ইয়েমেনে দাতব্য কার্যক্রম পরিচালনাকারী বৈশ্বিক সংস্থা জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন ও ব্রিটিশ কর্মীদের দেশটি ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠী। একই সঙ্গে রাজধানী সানা-ভিত্তিক আন্তর্জাতিক অন্যান্য দাতব্য সংস্থায় কর্মরত মার্কিন ও ব্রিটিশ নাগরিকদেরও ইয়েমেন ছাড়তে বলা হয়েছে। হুথি কর্তৃপক্ষ আগামী এক মাসের মধ্যে মার্কিন ও ব্রিটিশ ওই নাগরিকদের দেশটি ছেড়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে।
বুধবার ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর একজন কর্মকর্তা এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ইসরায়েলের সাথে যুদ্ধে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে লোহিত সাগরে ইসরায়েল সংশ্লিষ্ট জাহাজে হামলা চালিয়ে আসছে হুথিরা।
হামলার পাল্টায় ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠীর সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে যৌথভাবে হামলা করছে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন। মঙ্গলবার ইয়েমেনের উপকূলীয় এলাকায় হুথিদের অবস্থানে ওই দুই দেশের হামলার পর নতুন এই সিদ্ধান্তের ঘোষণা দিয়েছে গোষ্ঠীটি।
লোহিত সাগরে আন্তর্জাতিক জাহাজে হামলা ঠেকানোর চেষ্টা করছে যুক্তরাষ্ট্র সরকার। কিন্তু এরপরও হামলা অব্যাহত থাকায় গত সপ্তাহে হুথি গোষ্ঠীকে সন্ত্রাসী সংগঠনের তালিকায় নতুন করে যুক্ত করেছে ওয়াশিংটন।
ইয়েমেনে জাতিসংঘের দাতব্য কার্যক্রমের সমন্বয়কারী পিটার হকিন্সের কাছে হুথি গোষ্ঠীর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়েছে, আপনাকে অবশ্যই মার্কিন এবং ব্রিটিশ নাগরিকসহ জাতিসংঘের কর্মকর্তা ও কর্মীদের আগামী ৩০ দিনের মধ্যে দেশ ছেড়ে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হওয়ার কথা জানাতে হবে।
চিঠিতে ইয়েমেনে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিদেশি সংস্থাগুলোকে আমেরিকান এবং ব্রিটিশ নাগরিকদের নিয়োগ না করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। হুথি শীর্ষ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুলসালাম ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে চিঠির সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
জাতিসংঘের দাতব্য কার্যক্রমের সমন্বয়কারী পিটার হকিন্সের কার্যালয় এই চিঠির বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। এ ছাড়া ইয়েমেনে নিযুক্ত মার্কিন ও ব্রিটিশ দূতাবাসের পক্ষ থেকেও এই বিষয়ে মন্তব্য করা হয়নি।
মার্কিন-সমর্থিত এবং সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের বিরুদ্ধে প্রায় এক দশকের যুদ্ধের পর হুথি বিদ্রোহীরা ইয়েমেনের বেশিরভাগ অংশ নিয়ন্ত্রণ করছে। বৃহৎ আকারে যুদ্ধ থেমে গেলেও বর্তমানে তা দেশটিতে অচলাবস্থা তৈরি করেছে। তবে দেশটিতে লড়াইরত পক্ষগুলো জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধবিরতির পুনঃনবায়নে ব্যর্থ হয়েছে।
হুথিদের হামলার কারণে লোহিত সাগর হয়ে চলাচলকারী আন্তর্জাতিক কন্টেনারবাহী জাহাজগুলো এশিয়া থেকে ইউরোপে দ্রুত মালামাল পরিবহনের রুটটি থেকে অন্য ব্যয়বহুল পথে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছে। হুথিদের হামলার প্রতিশোধ নিতে ইয়েমেনজুড়ে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের যুদ্ধবিমান, জাহাজ এবং সাবমেরিন থেকে হামলা শুরু করা হয়েছে।