মেলান্দহে প্রধান শিক্ষকের উপর ছাত্রের হামলা

মোহাম্মদ আলী : মেলান্দহে প্রধান শিক্ষকের উপর হামলা করেছে তার ছাত্র। ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী, অভিভাবকদের নিন্দা। অতঃপর হামলাকারী ছাত্রকে পুলিশের কাছে সোপর্দ।
রোববার, উপজেলার দুরমুঠের রুকনাই উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক, গোলাম মোস্তফা সেলিম এর উপর এ হামলার ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনাস্থল থেকে জানা যায়, ওইদিন বেলা প্রায় ১১টার দিকে প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা সেলিম স্কুলে ঢুকার পথে পিছন থেকে হামলা করে তার সাবেক ছাত্র, রুকনাই দক্ষিণ পাড়ার খোকা মিয়ার ছেলে, রবিন (২৫)। হামলায় প্রধান শিক্ষক তার পিঠে ও পায়ে আঘাত পান। এমন সময় হামলাকারী রবিনকে উপস্থিত জানগণ আটক করে। পরে তাকে নিরাপত্তার প্রয়োজনে শ্রেণিকক্ষে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। এদিকে খবর পেয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। তারা “শিক্ষকের উপর হামলা কেন প্রশাসন জবাব দে” মর্মে দফায় দফায় শ্লোগান দিতে থাকে। এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে মেলান্দহ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে হামলাকারী ছাত্র রবিনকে হেফাজতে নেন।
রুকনাই উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক, সামছুল আলম মিনুর কাছে হামলার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে, তিনি কিছু জানেন না, বলে জানান।
রুকনাই উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, আব্দুস সালাম তার বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধে এমন ন্যাক্কারজনক হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেন, হামলাকারী প্রধান শিক্ষকের ছাত্র। তিনি তাকে মাফ করে দিয়েছেন। তাই, এই ঘটনায় আমরা কেউ মামলা দিতে পারিনি। তবে, তিনিও হামলার কারণ সম্পর্কে কিছু বলতে পারেননি।
এলাকাবাসী জানান, এটি একটি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার জেড়। সেলিম মাস্টার দুরমুঠ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি ছিলেন। ওই সময় রবিন, মেলান্দহ মাদারগঞ্জ আসনের এমপি প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমান বাবুলের হয়ে দুরমুঠে ধানের শীষের পোস্টার লাগিয়েছিল। একারণে সেলিম ও তার ভাই বাবুল কমিশনার এবং তাদের দলবল গিয়ে রবিনকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছিল। শুধু তা-ই নয়, তাকে বাড়ি থেকে গাড়ীতে তুলে নিয়ে লাঞ্চিত করে ছিল। সেই ক্ষোভেই হয়তো আজকের ঘটনা ঘটেছে।
এব্যাপারে দুরমুঠ ইউনিয়ন বিএনপির সহ-সভাপতি, সাবেক ইউপি সদস্য, আলমগীর হোসেন, ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ওইসময় শুধু রবিনকে নয়, স্বয়ং প্রার্থী, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুলের উপরও সেলিমরা হামলা করে ছিল।
তিনি আরো বলেন, ২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মেলান্দহ মাদারগঞ্জ আসনের বিএনপির এমপি প্রার্থী, বাবুল ভাই গিয়েছিলেন দুরমুঠ মাজার জিয়ারত করতে। আমরাও স্থানীয় নেতাকর্মীরাও সাথে ছিলাম। ওইসময় জুবেরী চাঁনের নেতৃত্বে সেলিম মাস্টার তার বাহিনী আমাদের উপর হামলা করেছিল। তারা হামলা করেই ক্ষান্ত থাকেনি। বরং পুলিশ ডেকে এনে মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদেরকে ধরিয়ে দিয়েছিল। সেই ঘটনায় আমরা ৬জন নেতাকর্মী ভিকটিম হয়েও বিনা অপরাধে দেড়মাসের মতো জেল খেটেছি।
তাদের এ অপরাধবোধের কারণে ৫ অগাস্টের পর সেলিমরা গা ঢাকা দিয়েছিল।
এব্যাপারে হামলার শিকার, প্রধান শিক্ষক গোলাম মোস্তফা সেলিম এর মতামত জানার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি। বিদ্যালয়ের অন্যান্য শিক্ষকরা জানিয়েছেন তিনি ইসলামপুর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।