ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসকে নির্মূল করতে সামরিক অভিযানের মেয়াদ বৃদ্ধি এবং যুদ্ধের পর উপত্যকা নিজেদের দখলে রাখা সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবের ওপর ভোট হয়েছে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভায়। অধিকাংশ মন্ত্রী প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দিয়েছেন।
রোববার হয়েছে এই ভোট। আজ সোমবার মন্ত্রিসভা সূত্রের বরাত দিয়ে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম কান জানিয়েছে, মন্ত্রিসভা অনুমোদন করায় পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নে আর কোনো বাধা নেই। তবে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকার এক্ষেত্রে ‘ধীরে চলো’ নীতি মেনে চলতে আগ্রহী। তাই আগামী ৫-৬ মাস সময় নিয়ে পরিকল্পনাটির বাস্তাবায়ন করতে চায় ইসরায়েল।
এ ব্যপারে বিস্তারিত জানতে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভার অন্যতম সদস্য এবং সেখানকার রাজনৈতিক দল নিউ হোপ পার্টির শীর্ষ নেতা জি’ভ এলকিনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল রয়টার্স। তিনি এ তথ্যের সত্যতা স্বীকার করে বলেছেন, “আমরা এখনই অভিযানের তীব্রতা বাড়াতে চাচ্ছি না। কারণ জিম্মি ও বন্দি বিনিময়ের ব্যাপারটিকে আমরা অগ্রাধিকার দিচ্ছি। বিশেষ করে হামাস যদি সব জিম্মিকে মুক্তি দেয়, সেক্ষেত্রে আমরা গাজায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করব।”
“আমরা আলোচনার জন্য দরজা খোলা রেখেছি। আগামী সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মধ্যপ্রাচ্য সফরে আসছেন। তার সফর শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমদের আলোচনার দরজা খোলা থাকবে। আমরা আশা করছি যে অন্তত এবার হামাস বুঝতে পারবে যে আমরা সিরিয়াস।”
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ভূখণ্ডে হামাসের যোদ্ধারা অতর্কিত হামলার চালানোর পর গাজায় যে সামরিক অভিযান শুরু করেছিল ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ), তা এখনও চলছে। এই অভিযানের ছলে গাজার প্রায় এক তৃতীয়াংশ এলাকা ইতোমধ্যে দখল করে নিয়েছে ইসরায়েল।
রয়টার্সের কাছে অবশ্য এলকিন দাবি করেছেন যে এই নিয়ন্ত্রণ বা দখল ‘স্থায়ী নয়’ এবং হামাস যদি পরাজয় স্বীকার করে গাজা থেকে বিদায় নিতে সম্মত হয়, সেক্ষেত্রে দখলকৃত অংশ থেকে নিজেদের সরিয়ে নেবে ইসরায়েল।
টানা প্রায় ১৫ মাস অভিযান চালানোর পর গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় যুদ্ধবিরতি দিয়েছিল আইডিএফ। কিন্তু গাজায় আটকে থাকা ইসরায়েলি জিম্মি এবং ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মুক্তির প্রশ্নে মতানৈক্য হওয়ায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে গত ১৮ মার্চ গাজায় ফের সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী। তবে অভিযান শুরুর আগে মার্চের শুরুর দিকে গাজায় মানবিক ত্রাণ ও খাদ্যবাহী সব ট্রাকের প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছিল ইসরায়েল।
আইডিএফের এক কর্মকর্তা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, নতুন পরিকল্পনার বাস্তবায়ন শুরু হলে গাজার বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের সবাইকে দক্ষিণ গাজায় নিয়ে আসা হবে এবং সেখানে তাদের ত্রাণের ব্যবস্থা করা হবে।
“আমরা চাই না জীবনধারণের জন্য জরুরি পণ্যসামগ্রী হামাসের হাতে পড়ুক। কারণ সেক্ষেত্রে হামাস এসব নিয়ে রাজনীতি করা শুরু করবে।”
সূত্র : রয়টার্স