৪ মার্চ ২০২৪ তারিখে ফিল্ড কানুনগো, গার্ড গ্রেড—২, আমিন এবং পয়েন্টসম্যান পদে নতুন করে জনবল নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ের পরিবহন ও বাণিজ্যিক বিভাগ। এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটি। রেলওয়ে ক্যাডার বহির্ভূত কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা—২০২০ কে ত্রুটিপূর্ণ, সাংঘর্ষিক, স্বৈরাচারিতা মূলক আখ্যা দিয়ে অবিলম্বে এ নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিলের দাবি জানিয়ে গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছেন রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটির সভাপতি মো. মনিরুজ্জামান মনির।
বিজ্ঞপ্তিতে তিনি বলেন, “রেলওয়ে ক্যাডার বহির্ভূত কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা—২০২০” মূলত রেলওয়ে পোষ্য এবং শ্রমিক—কর্মচারীদের অধিকার বঞ্চিত করার এক ঐতিহাসিক দলিল। ষড়যন্ত্রমূলক এই নিয়োগ বিধিমালা রেলওয়ে পোষ্য এবং শ্রমিক—কর্মচারীরা নীতিগত ভাবে মেনে না নিয়ে বাংলাদেশ রেলওয়ের সকল ট্রেড ইউনিয়ন ও বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটি আন্দোলন—সংগ্রাম গড়ে তোলে। গত ২১ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য সোসাইটি কর্তৃক মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবরে স্মারকলিপি প্রদানের প্রেক্ষিতে ২৭ ডিসেম্বর ২০২১ তারিখে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালককে আহ্বায়ক করে ১৮ সদস্য বিশিষ্ট নিয়োগ বিধিমালা ২০২০ হালনাগাদ/সংশোধন করণের জন্য কমিটি গঠিত হয়। কিন্তু গত ২৬ মাসেও কমিটি কর্তৃক নিয়োগ বিধিমালা ২০২০ সংশোধন না করেই গায়েবী বিধিমালায় সম্পূর্ণ অবৈধভাবে জনবল নিয়োগ কার্যক্রমের মাধ্যমে রেলওয়ে পোষ্যদের অধিকার বঞ্চিত করা হচ্ছে। নতুন এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি পোষ্যদের অধিকার বঞ্চিত করার ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রেরই একটি অংশ।
মনিরুজ্জামান মনির আরো বলেন, বাংলাদেশ রেলওয়ে ত্রুটিপূর্ণ নিয়োগ বিধিমালা—২০২০ সংশোধন না করে অবৈধ জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়াকে বৈধতা দিতে প্রতিটি বিজ্ঞপ্তিতে “নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারের বিদ্যমান বিধি—বিধান ও কোটা পদ্ধতি এবং পরবর্তীতে এ সংক্রান্ত বিধি—বিধানে কোন সংশোধন হলে তা অনুসরণযোগ্য হবে” বলে একটি শর্ত যুক্ত করেছে। এই শর্তটি আসলে একটি শুভঙ্করের ফাঁকি। কর্তৃপক্ষের শর্ত অনুযায়ী রেলওয়ে কর্মচারীদের পোষ্যদের সংজ্ঞা সংশোধন করে চাকরিতে আবেদনের ক্ষেত্রে ২০ বছরের স্থানে যদি পূর্বের ন্যায় ১৫ বছর অথবা ১০ বছর করা হয় এবং শিক্ষাগত যোগ্যতা শিথিল করা হয় তাহলে কি বর্তমানে যারা চাকরিতে আবেদনের সুযোগ পাচ্ছেন না বাংলাদেশ রেলওয়ে কি তখন তাদেরকে আবেদনের সুযোগ করে দিবেন? বাস্তবতা হলো সেটি সম্ভব নয়। ২৬ মাসেও নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন না করে যে জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া চলছে এটি মূলত অসাধু কর্মকর্তাদের নিয়োগ বাণিজ্যের অংশ।
তিনি বলেন, রেলপথ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বভার নতুন মন্ত্রী গ্রহণের পর রেলওয়ে পোষ্যরা তাদের অধিকার আদায়ে আশান্বিত হলেও এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর তারা পূর্বের মন্ত্রীর সময়ের ন্যায় অধিকার বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন। রেলওয়ে পোষ্যরা মনে করেন বাংলাদেশ রেলওয়ের দুর্নীতিপরায়ন সুবিধাভোগী গোষ্ঠীটি নতুন মন্ত্রীকে বিতর্কিত করতেই এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। আমরা অবিলম্বে এই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি বাতিল ও দুর্নীতি পরায়ন সুবিধাভোগী গোষ্ঠীটিকে চিহ্নিত করে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও রেলপথ মন্ত্রীর কাছে দাবি জানাচ্ছি।