ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা দালানে প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা ঘুমায় ছাপড়ায়

মোহাম্মদ আলী : যারা মুক্তিযুদ্ধ করিনি, শুধু কাগজে কলমে মুক্তিযোদ্ধা বনেছেন এমন ভূয়া মুক্তিযোদ্ধারাও ঘুমায় পাকা দালানে (বীর নিবাস)। ছেলে মেয়েরা চাকুরি বাকরি করে বড় বড় পদে। পক্ষান্তরে প্রত্যক্ষ যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়ে শত্র“র গোলার ক্ষতচিহ্ন দেহে বহন করা প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা থাকেন ছাপড়া ঘরে! বিএ পাশ করা একমাত্র ছেলের মিলেনি একটি সরকারি চাকুরি!
মুক্তিযোদ্ধা সম্পর্কিত এমন দুর্নীতি ও অনিয়মের চিত্র সারাদেশব্যাপী।
বাদ যায়নি জামালপুর। এ জেলার প্রতিটি উপজেলায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছেন এমন ভূয়া মুক্তিযোদ্ধারা। এইসব সুবিধাবাদী ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাদের স্বার্থান্বেষী আগ্রাসী আচরণের মুখে সুবিধাবঞ্চিত হয়েছেন অনেক প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা।
জানা যায়, জেলার মেলান্দহ উপজেলার ঝাউগড়া গ্রামের যুদ্ধাহত, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নুরুল ইসলাম পাতু (৭২)। শেষ বয়সে এসে থাকেন টিনের একটি ছাপড়া ঘরে। একমাত্র ছেলে আনিছুর রহমান বিএ পাশ করলেও অনেক চেষ্টার পরেও মিলেনি একটি সরকারি চাকুরি। বাধ্য হয়ে জীবন বাঁচাতে রিকশাকে অবলম্বন হিসেবে নিয়েছে সে!
এব্যাপারে যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা মোঃ নুরুল ইসলাম পাতু বলেন, আমি একজন প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধা। কখনো অন্যায়ের সাথে আপোষ করিনি। সব সময় অন্যায়ের প্রতিবাদ করেছি। তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের উপজেলার কতিপয় নেতৃস্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা অর্থের লোভে ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা তৈরি করেছে। তখন আমি বারে বারে প্রতিবাদ করেছি। যার কারণে তারা আমাকে পছন্দ করত না। সব ধরনের সুযোগ থেকে আমাকে দূরে রখত। আমি আমার একটি ঘরের (বীর নিবাস) জন্য তাদের কাছে বার বার আবেদন করেছি, অনুরোধ করেছি। কিন্তু, তারা শুনেনি। শুধু তা-ই নয়, আমার একমাত্র ছেলেটি বিএ পাশ করার পরও তাদের কারণে কোনো চাকুরি পায়নি। অগত্যা এখন সে রিকশা চালিয়ে খায়!
অথচ অনেক ভূয়া মুক্তিযোদ্ধা বীর নিবাস পেয়েছে এবং তাদের ছেলে মেয়েরা বড় বড় পদে সরকারি চাকুরি করে!