রাজিবপুরে দলিলকৃত বসতভিটা থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা, নিরাপত্তাহীনতায় আট পরিবার

তারিকুল ইসলাম তারা : কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার কোদালকাটি ইউনিয়নের উত্তর চর সাজাই মন্ডলপাড়া গ্রামের আটটি পরিবার দীর্ঘ তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে বৈধভাবে বসবাস করে আসছেন বলে দাবি করেছেন। অথচ সাম্প্রতিক সময়ে তাদের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে উচ্ছেদের পরিকল্পিত চেষ্টা। স্থানীয় প্রভাবশালী মহলের এমন উদ্যোগে গভীর উদ্বেগ ও নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন আব্দুস সালাম, মোবারক হোসেন, জাহাংগীর আলম, শহিদুর রহমান, রফিয়াল হক, হবিবর মুন্সি ও আব্দুল জলিল। তারা জানান, প্রায় ৩০ বছর আগে তারা ৩ একর ৬৫ শতাংশ জমি বৈধভাবে ক্রয় করেন। এ জমির দলিল ও আদালতের রায় অনুযায়ী তারা মালিকানা পান এবং এরপর থেকে নিয়মিত খাজনা প্রদানসহ সকল আইনি প্রক্রিয়া মেনে বসবাস করে আসছেন। তাদের দাবি, এসব জমি নিয়ে এখন প্রভাবশালী একটি মহল নানা ধরনের চাপ সৃষ্টি করে উচ্ছেদের পাঁয়তারা করছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ১২ -১৩ বছর আগে স্থানীয় প্রভাবশালী ও রাজনৈতিকভাবে সংযুক্ত কয়েকজন ব্যক্তি—এস এম আব্দুস সাত্তার, এস এম আব্দুর রাজ্জাক, কামাল হোসেন ও আব্দুল ওহাব, ও মোর্শেদা বেগম —গোপনে ওই জমির নামে বন্দোবস্ত গ্রহণ করেন এবং প্রশাসনিক প্রভাব খাটিয়ে জমির উপর মালিকানা দাবি করতে শুরু করেন। এরপর থেকেই তারা ভুক্তভোগীদের ঘরবাড়ি থেকে উচ্ছেদে নানা ধরনের হুমকি ও চাপ সৃষ্টি করছেন।
এই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো একাধিকবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন রাজিবপুর থানা, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসকের কাছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি বলে অভিযোগ তাদের। ভুক্তভোগীদের ভাষ্যমতে, অভিযুক্তরা, তথকালিন আওয়ামীলীগের সক্রিয় কর্মী হওয়ায় প্রশাসন বিষয়টিকে আমলে নেননি ।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, “আমরা প্রতিদিন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছি। কখন আমাদের ঘরবাড়ি ভেঙে দেওয়া হয়, সে ভয় নিয়েই বাস করছি। আমরা চাই প্রশাসন সঠিক তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিক এবং আমাদের শান্তিপূর্ণভাবে বসবাসের অধিকার নিশ্চিত করুক।”
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি তথকালিন উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও কোদালকাটি ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর ছক্কু বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হলেও কোনো মন্তব্য করেননি।
ভুক্তভোগীরা জোরালোভাবে দাবি করেছেন, বিষয়টি সরেজমিন তদন্ত করে দেখা হোক এবং যথাযথ প্রমাণ ও দলিলপত্র যাচাই করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক। তারা চান, তাদের জমির উপর পূর্ণ মালিকানা নিশ্চিত করে পরিবার-পরিজন নিয়ে নিরাপদে বসবাসের সুযোগ যেনো দেয়া হয়।