রৌমারী সংবাদদাতা : আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ও শহিদ দিবস আমাদের একটি সম্মানজনক দিবস। মাতৃভাষা আমাদের জাতীয় ভাষা এবং শহিদরা আমাদের সম্মানের পাত্র। বিশ্বে আমরা একমাত্র বাঙ্গালি জাতি, যারা ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছে। শহিদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে ভাষা শহিদদের অবদানের কথা স্মরণীয় করে রাখার জন্য। কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের কোমড়ভাঙ্গি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে শহিদ মিনারে জুতা পায়ে উঠে অবমাননা ও অমর্যাদা করে খেলা উপভোগ করার অভিযোগ উঠেছে রৌমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইমান আলী ইমনের বিরুদ্ধে। ১৭ ফেব্রুয়ারি (শনিবার) বিকালে উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের কোমড়ভাঙ্গি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সায়দাবাদ নতুন কুড়ি স্পোর্টিং ক্লাব এর আয়োজনে এক ভলিবল খেলা অনুষ্ঠিত হয়। খেলাটি উপভোগ করার জন্য শহিদ মিনারে খেলার অনুষ্ঠানের মঞ্চ বানিয়ে এ অবমাননার মতো ঘটনা ঘটেছে। যেখানে ফুল দিয়ে শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইমান আলী, বিশেষ অতিথি মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা আকতার স্মৃতি, ভাইস চেয়ারম্যান মোজাফ্ফর হোসেন, যাদুরচর ইউনিয়ন আ,লীগের সভাপতি সাখওয়াত হোসেন সবুজ, যাদুরচর ডিগ্রি মডেল কলেজ এর অধ্যক্ষ সুরুজ্জামান মুকুল, যাদুরচর ইউপি চেয়ারম্যান সরবেশ আলী, সদস্য জিয়াউর রহমান জিয়া সহ স্থানীয় গণমান্য ব্যক্তিবর্গ। সেখানে উপস্থিত সকলেই জুতা ও সেন্ডেল পায়ে দিয়ে শহিদ মিনারে সাজানো মঞ্চে উঠেন এবং অনুষ্ঠান উপভোগ করেন। বীরমুক্তিযোদ্ধা আজিজুর রহমান দুঃখ প্রকাশ করে বলেন,যারা দেশের জন্য বুকের তাজা রক্ত ঢেলে দিয়ে বাংলা ভাষাকে ইংরেজদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছেন,অথচ তাদের স্বরণের শহিদ মিনারটি অবমাননা কার মোটেও ঠিক করেননি।
কোমড়ভাঙ্গি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, আমার কাছে শুধু ভলিবল খেলার জন্য মাঠের অনুমিত নিয়েছে,তবে শহিদ মিনারের বিষয়টি আমি জানিনা। ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি সাখওয়াত হোসেন সবুজ জানান, শহিদ মিনারে মঞ্চ করেছে এটা আমি খেয়াল করিনি। তবে ঘটনাটি দুঃখজনক। যাদুরচর ইউপি চেয়ারম্যান সরবেশ আলীর সাথে একাধীকবার যোগাযোগের চেষ্টা করেও কথা বলা সম্ভব হয়নি। মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাহমুদা আকতার স্মৃতির বলেন, এটা আমাদের ভুল হয়েছে। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ইমান আলীকে একাধীকবার তার ফোন নম্বরে কল দিলেও তিনি কল কেটে দেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বদরুল ইসলাম বলেন, এবিষয়ে আমি কিছু জানিনা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ হাসান খান বলেন, শহিদ মিনারে জুতা পায়ে দিয়ে ঊঠা ঠিক হয়নি। শহিদদের অসম্মান করা হয়েছে। বিষয়টি আমি দেখতেছি। কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক সাইদুল আরীফ জানান, যদি এরকম হয়ে থাকে তাহলে দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।