মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টা মহোদয়ের নিকট অবহেলিত ও বৈষম্যের শিকার এমপিওভুক্ত ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের সর্বজনীন বদলী চাই

বাংলাদেশে বিভিন্ন এনজিওসহ সকল কোম্পানিতে চাকরিরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের চাকরিতে প্রাঞ্জলতা নিয়ে আসার জন্য সকলের বদলী ব্যবস্থা আছে। কিন্তু স্বাধীনতার ৫৩ বছর পরেও এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে সরকারি বিধি মোতাবেক নিয়োগ প্রাপ্ত (এনটিআরসিএ সনদ বিহীন, এনটিআরসিএ এর সনদ প্রাপ্ত ও এনটিআরসিএ’র সুপারিশ প্রাপ্ত) সকল ইনডেক্সধারী (স্কুল,কলেজ,মাদ্রাসা, কারিগরি ) শিক্ষকের শূন্য পদে বদলি চালু হয়নি। এতেকরে ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডির হাতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন শিক্ষক কর্মচারীদের হেনস্তার শিকার হতে হয়। কখনো কখনো তাদের হেনস্তার শিকার হয়ে কেউ কেউ আত্মহত্যার পথও বেছে নেন বলেও জানা যায়। এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রচলিত সরকারি বিধি মোতাবেক এনটিআরসিএ সনদ ছাড়া ২০০৫ খ্রিস্টাব্দে ২০ মার্চের আগে সরাসরি নিয়োগ এবং এরপর ২০১৫ খ্রিস্টাব্দের ২২ অক্টোবর পর্যন্ত এনটিআরসিএ সনদপ্রাপ্তদের নিয়োগ দেন ম্যানেজিং কমিটি/গভর্নিং বডি। এরপর থেকে এনটিআরসিএ-এর সুপারিশের মাধ্যমে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে শূন্য পদে বদলি প্রত্যাশী হাজার হাজার শিক্ষক নিজ নিজ জেলা থেকে শত শত কিলোমিটার দূরে অবস্থান করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছি। কিন্তু আমরা নামমাত্র বাড়িভাড়া ১০০০ টাকা ও চিকিৎসা ভাতা ৫০০ টাকাসহ অতি সামান্য তথা ১২,৫০০ টাকা বেতনে বাড়ি থেকে দূর দূরান্তে অবস্থান করে খুবই মানবেতর জীবন যাপন করছি। পরিবারের সবাইকে ছেড়ে বাড়ি থেকে শত শত কিলোমিটার দূরে অবস্থান করায় আমরা মানসিক ভাবে চরম হতাশাগ্রস্ত হয়ে পরেছি। যার দরুন ক্লাসে পাঠদান কার্যক্রমে মনযোগ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। দূরে চাকুরীরত থাকার কারণে অনেক শিক্ষক স্বজন হারানোর সংবাদ পেয়েও বাড়িতে গিয়ে জানাজা, দাফন-কাফন এর কাজে অংশ গ্রহণ করতে পারেননা যা খুবই বেদনাদায়ক। বদলি প্রত্যাশী শিক্ষকগণ এই নিরব কান্না বুকে ধারণ করে অত্যন্ত মনোকষ্ট অবস্থায় দূর দূরান্তে জীবন যাপন করছেন। অথচ বদলি চালু করতে সরকারের কোন আর্থিক বাজেটের প্রয়োজন নেই। বদলি প্রত্যাশী এমপিওভূক্ত শিক্ষকগণ বহুদিন যাবৎ বদলি চালুর জন্য সরকারের নিকট আবেদন করে আসছে। কিন্ত বিগত সরকার শিক্ষকদের চাওয়াকে গুরুত্ব না দিয়ে ১ আগষ্ট ২০২৪ খ্রিঃ তারিখে শিক্ষকদের মাঝে বিভাজন সৃষ্টি করে শুধুমাত্র এনটিআরসিএ কতৃক সুপারিশ প্রাপ্ত শিক্ষকদের জন্য পারস্পরিক বদলির একটি প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে যা চরম বৈষম্যমূলক। এই প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী ২০১৫ সাল পর্যন্ত নিয়োগ প্রাপ্ত সকল ইনডেক্সধারী শিক্ষককে বদলি সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে যা শিক্ষকদের মাঝে চরম বিভাজন ও হতাশা তৈরি করেছে। ২০১৫ খ্রিব্দের পূর্বে সরাসরি বদলি ব্যবস্থা না থাকলেও নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান পরিবর্তনের সুযোগ ছিল যা রহিত করা হয়েছে। এমতাবস্থায় বদলি প্রত্যাশী শিক্ষকদের নিজ নিজ জেলা/উপজেলায় যাওয়ার সুযোগ করে দিয়ে শিক্ষা ব্যবস্থায় আনন্দঘন পরিবেশ ফিরিয়ে আনা একান্ত প্রয়োজন।

তাই বেসরকারি এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে সরকারি বিধি মোতাবেক নিয়োগ প্রাপ্ত (এনটিআরসিএ সনদ বিহীন, এনটিআরসিএ সনদ প্রাপ্ত ও এনটিআরসিএ সুপারিশ প্রাপ্ত) সকল ইনডেক্সধারী (স্কুল-কলেজ,মাদ্রাসা, কারিগরি ) শিক্ষকের জন্য শূন্য পদে বদলি চালু করা অত্যন্ত জরুরি। যদি মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের মত সর্বজন ও বিশ্বনন্দিত সরকার আমাদের এ বিষয় অতি দ্রুত সুরাহা না করে তাহলে আমরা জানুয়ারি থেকে তীব্র থেকে তীব্র গণ আন্দোলন গড়ে তুলবো এমপিওভূক্ত শিক্ষকদের সর্বজনীন বদলি জন্য।