লোহিত সাগরে সৌদি ট্যাংকারে হামলা

ইয়েমেনের কাছে লোহিত সাগরে সৌদি আরবের মালিকানাধীন একটি অপরিশোধিত জ্বালানিবাহী ট্যাঙ্কার ও পানামার পতাকাবাহী একটি জাহাজে হামলা হয়েছে। সোমবার লোহিত সাগরে ইয়েমেন উপকূলের কাছে এই হামলা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট দুটি সূত্র জানিয়েছে।

তবে লোহিত সাগরে সৌদি ট্যাংকার ও পানামার পতাকাবাহী তেলের জাহাজে ইরান-সমর্থিত ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীরা এই হামলা চালিয়েছে কি না সেটি পরিষ্কার নয়।

একাধিক সূত্র বলেছে, আক্রান্ত হওয়ার সময় সৌদির পতাকাবাহী ট্যাংকার আমজাদ এবং পানামার পতাকাবাহী ব্লু লাগুন-১ জাহাজটি পাশাপাশি এলাকায় নোঙর করা ছিল। হামলার শিকার হওয়ার পর সৌদির ট্যাংকারটি তাদের গতিপথে চলছে। তবে এতে বড় ধরনের কোনও ক্ষয়ক্ষতি কিংবা হতাহত হয়েছে কি না তা জানা যায়নি।

ট্যাংকারের আমজাদের মালিক সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি বাহরি এই হামলার বিষয়ে মন্তব্যের অনুরোধের তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। সৌদি মালিকানাধীন এই সুপারট্যাঙ্কারের সর্বোচ্চ ২০ লাখ ব্যারেল তেল পরিবহনের সক্ষমতা রয়েছে।

পানামার পতাকাবাহী জাহাজ ব্লু লাগুন-১ এর গ্রিক ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান সি ট্রেড মেরিন এসএরও মন্তব্য তাৎক্ষণিকভাবে পাওয়া যায়নি। সুয়েজম্যাক্স এই জাহাজের সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ১০ লাখ ব্যারেল।একটি সূত্র বলেছে, সৌদির মালিকানাধীন ট্যাংকারটিকে সরাসরি হামলার নিশানা বানানো হয়নি। গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। এরপর গাজায় বর্বর হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দখলদার ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে এডেন ও লোহিত সাগরে ইসরায়েল, যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের মালিকানাধীন জাহাজে গত নভেম্বর থেকে হামলা চালাচ্ছে হুথিরা।

হুথিদের ঠেকাতে ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য যৌথ হামলা চালালেও; সেগুলো তেমন ফলপ্রসূ হচ্ছে না। হুথিদের হামলার কারণে লোহিত সাগর দিয়ে জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে বিশ্বের বড় বড় প্রতিষ্ঠানগুলো। বিশ্বে সমুদ্র পথে যত বাণিজ্য হয়, তার ১২ শতাংশই লোহিত সাগর দিয়ে হয়। এদিকে বাণিজ্যিক জাহাজ লক্ষ্য করে হুথিদের হামলার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে এর অনেক প্রভাব পড়েছে।

লোহিত সাগর থেকে মিসরের সুয়েজ খাল হয়ে যেসব জাহাজ ইউরোপে যেত; সেসব জাহাজকে এখন আফ্রিকা ঘুরে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। ইয়েমেনের শিয়া মুসলিম সংখ্যালঘু জাইদি নামের উপ-সম্প্রদায়ের সশস্ত্র গোষ্ঠী এই হুথিরা। বেশিরভাগ ইয়েমেনি হুথিদের নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় বসবাস করেন। পাশাপাশি সানা এবং ইয়েমেনের উত্তরে হুথিরা লোহিত সাগরের উপকূলরেখাও নিয়ন্ত্রণ করে তারা।