গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে মালয়েশিয়া প্রবাসী খোকন জমাদার প্রধান উপদেষ্ঠা ড. ইউনুসের কাছে দাবি জানিয়েছেন বলেন -মালয়েশিয়ায় অবৈধ হয়ে যাওয়া প্রবাসীদের বৈধ করার জন্য। মালয়েশিয়ায় বসবাসরত অবৈধ অভিবাসীদের নিজ দেশে ফিরতে ‘অভিবাসী প্রত্যাবাসন কর্মসূচি’ চালু করেছে দেশটির সরকার।
গত ১ মার্চ থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচি চলবে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত।এদিকে মালয়েশিয়া প্রবাসী খোকন জমাদার বলেন যারা এই মুহুতে মালয়েশিয়াতে আছি তাদেরকে আগে বৈধ করে তারপর যেন বাংলাদেশ থেকে কর্মী পাঠানো হয়।
যেহেতু আজকে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে যাচ্ছে তাই আমরা চাই আমাদের দেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান যেন আমাদের বৈধতার ব্যাপারে কথা বলেন। আমাদেরকে বৈধ না করে যেন কোন কর্মী না পাঠায় বাংলাদেশের সরকার। কারণ এখানে কর্মী এনে কাজ দেওয়া হয় না বেশিরভাগই প্রতারনা করা হয়।আমাদের দেশের সরকার প্রধান ড. ইউনুসের কাছে দাবি থাকবে আমরা যারা বর্তমানে আছি তাদেরকে বৈধ করার ব্যাপারে পদক্ষেপ নিবেন।
মালয়েশিয়ায় অবৈধভাবে থাকা বিদেশি অভিবাসীদের বৈধ করতে ২০২২ সালের ২৭ জানুয়ারি রিক্যালিব্রেশন ২.০, প্রকল্পতে আবেদন করেছি তাদেরকে যেন বৈধ করা হয়। তিনি আরো বলেন ২.০ প্রকল্পে যারা আমরা আবেদন করেছি, ফিঙ্গার দিয়েছি, মেডিকেল করেছি, তাদেরকে এখন ও বৈধ করেনি। মালয়েশিয়ার সরকার প্রধানের কাছে আমাদের দাবি হচ্ছে রিক্যালিব্রেশন ২.০, প্রকল্পের সময় যাতে বাড়ানো হয়।
মালয়েশিয়ায় চলছে অবৈধ অভিবাসীদের দুঃসময়। দেশটির ইমিগ্রেশন প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে কোনো ভাবেই অবৈধ অভিবাসীদের থাকতে দেওয়া হবেনা। চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে অবৈধ অভিবাসীদের নিজ নিজ দেশে ফিরতে হবে। মালয়েশিয়ার এমন দৃঢ় সিদ্ধান্তের মধ্যে অবৈধ কর্মীদের ঘরে ফিরে আসতে হবে। বারবার এমন তাগিদেও যারা ফিরবেন না তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে দেশটির সরকার। কখন না জানি হানা দেয় ইমিগ্রেশন। জঙ্গলে, খাটের নিচে, বিল্ডিং থেকে লাফিয়ে, দেয়াল টপকিয়ে, প্রজেক্টের লঙ্কানে বা কাঠের নিচে গর্তে লুকিয়ে রক্ষা পাচ্ছে না অবৈধরা। অবৈধদের আটকের খবরে চোখের পাতা ভারী হয়ে উঠছে দিনকে দিন।
বৈধ পাস বা পারমিট ছাড়া কাজ করা এবং বৈধ ভ্রমণ ভিসা নেই এমন বিদেশিদের বিষয়ে তথ্য ও জনসাধারণের দেওয়া সন্ধানের ভিত্তিতে সমগ্র মালয়েশিয়ার হটস্পটগুলোতে অপারেসি সাপু, অপারেসি সেলেরা, অপারেসি পিন্টু, অপারেসি মাহির এবং অপারেসি পিকআপের মতো বিভিন্ন নামে অভিযান চালিয়ে প্রতিদিন বাংলাদেশ, ইন্দোনেশিয়া, ভারত, পাকিস্তান ও ভিয়েতনামের নাগরিকদের আটক করছে দেশটির ইমিগ্রেশন পুলিশ। দেশটিতে বর্তমানে থাকা প্রায় ১৫ লাখ বাংলাদেশিদের মধ্যে যারা অবৈধভাবে বসবাস করছেন তাদের মধ্যে বিরাজ করছে ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা।
এদিকে চারিদিকে সাঁড়াশি অভিযান, অন্যদিকে জেলের ঘানির চিন্তায় যেন তটস্থ করে তুলছে অবৈধদের। দেয়াল বিহীন এ প্রবাস নামক কারাগারে আত্মহত্যা না করতে চাইলে, দেশে ফেরা ছাড়া দ্বিতীয় আর কোন উপায় নেই তাদের সামনে।
খোকন জমাদারের মতো অনেকেই আছেন যারা নানা জটিলতায় ভিসা করতে পারেনি। অনেক প্রতিষ্ঠান আবার কর্মী ছাটাই করছে। এছাড়া ফ্রি ভিসার নামে কলিং ভিসায় মালয়েশিয়ায় কর্মী নিয়ে এসেছেন অনেক নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠান। ফলে অবৈধ যেন নিয়ম হয়ে পড়েছে সিস্টেমের যাঁতাকলে।