পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, কোটা আন্দোলনের নামে যারা রাজাকারের পক্ষে স্লোগানে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কারাবন্দি দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন তিনি।
হাছান মাহমুদ বলেন, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার নিয়ে কিছু শিক্ষার্থী যখন আন্দোলন শুরু করে, তখন সেখানে বিএনপি-জামায়াত তাদের ‘প্ল্যান্টেড’ লোক ঢুকিয়ে দিয়েছে এবং কোটাবিরোধী আন্দোলনকে রাষ্ট্রবিরোধী, সরকারবিরোধী আন্দোলনে রূপ দেওয়ার অপচেষ্টা করছে। সেই কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাজাকারের পক্ষে স্লোগান এসেছে।
তিনি বলেন, যারা এই আন্দোলন করছে, তারা দেশের সংবিধান মানতে চায় না। দেশের অনগ্রসর গোষ্ঠীকে রাষ্ট্রের কার্যক্রমে যুক্ত করার ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার বিষয়টি সংবিধানে আছে।
কোটার বিষয়টি এখন আদালতের এখতিয়ারভুক্ত উল্লেখ করে মন্ত্রী হাছান বলেন, সরকার শিক্ষার্থীদের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়ে কোটাপদ্ধতি বাতিলের যে প্রজ্ঞাপন দিয়েছিল, একজন ব্যক্তি সংক্ষুব্ধ হয়ে মামলার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট সেটি বাতিল করেছিল, সুপ্রিম কোর্ট আবার সেটির ওপর স্থগিতাদেশ দিয়েছেন। অর্থাৎ এটি আদালতে বিচারাধীন বিষয়। এটি নিয়ে সরকার কিছু করতে গেলে আদালত অবমাননা হবে, সংবিধানবিরোধী হবে।
এটি বুঝেও বিএনপি-জামায়াতের প্ল্যান্টেড যারা, তারা সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভুল বোঝাচ্ছে, আবেগ-অনুভূতিকে ব্যবহার করে সরকারের বিরুদ্ধে, রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছে এমন কি জননেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধেও অপপ্রচার চালাচ্ছে, বলেন তিনি।
জননেত্রী শেখ হাসিনা সাম্প্রতিক চীন সফর থেকে ফিরে সংবাদ সম্মেলনে কোটা নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটিকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করা হচ্ছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জননেত্রী স্পষ্ট বলেছেন, বিষয়টি যখন আদালতে বিচারাধীন, তখন এ বিষয়ে সরকারের কিছু করার নেই। আদালত যেভাবে নির্দেশনা দেবে, সরকার সেই মোতাবেক কাজ করবে।
হাছান বলেন, এটি বুঝেও ঔদ্ধত্যপূর্ণ স্লোগান, আন্দোলন এগুলো আদালত অবমাননার শামিল, সংবিধানের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বেদীমূলে চপেটাঘাত। সুতরাং যারা রাজাকারের পক্ষে স্লোগানে নেতৃত্ব দিয়েছে, তাদের চিহ্নিত করার কাজ চলছে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে সমুন্নত রাখতে, আইন-আদালতের মর্যাদা রক্ষার্থে এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
তিনি জানান, আজ নারী শিক্ষার্থীরা রাস্তায় দাঁড়িয়েছে নারী কোটা রক্ষার জন্য, মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানরা দাঁড়িয়েছে মুক্তিযোদ্ধা কোটার জন্য, চাকমা-মারমাসহ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর তাদের কোটার জন্য দাঁড়িয়েছে।
আওয়ামী লীগকে দেশ পাহারা দিতে হবে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা নির্বাচন ভন্ডুল করতে চেয়েছিল, সেটি না পেরে কখনো কোটা, কখনো তেল-গ্যাসের মধ্যে ঢুকছে। আর আমরা নির্বাচনের আগে রাজপথে থেকেছি, জয়লাভ করেছি বলে ঘরে বসে থাকা নয়, এখন দেশ পাহারা দিতে হবে। মুক্তিযুদ্ধবিরোধী, দেশবিরোধী অপশক্তি যখন দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত, তরুণদেরকে বিভ্রান্ত করার অপচেষ্টা করছে, মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বেদীমূলে আঘাত হানার চেষ্টা করছে, তাদের রুখে দিতে রাজপথে থাকতে হবে, দেশ পাহারা দিতে হবে।