়ানা রশিদ। আলোচনায় অংশ নেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এসএম মোজাম্মেল, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ, জামালপুর বালিকা উচ্চবিদ্যালের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মান্নান,মেলান্দহ স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা গাজী রফিকুল ইসলাম, উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক সাংবাদিক জাহাঙ্গীর সেলিম প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জেলা স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা আনিছুর রহমান। অনুষ্ঠান আয়োজনে সহায়তা করে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের জাতীয় পুষ্টি সেবা প্রতিষ্ঠান।
কর্মশালায় পুষ্টি উন্নয়নের বিভিন্ন ঝুঁকির কথা উল্লেখ করে বক্তারা বলেন সরকারি, বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগ ব্যপকহার বৃদ্ধি করতে হবে, বিভিন্ন সামাজিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও গণমাধ্যমে ব্যপক প্রচারণা চালাতে হবে। উঠান বৈঠক থেকে শুরু করে বিভিন্ন সভা, সমাবেশে খাদ্যের পাশাপাশি পুষ্টির কথা বলতে হবে।
বক্তাদের আলোচনা ও মতামতের সূত্র ধরে সিভিল সার্জন ডাঃ ফজলুল হক বলেন মাল্টি-সেক্টরাল এপ্রোচ শতভাগ কাজে লাগাতে হলে প্রতিটি সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি বলেন নিরবে আমাদের মৃত্যুর মতো ভয়ঙ্কর পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে জাঙ্ক ফুড, প্লাস্টিক বোতলজাত পানি ও পলিথিন মোড়ানো সকল ধরণের খাবার আজ থেকে স্বাস্থ্য বিভাগ বর্জনের ঘোষণা দিচ্ছে। আমি বিশ্বাস করি প্রতিটি দপ্তরসহ সবাই যদি বর্জন করে তাহলে স্বাস্থ্য ও পরিবেশের ঝুঁকি থেকে গোটা জাতি রক্ষা পাবে।
কর্মশালার আগে জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ উপলক্ষে আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান হয় একই সভা কক্ষে। উন্নয়ন সংঘ ও ওয়ার্ল্ড ভিশনের মাধ্যমে বাস্তবায়নাধীন জামালপুর এরিয়া প্রোগ্রামের উদ্যোগে মা সমাবেশ, পুষ্টিকর খাবার প্রদর্শনী, উঠান বৈঠকসহ সচেতনতামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করায় সভা থেকে ধন্যবাদ জানানো হয়। পুষ্টি সপ্তাহে অসাধারণ পুষ্টিকর খাদ্য সামগ্রী প্রদর্শনী করায় জামালপুর এপি গঠিত মনিরাজপুর, জুগিরঘোপা ও দেউরপাড় চন্দ্রায় পুষ্টভিত্তিক তিনটি দলকে সনদ পত্র ও পুরস্কার দেয়া হয়। পুরস্কার গ্রহণকালে উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক জাহাঙ্গীর সেলিম ও ওয়ার্ল্ড ভিশনের জেসমিন প্রকল্পের পুষ্টি বিশেষজ্ঞ নাহিদা আক্তার উপস্থিত ছিলেন। পুষ্টি বিষয়ক বিতর্ক অনুষ্ঠানে বিজয়ী জামালপুর সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্রীরা পুরস্কৃত হয়।
সিভিল সার্জনসহ অন্যান্য বক্তারা উন্নয়ন সংঘ ও ওয়ার্ল্ড ভিশনের পুষ্টি কার্যক্রমের ভূয়শী প্রশংসা করেন। এপির পাশাপাশি ওয়ার্ল্ড ভিশনের সাথে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে উন্নয়ন সংঘ জামালপুরে জেসমিন নামে পুষ্টিভিত্তিক আরেকটি প্রকল্প জামলপুরে বাস্তবায়ন করছে।