যে ৮ পাকিস্তানি নাটকের সিক্যুয়েল দেখতে চায় দর্শকরা

পাকিস্তান টেলিভিশন শিল্পে অনেক নাটক রয়েছে যা সে দেশের গণ্ডি পেরিয়ে বাংলাদেশেও ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। এর মেলোড্রামা, রোমান্স এবং জীবনঘনিষ্ঠ গল্পগুলো দর্শকদের মুগ্ধ করে রাখে। অনেক সময় কোনো নাটক এতটাই জনপ্রিয়তা পায় যে দর্শকরা এর পরবর্তী পর্ব বা সিক্যুয়েল দেখতে চায়।

সম্প্রতি কিছু নাটক রেকর্ড সংখ্যক দর্শক টেনেছে, যার মধ্যে রয়েছে ‘কভি ম্যায়ঁ কভি তুম’। তবে নির্মাতারা জানিয়েছেন, এই নাটকের গল্প যেহেতু সম্পূর্ণ, তাই এর কোনো সিক্যুয়েল তৈরি হবে না।

তবে এমন অনেক জনপ্রিয় নাটক আছে, যেগুলো দর্শকদের প্রবল আগ্রহের কারণে দ্বিতীয় বা তৃতীয় সিজন পেতেই পারে। আজকের প্রতিবেদনে এমন ৮টি 
নাটকের তালিকা তুলে ধরা হলো।

১. সোনো চন্দা : ‘সোনো চন্দা’ পাকিস্তানি নাটকের জগতে একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। ফারহান সাঈদ ও ইকবাল আজিজের জুটি এই নাটকটিকে শুধু ব্লকবাস্টারই করেনি, বরং রমজান মাসের বিশেষ নাটকের ধারাও শুরু করে। নাটকটির তুমুল সাফল্যের কারণে এর দ্বিতীয় সিজনও তৈরি হয়েছিল। দ্বিতীয় সিজনের শেষে দেখা যায় আরসাল ও আজিয়া উচ্চশিক্ষার জন্য বিদেশে যাচ্ছে। এরপর থেকেই দর্শকরা তৃতীয় সিজনের জন্য দাবি জানিয়ে আসছেন। শোনা যাচ্ছে, এই সিজনের শুটিং বিদেশে করার পরিকল্পনা রয়েছে এবং লেখক সাইমা আকরাম চৌধুরীও এতে আগ্রহী।

২. কাবলি পোলাও : ‘কাবলি পোলাও’ আরেকটি নাটক যা দর্শকদের মন জয় করে নেয়। দুই ভিন্ন বয়সের মানুষের এই প্রেমকাহিনী ছিল মিষ্টি ও বাস্তবসম্মত। যদিও নাটকটির সমাপ্তি দারুণ ছিল, তবুও কিছুটা আকস্মিক মনে হয়েছে। এমন একটি দম্পতির পরবর্তী জীবন কেমন হয়, তা দেখতে দর্শকরা একটি সিক্যুয়েল পেলে খুশিই হতেন।

৩. ক্বারজ-এ-জান : ‘ক্বারজ-এ-জান’ একটি স্তরপূর্ণ গল্প নিয়ে তৈরি হয়েছিল, যেখানে খারাপ লালন-পালনের পরিণতির মতো বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়। এই নাটকের অন্যতম আকর্ষণ ছিল আমের বখতিয়ারের চরিত্রটি, যে তার অপরাধের জন্য জেলে যায়। এই চরিত্রটির পুনর্বাসন নিয়ে একটি স্পিন-অফ তৈরি হলে তা দারুণ হবে। এছাড়া, নাশওয়া এবং বোরহানের গল্পের হঠাৎ সমাপ্তিও দর্শকদের হতাশ করেছিল।

৪. এহদ-এ-ওয়াফা : তরুণদের লক্ষ্য করে নির্মিত ‘এহদ-এ-ওয়াফা’ শুধু প্রেমকাহিনীতে সীমাবদ্ধ ছিল না। এতে কর্মজীবন, উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং কলেজ জীবনের মতো বিষয়গুলো তুলে ধরা হয়। এই ধরনের একটি নতুন সিজন তরুণ দর্শকদের আকৃষ্ট করতে পারে, তবে এর উপদেশমূলক দিকটি কিছুটা কমিয়ে আনতে হবে।

৫. আলিফ : উমেরা আহমেদের লেখা ‘আলিফ’ একটি মাস্টারপিস। আধ্যাত্মিকতা এবং গভীর চরিত্রগুলো এই নাটকটিকে পাকিস্তানের অন্যতম সেরা নাটক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে। নাটকের শেষে কালব-এ-মমিন তুরস্কে ফিরে তার পূর্বপুরুষদের ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, আর মমিন সুলতান থেকে যায় পাকিস্তানে। এই দুই চরিত্রের ভবিষ্যৎ জীবন নিয়ে একটি মিনি-সিরিজ তৈরি হলে তা দেখতে দারুণ লাগবে।

৬. দুনিয়াপুর : আইনহীনতা ও প্রতিশোধের গল্প নিয়ে তৈরি ‘দুনিয়াপুর’ একটি ব্যতিক্রমী নাটক। এর প্রধান চরিত্রগুলো, শাহমীর ও আনা, শেষ পর্যন্ত পালিয়ে যায় এবং পুলিশ কর্মকর্তা সামি খান তাদের পেছনে ধাওয়া করে। এই নাটকটির সমাপ্তিও দর্শকদের মধ্যে দ্বিতীয় সিজনের আগ্রহ তৈরি করে।

৭. সিরিয়াল কিলার : গ্রীন টিভিতে প্রচারিত ‘সিরিয়াল কিলার’ ছিল পাকিস্তানি টেলিভিশনে একটি সতেজ পরিবর্তন। একজন সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তার সিরিয়াল কিলারকে ধরার প্রচেষ্টা, যিনি নিজেই পিটিএসডিতে ভুগছেন, তা দর্শকদের মুগ্ধ করে। সাম্প্রতিক নাটকগুলোর মধ্যে এটি অন্যতম বড় একটি “ক্লিফহ্যাঙ্গার” নিয়ে শেষ হয়েছে। এই নাটকটির একটি রিমেক বা উপসংহার দর্শকদের জন্য জরুরি।

৮. মেরে পাস তুম হো : ‘মেরে পাস তুম হো’ একটি কাল্ট ক্লাসিক। এর শেষ পর্বে দানিশ মারা গেলেও রুমি ও মেহেবিশ বেঁচে থাকে। দানিশের বিপুল অর্থসম্পদ নিয়ে রুমিকে প্রধান চরিত্র করে একটি স্পিন-অফ তৈরি করা দারুণ আইডিয়া হতে পারে।