হঠাৎই শঙ্কার কালো মেঘ বাসা বেধেছিল ব্রাজিলের ভাগ্যাকাশে। অনিয়মের অভিযোগে রিও ডি জেনেইরোর আদালত গত ৭ ডিসেম্বর দেশটির ফুটবল কনফেডারেশনের (সিবিএফ) সভাপতি এডনালদো রদ্রিগেজকে ছাটাই করে। এরপরই ফিফা থেকে নিষেধাজ্ঞার শঙ্কায় পড়ে যায় সর্বোচ্চ পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। সংস্থাটি প্রথমে ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়ে ব্রাজিলে চিঠি পাঠায়, তাতে সিবিএফ সাড়া না দেওয়ায় পরে আরেকটি সতর্কবার্তা দেয় ফিফা। তবে অবশেষে সেই শঙ্কা কেটেছে, রদ্রিগেজকে সভাপতি পদে পুনর্বহালের নির্দেশ দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট।
এর মাধ্যমে ব্রাজিলের ওপর যে নিষেধাজ্ঞার খড়গ নেমে আসার কথা ছিল, তাতে পরিবর্তনের সম্ভাবনা রয়েছে। তবে নাটকীয়তা শেষ হয়নি, সুপ্রিম কোর্টের বিচারক গিলমার মেন্ডেসের দেওয়া নতুন এই আদেশ অস্থায়ী। যদিও রদ্রিগেজের পুনর্বহালের আদেশ তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর হবে, পরে মেন্ডেসের প্রাথমিক রায়কে ব্রাজিলের শীর্ষ আদালতের অন্য ১০ সদস্য বিশ্লেষণ করে চূড়ান্ত রায়ের তারিখ নির্ধারণ করবেন।
আদালতের এ রায় আরেকটি দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। সিবিএফে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের ঘটনার তদন্ত করতে চারদিন পরই ফিফা ও কনমেবল কর্মকর্তারা ব্রাজিলে যেতে পারেন। গতকাল (বৃহস্পতিবার) সুপ্রিম কোর্টের নতুন সিদ্ধান্ত ঘোষণার আগে রদ্রিগেজকে তার দায়িত্বে ফিরিয়ে দিতে প্রকাশ্যে আহবান জানিয়েছিল ব্রাজিলের অ্যাটর্নি জেনারেল পাউলো গোনেট এবং সলিসিটর-জেনারেল অফিস।
পুনর্বহালের আদেশ দেওয়া রায়ে বিচারক গিলমার লিখেছেন, ‘আমি রিও ডি জেনেইরো কোর্ট অব জাস্টিসের দেওয়া রায়ের প্রভাবকে স্থগিত করছি। পাশাপাশি ২০২২ সালের ২৩ মার্চ সিবিএফের সাধারণ পরিষদ দ্বারা নির্বাচিত নেতৃত্বকে তাৎক্ষণিকভাবে পুনর্বহালের আদেশ দিচ্ছি।’
এর আগে রিও ডি জেনেইরোর আদালত রদ্রিগেজসহ সিবিএফের পুরো বোর্ডকে বরখাস্ত করার রায়ে বলেছিলেন, ত্রিশ দিনের মধ্যেই পদ ছাড়তে হবে রদ্রিগেজসহ পুরো বোর্ডকে। এর পরপরই ওই ঘটনায় সিবিএফের কাছে ব্যাখ্যা চেয়ে পত্র দিয়েছিল ফিফা। কিন্তু এরপর থেকে কোনো অগ্রগতির কথাই আর জানা যায়নি সিবিএফের পক্ষ থেকে। যদিও এডনালদো বসে ছিলেন না। রিও ডি জেনেইরোর আদালতকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চ আদালতে যান তিনি। কিন্তু সেখানেও নিম্ন আদালতের নির্দেশ বহাল থাকে। এরপরেই আরেকদফা পত্র পাঠানো হয় ফিফার পক্ষ থেকে। যেখানে শাস্তির সতর্কতাও জানানো হয়।
ওই ঘটনায় এডনালদো পুরোপুরি ছাঁটাই হলে বড় রকমের সমস্যায় পড়তো সিবিএফ। ফুটবল ফেডারেশনে তৃতীয় কোন পক্ষ হস্তক্ষেপ করলে সদস্য দেশগুলোকে বিভিন্ন মেয়াদে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। এশিয়ান দেশ পাকিস্তানেও এসেছিল এমন নিষেধাজ্ঞা। যা কার্যকর হতে পারতো ব্রাজিলের বিপক্ষেও। তবে সেই শঙ্কায় আর পড়তে হচ্ছে না সেলেসাও সমর্থকদের। দায়িত্বে পুনর্বহাল হওয়া সিবিএফ সভাপতি রদ্রিগেজের মেয়াদ রয়েছে ২০২৬ সাল পর্যন্ত।
এএইচএস